STORYMIRROR

Dr. Arunima Das

Inspirational

4  

Dr. Arunima Das

Inspirational

ভুলো মন

ভুলো মন

2 mins
283

 শিরোনাম - ভুলো মন

✍️ ডা: অরুণিমা দাস


দীপঙ্কর বাবু বাড়ী ফিরতেই ছুটতে ছুটতে এলো ছেলে আকাশ। কি কি এনেছো বাবা? বলে ওনার অফিসের ব্যাগটা টেনে টেবিলের ওপর রাখলো। ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দীপঙ্কর বাবু ব্যাগ থেকে দু সেট কালার প্যাস্টেল বের করলেন। দুটো সেট এনেছো কেনো গো? আকাশের মা নমিতা দেবী এসে জিজ্ঞেস করলেন? 

- একটা আকাশের জন্য আর একটা বাবার জন্য। 

- বাবার জন্য?একটু অবাক হলেন নমিতা দেবী। 

- হ্যা।

আকাশ বললো আচ্ছা বাবা দাদু এসব নিয়ে কি করবে? সারাদিন তো ঘরের মধ্যে বসে থাকে,আর জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকে। আমি গিয়ে ডাকলেও চিনতে পারে না। কেমন যেনো ভুলে গেছে আমায়। হ্যা আকাশ! দাদু এখন আর আমাদের কাউকে চিনতে পারবেন না। অ্যালজাইমারস হয়েছে তো দাদুর। ডাক্তার বাবু বলেছেন একমাত্র যত্ন, ভালোবাসা আর আপনজনদের সহানুভূতি এই রোগ থেকে একটু একটু করে মুক্তি দিতে পারে। বুঝলে নমিতা সেদিন যখন অফিস যাওয়ার আগে বাবার ঘরে গেলাম, আমার হাত ধরে শিশুদের মত বললো একবক্স রং এনে দেবে আমায়? আমি শুনে আর না করতে পারিনি। যে মানুষটা সারাজীবন আমাদের জন্য করে গেলো, বড়ো করলো আমাদের সেই মানুষটার জীবন যখন স্মৃতি বিস্মিত হয়ে সাদা কালো হয়ে গেছে, একটু রং দেওয়ার চেষ্টা করা যায়। আর ছোটবেলা থেকে যা চেয়েছি সব দিয়েছে বাবা! এটুকু যদি না করি তাহলে তো খুব ছোট হয়ে যাবো নিজের কাছে। কথা গুলো বলে নমিতা দেবীর দিকে তাকিয়ে দেখলো চোখের কোনে জল চিকচিক করছে। একদম ঠিক কাজ করেছো তুমি! ভবিষ্যতে আমাদের এরকম কিছু হলে আকাশও নিশ্চয় এভাবে আমাদের দেখবে! ঠিক শিক্ষা পাচ্ছে ও। দীপঙ্কর বাবু খুশি হলেন স্ত্রীর সাপোর্ট পেয়ে। আকাশকে ডেকে বললেন যাও বাবু দাদুকে রং পেন্সিল আর খাতা দিয়ে এসো। আকাশ রং আর খাতা নিয়ে দাদুর ঘরের দিকে চলে গেলো। রং পেন্সিল পেয়ে খুব খুশি হলেন আকাশের দাদু। ছোট্ট ছেলেদের মত সাদা কাগজে রং দিয়ে ভরিয়ে তুললেন নিজের মনের মধ্যে থাকা ছবিকে। 

বাইরে দরজা থেকে দীপঙ্কর বাবু দেখলেন দুই অসমবয়সী শিশু নিজের নিজের মতো করে রং ভরাতে ব্যস্ত। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন ভুলো মনের মানুষটা যেনো এভাবেই নিজের জীবনে বেঁচে থাকার রসদ খুঁজে পান। 


©️ রিজার্ভ ফর অরুণিমা দাস


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Inspirational