দূরত্ব
দূরত্ব


একেকটা সময়ের টুকরো, ঝরে ঝরে পড়ে - একেকটা করে দিন, পেরিয়ে যায়.
শ্রীতমার দিকে তাকিয়েছিলো রূপ. দশফুট বাই পনেরোফুটের ঘর. লাগোয়া বাথরুম. তিনসপ্তাহের ঠিকানা. বেড়াতে এসে যে এমনি করে আটকে যেতে হবে, ওরা কল্পনাও করতে পারেনি.
-"বাজার যাবে না আজ ?" শ্রীতমা জিজ্ঞেস করে.
-"কালই তো গেলাম, ডিম আর চাউ এনে রেখেচি. তিনচারদিন পরে যাবো আবার." রূপ জবাব দেয়.
-"ইনডাকশনটা কাজ করচে না, মেনটেন্যান্সকে বললাম - কোনো হুঁশ নেই কারোর," রূপ বলে ওঠে, "এভাবে যে আর কতদিন, লোকজন কেউ নেই - শুনশান সবকিছু, কেবল ওই হ্যালোজেনের আলো আর নিস্তব্ধতা . . . ভালো লাগচে না আমার."
শ্রীতমা রূপের হাতদুটোকে খুঁজতে চায় . . খুঁজতে গিয়েও,
-"তোমার কষ্ট হচ্চে রূপ ?"
রূপ মাথা নেড়ে তাকায়. হাতের সিগারেটটা নিভে এসেছিলো. আবার ধরিয়ে নেয়. বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায়.
শ্রীতমা ভেতর থেকে ডাকে আবার, "রূপ !"
রাস্তার আলোগুলো জ্বলে উঠেছে. এ্যাসফল্টের ওপর পড়েচে. একআধটা নেড়িকুকুর, যেন দূরে কোথায় ডেকে উঠলো.
ওরা পরস্পরের দিকে চেয়ে আছে.
দূরত্ব, সবকিছুকেই সুন্দর করে - আবার করেও না বোধহয়. রূপ একবার হাত বাড়ায়.
শ্রীতমা অফলাইন হয়ে গেছে. ভিডিও কলটাও ডিসকানেক্টেড . . লকডাউনের ২৯ দিন.