চানাচুর
চানাচুর
বন্ধুত্ব। শব্দটা শুনতে যত সুন্দর, ততটাই পবিত্র। কিছু মানুষ আছে যাদের সাথে ১০ বছর কাটিয়ে দিলেও হয়তো সেই মানুষ তার সাথে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিতে ইচ্ছে হয় না। আবার এমন কিছু মানুষ আছে যাদের সাথে একটি সাক্ষাৎকার ই অনেক। এমনি ছিল আমার চানাচুর। না আমি হালদিরাম এর চানাচুর এর কথা বলছি না, আমি কথা বলছি আমার মহিকা কে নিয়ে, আদরে ডাকনাম চানাচুর। স্কুল লাইফ এ প্রথম দেখা তার সাথে, ছোটো চুল, বড় ফ্রেম এর গোল চশমা, কি না দেখাচ্ছিলো তাকে। সেদিন কখনোই ভাবিনী তার সাথে কখনো এতটা গভির সম্পর্কে জড়িয়ে পড়বে আমি।
স্কুল লাইফ এ এতটা কথা হয়নি আমাদের। সত্যি বলতে গেলে স্কুল লাইফ এ তার সাথে কোনো কথাই হয় নি। স্কুল এর শেষ কয়েকটা দিনে আরেকটা মেয়ের থেকে তার whatsapp নম্বর টা নিয়ে মেসেজ করি তাকে। তখন ফাইনাল পরীক্ষার খুব চাপ ছিলো এতোটা কথা হতে পারেনি তখন।
শেষ হলো ফাইনাল পরীক্ষা, তখন থেকেই একটু একটু কথা শুরু করি আমরা। কথা বলতে বলতেই অনেকটা গভীর হয়ে যায় বন্ধুত্ব আমাদের। সকালে কে good morning পাঠাবে তার কম্পিটিশন হতো আমাদের মধ্যে। কিন্তু জীবনটা একটা রোলার কোস্টার এর মত, যত আস্তে আস্তে উপরে উঠে, ততই দ্রুত নিচে নামে।
শুরু হয় কলেজ এর জীবন। ও চলে যায় তামিলনাড়ু কলেজ এ, আর আমি মেডিক্যাল কলেজ entrance এর জন্য আরেকবছর repeat করছি। আমরা অনেক খুশিই ছিলাম, রোজ বলত তামিলনাড়ু গেলে প্রত্যেকদিন ফোন এ বা ভিডিও কল এ কথা হবে। কিন্তু কলেজ এ যাওয়ার পর জানতে পারি, তার জীবন খুবই ব্যাস্ত, রাত ১০ টায় ঘুম, ৫ টায় ঘুম থেকে উঠা, সকাল ৭ টায় কলেজ, সারাদিন এর পড়াশুনা তার উপরে নেটওয়ার্কের সমস্যা।
যার সাথে কখনো সুখ দুঃখ, হাসি কান্নার কথা বলে সারাদিন কেটে যেত, আজ ওর সাথে একবারো কথা বলা ছারা সারাদিন কাটাতে হয়। জানিনা আরো কতদিন এমন ভাবে কাটাতে হবে, কিন্তু মনে শুধু একটাই কথা নিয়ে বেঁচে রয়েছি, ঘুটঘুটে অন্ধকার রাত্রির পরে আসবে ফুটফুটে সোনালী রোদ্র।