STORYMIRROR

Md Firuz Mia

Romance Others

4  

Md Firuz Mia

Romance Others

একযুগ পর প্রাক্তনের চিঠি

একযুগ পর প্রাক্তনের চিঠি

2 mins
379


প্রিয় প্রাক্তন,

কেমন আছো জানতে চাইবোনা। আমি জানি তোমার হৃদয় কত পাষাণ আর তুমি কত নিষ্ঠুর। বরাবরের মতো ভালোই আছো বোধ হয়। তাছাড়া তুমি কেমন আছো সেটা জানার ইচ্ছেও মরে গিয়েছে এখন আমার। আমার কথা বলি। তোমার সাথে দূরত্বটা অনেক আগেই সাত সহস্রাধিক কিলোমিটারের হয়ে গিয়েছে। জানতে পেরেছো কিনা জানিনা? অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছি আজকাল। তুমি বলতে, আমাকে দিয়ে নাকি কিছুই হবেনা। কোনো ভবিষ্যৎ নেই আমার। সারাদিন বই নিয়ে পড়ে থাকতাম বলে তুমি বলতে, আমি নাকি বই পাগল। একদিন বই পড়তে পড়তে পাগল হয়ে যাবো। সারাক্ষণ বই নিয়ে থাকতাম বলে তোমাকে ঐরকম ভাবে কোনো সময়ই দিতে পারতামনা। কিন্তু আজ দেখো, সেই বই পাগল ছেলেটা দিব্যি জীবনের অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে সহস্র সুখের জীবন যাপনে ব্যস্ত। তোমার নাম ধরে ডাকা কিংবা সেই প্রিয় নামে ডাকার ইচ্ছে বা অধিকার কোনোটাই নেই এখন আমার। প্রাক্তন, তুমি আমাকে ছেড়ে গিয়েছিলে শুধু দুটো কারণে। তোমার কি মনে আছে? প্রথমত, তোমাকে সময় দিতে পারতামনা বলে। দ্বিতীয়ত, আমার নাকি অহংকার বেশি ছিলো। সত্যি বলতে কি জানো? আমার অহংকার ছিলোনা। ব্যবধান শুধু এতোটুকুই ছিলো, সারাক্ষণ বইয়ের নেশায় ডুবে থাকতাম। হোক সেটা একাডেমিক কিংবা অন্য কোনো ধরণের বই। তুমি তো আমাকে সেই কলেজ জীবনেই ছেড়ে গিয়েছিলে। কি ভেবেছিলে? তোমার মত কাউকে পাবোনা? পেয়েছি। তোমার থেকে ভালো কিনা জানিনা। কিন্তু আমার প্রতি অগাধ বিশ্বাস তাহার। আরেকটা সত্যি কথা হলো, ফারহা মেয়েটা আজ ডাক্তার। তোমার মত তথাকথিত সাধারণ কোনো মেয়ে নয় সে। বড় ঘরের বড় মেয়ে সে। আমারোও যেহেতু ডাক্তারী পড়ার ঝোক ছিলো অনেক, তাই আমি আর ও মিলে দুজনেই অস্ট্রেলিয়ায় চলে আসি। অস্ট্রেলিয়া আসা ওর জন্য খুব সহজ হলেও আমার জন্য সে পথ ছিলো কণ্টকাকীর্ণ। তুমি তো জানতে আমি নিম্নমধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে ছিলাম। ভাগ্যিস টিউশন ফিসের উপর ৬০% স্কলারশিপ পেয়েছিলাম। তারপর আমি আর ফারহা মিলে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমাই। ডাক্তারী পড়া শেষ হয়। দুজন মিলে একই হাসপাতালে যোগদান করি।

দীর্ঘ ৭ বছর একসাথে থাকার পর দেশে এসে দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের পিড়িতে বসি আমরা দুজন। সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে আবারো ব্যস্ততার উদ্দেশ্যে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমাই। আমার একটা ছেলে, একটা মেয়ে হয়েছে। ছেলেটার নাম রেখেছি আয়ান আর মেয়ের ফাহমিদা রেখেছি। ছেলেটা তো ইংরেজি ছাড়া কথাই বলবেনা। মেয়েটা অল্প অল্প ইংরেজি বলতে পারে। অস্ট্রেলিয়াতে গাড়িও কিনেছি। বাড়ি তো আছেই।পাশাপাশি একটা ব্যবসাও শুরু করেছি। সর্বোপরি এতোটুকুই বলবো, কাউকে উপহাস করোনা কখনো। উপরওয়ালা কাকে কখন কোথায় নিয়ে যাবেন, কোন সফলতা দিবেন কেউ বলতে পারেননা। তোমার অবস্থান দেখো একটাবার। সাধারণ এক জামাইয়ের হাত ধরে দেশেই পড়ে আছো। যে ছেলেটার স্বপ্ন অনেক বড় থাকবে, সেও চাইবে তার মতো বড় স্বপ্নের মানুষকেই জীবনের অর্ধাঙ্গিনী করতে। কখনো চাইবেনা, তোমার মত একটা সাধারণ কে অসাধারণ বানাতে। কারণ, তুমি সাধারণের মূল্য দিতে জানোনা। যাই হোক, আফসোস করোনা। জেনে রেখো, সময় ও স্রোত কাহারো জন্য অপেক্ষা করেনা।


প্রাক্তন,শুভ কামনা তোমার জন্য।


ইতি-

আয়মান।


বিঃদ্রঃ কাহিনীটা এক বড় ভাইয়ের জীবন থেকে নেয়া।


লেখকঃ- মোঃ ফিরোজ মিয়া


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance