Dalia Wadhwa

Drama Tragedy Classics

4.5  

Dalia Wadhwa

Drama Tragedy Classics

অন্য ঠাকুর

অন্য ঠাকুর

8 mins
444


ম্যানচেস্টার এয়ারপোর্টের প্রস্থান কক্ষে ফ্লাইট এর জন্যে অপেক্ষা করতে করতে মনটা ছটফট করছিল পিহুর । শুধু মনে হচ্ছিল কখন সে কলকাতা গিয়ে পৌঁছবে। বাইরে ঝিরঝির করে বৃষ্টি পড়ছে । কলকাতার কত কথা মনে পরছিল তার । মা, বাপি ,ছোট ভাই রানা ,ছোট পিসি ,জেঠীমা , জেঠামোনি , ঠাম্মা ,সবাই কে খুব মিস করে সে। কতদিন সবার সাথে দেখা হয় নি তার। সেই তিন বছর আগে শেষবার কলকাতা গেছিলো সে। তবে সে বার তুষার সাথে ছিল। এবার হটাৎ করেই রানা র বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়া তে তড়িঘড়ি করে যেতে হচ্ছে বলে , তুষার ছুটি নিতে পারেনি । ছেলে রনি ও আসতে চায় নি , সামনে ফাইনাল পরীক্ষা আছে বলে। আসলে পিহু জানে ও ফুটবল ম্যাচ মিস করতে চায়না । তাই শুধু মেয়ে মিঠু কে সাথে নিয়ে পিহুর কলকাতা যাত্রা ।


তুষারের সঙ্গে পিহুর র যখন যখন বিয়ে হয়, তখন তুষার ম্যানচেস্টার জেনারেল হসপিটালের জুনিয়র ডাক্তার । ওখানে গিয়ে প্রথম প্রথম খুব কান্না পেতো পিহুর। তুষার হসপিটাল এ চলে যেত , আর ওর সারাদিন টা কাটত একা, আকাশের কালো মেঘের সাথে কথা বলে । ওর চোখের কাজল ধুয়ে ,মেঘ চিরে বৃষ্টি র ঝাপটা র মতন উপচে পড়তো অশ্রু । সেই অশ্রু ভেদ করে তার অন্তরের একাকিত্বের বহ্নিশিখা ধরা পড়তো না ব্যস্ত তুষারের চোখে । বিশেষ করে , তুষার যখন নাইট ডিউটি যেত , মনে হতো যেন আকাশের কালো মেঘ গুলো সাপের মতন ফণা তুলে ওকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরছে। দম বন্ধ হয়ে আসতো পিহুর। নিজেকে একাকিত্বের মৃত্যুবাণ থেকে মুক্ত করার জন্যে নিজের মনেই গান গেয়ে উঠতো সে 


"মেঘ বলেছেন যাবো যাবো ' রাত বলেছে যাই 

সাগর বলে কুল মিলেছে , আমি তো আর নাই "


সময়ের সাথে তুষার সিনিয়র ডাক্তার হয়ে গেল ,আর পিহু আরো একা । এরপর , এক এক করে তিন বছরের ব্যবধানে রনি আর মিঠুর জন্ম । মাতৃত্বের স্পন্দনে তার হৃদয় ময়ুরের মতন নেচে উঠেছিল । মনে হয়েছিল এবার সব পাওয়ার পালা ।


 কিন্তু , মেয়ে কে কিছুটা নিজের মতন করে গড়ে নিতে পারলে ও তুষার এর মতন ই ছেলে একেবারে ওই দেশের রঙে রেঙে গিয়েছিল। সে বাংলা বুঝতে পারলেও, বলেনি কখনো ।কেমন যেন একটা ব্যবধান তৈরি হয়ে গেছিল ওর সাথে পিহু র।পরের দেশে থেকে নিজের অস্তিত্ব বাঁচিয়ে রাখার উদ্যম চেষ্টায় মিঠুকে কবিগুরুর গান আর কবিতা শিখিয়েছিল সে নিজে হাথে ধরে।


তুষার ও বিরক্ত হয়ে বলতো " ছেড়ে দাও না , কেন শুধু শুধু ওকে বাঙালি বানানো র চেষ্টা করছো। কি হবে বাংলা শিখে , কাজে তো লাগবে না । তার থেকে , ওকে এগিয়ে যেতে দাও ।" পিহু বুঝতে পারতো না , বাংলা শিখলে পিছিয়ে কি ভাবে পড়বে ছেলেটা । 


দুবাই হয়ে যখন এমিরেটস এর ফ্লাইট কলকাতা র মাটি চুলো , তখন পশ্চিম আকাশের কোলে সূর্য ঢলে পড়েছে । মিঠুর হাত ধরে এয়ারপোর্টের বাইরে আসতেই হৈহৈ করে সবাই ঘিরে ধরলো তাদের । বড়দা , ছোট মাসি , মেজো কাকা , মামাতো ভাই বাপ্পা, আর মাসি র ছোট্ট মেয়ে টুসি ।মিঠুর গাল দুটো টিপে ধরে ছোট মাসি বলে উঠলো " বাব্বা ! এতদিনে আসার সময় হলো? আমাদের কি একেবারে মনে পড়ে না ? " 

মেজো কাকা পিহুর দিকে তাকিয়ে চোখ বড়বড় করে বললেন ," তুষারকে আর রনি কে নিয়ে আসতে পারলি না ? কি এমন কাজ যে সাত দিনের ছুটি ও ম্যানেজ করতে পারলো না। " 


গাড়িতে উঠে দুধারের চেনা রাস্তা দিয়ে বাড়ি র দিকে যেতে যেতে পিহু মনে মনে ভাবল , রানা র বিয়ে টা ঠিক না হলে সত্যিই তার আসা হতো না ।


রানা ইন্ডিয়ান আর্মি যে মেজর। পিহু র ঠাম্মা তার ছোট নাতি র বিয়ে যাতে দেখে যেতে পারেন তাই জন্যে বাবার ছোটবেলা র বন্ধু রঞ্জন কাকুর মেয়ে রিমঝিম এর সাথে বিয়ে টা তাড়াতাড়ি মিটিয়ে নেওয়া । নদীয়া তে থাকেন রঞ্জন কাকু রা । ওর একমাত্র মেয়ে রিমঝিম কল্যাণী ইউনিভার্সিটি তে ইংলিশ়্ নিয়ে ফাইনাল ইয়ার এর ছাত্রী । 


ছোটবেলা পিহু রা ও থাকতো নদীয়া তে , রঞ্জন কাকুদের পাশের বাড়ি। সেই মাটির সোঁদা গন্ধ আজ ও সে অনুভব করে । বাচ্ছাদের দলের সাথে দৌড়া দৌড়ি করে খেলা, পুকুরে স্নান করা, কালবৈশাখীর ঝরে বাগানে আম কুড়ানো , সব স্মৃতি আজ ও তার মনটা কে তোলপাড় করে তোলে । তার পর ওর বাপির কলকাতা বদলি হওয়ার পরে, ওখানেই বাড়ি বানিয়ে থেকে যায় ওরা ।


তখন পিহু সবে কৈশরে পা রেখেছে । তার শরীর আর মন জুড়ে তখন বয়ঃসন্ধি র উত্থান পতন । তখন ই ভালোবেসে ফেলেছিল সে এই শহরটা কে । আর তার পরেই ভালোবাসা এসেছিল তার জীবনে এই শহরেই। তাই কলকাতা কোনোদিন ও ছাড়তে চায়নি পিহু। আসলে ছোটবেলা থেকে ই ভাবুক প্রকৃতির সে। ছোটবেলা থেকেই রবীন্দ্রনাথ তার মনে প্রাণে, তার হৃদয়ের সব অনুভূতি র সাথে জড়িয়ে। 


যখন পিহু খুব ছোট ছিল, মায়ের সাথে সহজ পাঠ পড়তে খুব ভালোবাসতো ও । বইয়ের সাদা কালো ছবিগুলোকে স্কেচ পেন দিয়ে রঙিন করে তুলতো। কংস বধ এর অভিনয় হবে পরে তার শিশু মনের সরলতা এ জিজ্ঞাসা করেছিল মা কে 

" মা , কংস বধ কি ?" মা শুনিয়েছিলেন সেই গল্প ।

সহজ পাঠ পড়তে পড়তে চিংড়ি মাছ খাবার বায়না করতো সে প্রায়ই।


বাড়ি ফিরে মা আর ঠাম্মার সাথে কিছুক্ষন গল্প করা র পরে নিজের ঘরে এসে জানলার ধারে দাঁড়ালো পিহু ।

দূরে তাকিয়ে দেখলো, বাদলদাদের বাড়িটা যেখানে ছিল , সেখানে একটা পাঁচতলা বিল্ডিং মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে । তার সদ্য আশা যৌবনে বাদলদা র বাঁধ ভাঙা ভালোবাসার জোয়ারের অনুভূতি আবার যেন সারা শরীরটা তোলপাড় করে ভাসিয়ে নিয়ে গেল পিহুকে। আর ঠিক তখনই আকাশ কালো করে মেঘের গর্জন । 

পিহু নিজের অজান্তে ই বিড়বিড় করে বলে উঠলো ,


 " আকাশে সোনার মেঘ কত ছবি আঁকে 

আপনার নাম তবু লিখে নাহি রাখে " 


তার ঘোর ভাঙলো কাঁধে মা র হাথের আলতো ছোঁয়ায়। " এত টা পথ এলি , খুব ক্লান্ত হয়ে গেছিস,আজ ঘুমিয়ে পর তাড়াতাড়ি।"বললেন মা ।

পিহু মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে বায়না র সুরে বললো 

" না মা , এখন ঘুম আসছে না । আর আমি এতটুকুও ক্লান্ত হইনি। কলকাতা আসার কথা ভেবে ই সব ক্লান্তি গায়েব " 

" তা হলে একটা গান ধর " বাপি কখন এসে পিছনে দাঁড়িয়েছে , লক্ষ ই করেনি পিহু। 


গানের গলাটা বরাবর ই ভালো পিহু র। রবীন্দ্র জয়ন্তী, দুর্গা পুজো , পয়লা বৈশাখ , সব উপলক্ষে পাড়া এ গান গাওয়া চাই ই চাই তার ।এভাবে ই এক দুর্গা পুজো র সময় রিহার্সাল করতে করতে প্রথমবার ভালোবাসা আঘাত হেনেছিল তার অন্তরে । তার প্রিয় বান্ধবী অসীমা র বড়দা ছিল বাদল দা । সে ছিল পাড়া র সব অনুষ্ঠানের প্রাণ । সেই বাদলদা র সাথে সেবার ডুয়েট ছিল তার ।


" আমি পথ ভোলা এক পথিক এসেছি " গাইতে গাইতে পিহু র চোখের গভীরে হারিয়ে গেছিলো বাদলদা । আর পিহুও তার সমস্ত সত্তা দিয়ে নিজেকে সপে দিয়েছিল বাদলদা কাছে । 

এভাবেই চলছিল বেশ । কখনো বাদলদা তার হাত দুটো ধরে রবিঠাকুরের কবিতা বলতে বলতে ভাসিয়ে নিয়ে যেত পিহুকে , আর কখনো বাদলদার গলায় গানের সুরে সম্মোহিতের মতন সব ভুলে হারিয়ে যেতে সে । তার শুকনো ঠোঁটে বাদলদার ঠোঁটের আলতো ছোয়া উথাল করে দিয়েছিল পিহুর প্রথম ধরা কোলির মতন দেহ মন।


হটাৎ একদিন সব কিছু উল্টে পাল্টে গেলো পিহুর জীবনে । ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট ইউনিয়ন এ কি একটা ঝামেলায় জড়িয়ে পড়লো বাদলদা। পুলিশ ধরে নিয়ে গেল তাকে । সেদিনও এই জানলার সামনে দাঁড়িয়েই দেখেছিল ওর চলে যাওয়া । সেদিনও এমন করেই মেঘ ছেঁয়ে গেছিলো আকাশে । বাঁধ না মানা চোখের জলে, একরাশ বেদনা নিয়ে তার মন গেয়ে উঠেছিল সেদিন ।

 

" আমার সকল দুঃখের প্রদীপ 

জ্বেলে দিবস গেলে করবো নিবেদন

আমার ব্যাথার পূজা হয়নি সমাপন "।


সেদিন গোপন থাকেনি তার লুকানো ভালোবাসা মা বাপির কাছে । আসন্ন ঝঞ্ঝারের আশঙ্কায় ,খবরের কাগজের বিজ্ঞাপন দেখে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দিয়েছিল তার ম্যানচেস্টার নিবাসী তুষারের সাথে । 


" কি রে ধর " বাপির কথায় চমক ভাঙলো পিহুর। বাপির সাথে গলা মিলিয়ে গেয়ে ওঠে সে 


"মেঘের পরে মেঘ জমেছে 

আধার করে আসে " 


এর দুদিন পরে খুব সকাল সকাল একটা ভলভো আর দুটো গাড়ি করে বরযাত্রী রওনা দিলো নদীয়ার পথে । টালা ব্রিজ পার করে NH34 ধরে টিটাগড়, শ্যামনগর হয়ে ছুটে চললো গাড়ি । শান্তিপুর পৌঁছে রাস্তা র সাথে সাথে রেললাইন ধরে রেলগাড়ি ছুটতে দেখে বাচ্ছারা আনন্দে লাফিয়ে উঠলো। রানাঘাটে ব্রেকফাস্ট সেরে অবশেষে যখন ওরা নদীয়া পৌছালো, তখন দুপুর গড়িয়ে সন্ধে নেমেছে । আকাশে মেঘের মাঝে চাঁদের লুকোচুরি। 


রঞ্জন কাকুদের বাড়ি আলোয় ঝলমল করছিল । মিষ্টি ফুলের ঘ্রানে চারিদিকে বিয়ে বিয়ে সাজ । বিয়ের দিন পিহু নিজের হাতে সাজিয়ে দিয়েছিল রিমঝিম কে ।

নব বধূর সাজে অপূর্ব সুন্দর দেখাচ্ছিল ওকে।


ঠিক ছিল নব বধূকে নিয়ে পরের দিন দুপুরে কলকাতা রওনা দেবে ওরা । তাই পরের দিন ভোর হতে না হতে বড়দা আর মিঠুকে সাথে নিয়ে গ্রামের পথে বেরিয়ে পড়লো পিহু। মেঠো পথের দুধারে সোনালী ধানের শীষ সকালের শিশির ভেজা হওয়ায় মাথা দোলাচ্ছে । ইচ্ছামতির ধার দিয়ে যেতে যেতে মিঠু নেচে নেচে অস্পষ্ট বাংলায় গেয়ে উঠলো 


" আজ ধানের খেতে রৌদ্র ছায়ায় 

লুকোচুরির খেলা রে ভাই , লুকোচুরির খেলা " 


পিহুর প্রাণটা কি একটা পাওয়ার খুশিতে ভরে উঠল।


বিয়ের পর্ব মিটে যাওয়ার পরে দুপুরে বাড়িতে মায়ের কোলে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে শুয়েছিল পিহু । মা তার চুলের মধ্যে আঙ্গুল চালাতে চালাতে বললেন" তোর খুব রাগ হয় না রে মা আমাদের ওপরে ?" 

" এ কথা কেন বলছো মা ?" চোখ না খুলেই বললো পিহু ।

" আমি জানি, তুষারের সাথে বিয়ে তা তুই নিজের ইচ্ছায় করিসনি , কষ্ট পেয়েছিলিস তুই । কিন্তু যে জীবনটার স্বপ্ন তুই দেখছিলিস তাতে আরো অনেক বেশি বেদনা জড়িয়ে ছিল । সেই কঠিন পথে তুই চলতে পারতিস না । " পিহুর দু চোখের ধার দিতে গড়িয়ে পড়া জল মুছতে মুছতে মা বললেন।

" আমি ভালো আছি মা , তুষার ভালো রেখেছে আমাকে , কোনো অভাব রাখেনি আমার ।" বলতে বলতে পিহু র গলাটা ধরে এসেছিল । 

" শুধু মাঝে মাঝে তোমাদের সকলের কথা ভেবে খুব একা লাগে ।" নিজেকে সামলে নিয়ে বললো পিহু।

" মাঝে মাঝে মনে হয় তোকে অতো দূর না পাঠালেই বোধহয় ভালো ছিলো। " একটা দীর্ঘ নিঃশাস ফেলে বললেন মা ।

"আচ্ছা মা , বাদলদা দের কোনো খবর জানো ?" মায়ের দিকে তাকিয়ে শান্ত গলায় প্রশ্ন করলো পিহু । 

"নাহ , ওরা তো এপাড়া থেকে চলে গেছিলো সেই তখনই, কারোকে ওদের নতুন ঠিকানা দিয়ে যায়নি," জানলার বাইরে অপালক দৃষ্টিতে তাকিয়ে মা বললেন ।


বাইরে তখন পড়ন্ত বিকেল। পশ্চিম আকাশের বুকে সূর্যাস্তের এক মন মাতানো রঙিন খেলা। দু এক ঝাঁক পাখি কিচিরমিচির শব্দ করে বাসায় ফিরছে। তাদের মধ্যে একটা পাখি দলছুট হয়ে ছন্নছাড়ার মতন খুঁজে বেড়াচ্ছে এক নতুন ঠিকানা ।


আরো কিছুদিন আনন্দ করে কেটে যাওয়ার পর এবার পিহুর ফেরার পালা। আনন্দ মুখর বাড়িতে থমথমে পরিবেশ, মায়ের চোখ সকাল থেকেই কান্নায় লাল।

সন্ধে সাড়ে পাঁচটায় এয়ারপোর্ট পৌঁছে গেল পিহু, সাড়ে আটটার ফ্লাইট । আবার ফ্লাইটের অপেক্ষা ,কিন্তু এবার মন ভারী করে বসেছিল পিহু। 


 প্লেনটা মাটি ছেড়ে আকাশে ওড়ার সাথে সাথে পিহুর চোখ থেকে দুফোটা জল গড়িয়ে পড়ল ওর মসৃন গোলাপি গালে। মিঠু ওর চোখের জল মুছিয়ে ওর হাত দুটো নিজের হাথে শক্ত করে ধরে রইলো।


মেয়ের হাসি মুখের দিকে তাকিয়ে পিহুর মনে হলো ,সত্যিই ভালো আছে সে । ছেলেকে বাংলা শেখাতে না পারলেও ভালো আছে সে । তুষারের হাত ধরে মাঝেমাঝেই গেয়ে ওঠে সে 

"তোমারে ই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা 

এ সমুদ্রে আর কভু হবো নাকো পথহারা "

আর গানের মাঝে তুষার তার হাত ছাড়িয়ে হসপিটাল থেকে আসা কল নিতে উঠে চলে গেলেও ভালো আছে সে। দুর্গা পূজোর সময় প্রবাসী বাঙালিদের সাথে কাটানো পাঁচটা দিনে নিজের মাটির গন্ধ না থাকলে ও ভালো আছে সে ।

ভালো থাকবে সে , নিজের শিকরকে আঁকড়ে ধরে দলছুট পাখিটার মতন তার নতুন পাওয়া বাসায় ।


ম্যানচেস্টার এয়ারপোর্টের বাইরে এসে দেখে তুষার আর রনি অপেক্ষা করছে তাদের জন্যে। দুজনে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে ওদের ।

দূর থেকে একটা গানের সুর ভেসে আসে 


" আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি "।


Rate this content
Log in

More bengali story from Dalia Wadhwa

Similar bengali story from Drama