অজ্ঞাত ভালবাসা
অজ্ঞাত ভালবাসা
রাহাত কখনোই জানতো না, তার জীবনে এমন কিছু ঘটনা ঘটবে যা তার মনের মধ্যে অদ্ভুত অনুভূতি জাগিয়ে তুলবে। তার সামনে এক অদ্ভুত গল্প অপেক্ষা করছিল, তবে সে জানতো না এর পরিণতি কী হবে।
একদিন, বাসার সামনে খেলতে যাচ্ছিল রাহাত। সে ফোন চালাচ্ছিল, হালকা হালকা মুডে গেম খেলতে খেলতে বের হচ্ছিল, কিন্তু হঠাৎ তার চোখ পড়ে একটি সুন্দরী মেয়ে নিয়ে। মেয়েটি ছিল পাশের বাসার। তার নাম ইলহাম।
সে সেদিন কালো ব্ল্যাক ড্রেস পরেছিল, চুল ছিল খোলা, সাদা ত্বক আর মিষ্টি হাসি, যা রাহাতের চোখে যেন অদ্ভুত এক জাদু তৈরি করেছিল। তার চোখ থেকে রাহাত আর চোখ ফেরাতে পারলো না।
ইলহাম কিছুটা পাশের আন্টিদের সাথে কথা বলছিল। রাহাত একটু দূরে দাঁড়িয়ে, তার দিকে তাকিয়ে রইলো। ইলহাম কোনোদিনও রাহাতের দিকে খেয়াল করেনি। তবে রাহাতের মনে এক অদ্ভুত অনুভূতি জন্ম নিল—সে কি এ মেয়েকে পছন্দ করছে? তার মধ্যে একধরনের আবেগ উঁকি দিলো, তবে সে কিছুই জানলো না। মনে হচ্ছিল যেন পুরো পৃথিবী থেমে গেছে, শুধুই ইলহাম। তারপর একদিন রাহাত ইলহামদের বাসার পাশে দাঁড়িয়ে তার এক ভাইয়ের সাথে গল্প করছিল তখন ইলহামের বাবা বাজার থেকে বাসায় আসছিল । তার বাবা রাহাত কে দেখে বলে কে ? রাহাত তখন সালাম দেয় -- আসসালামুয়ালাইকুম আঙ্কেল । তখন ইলহামের বাবা বলে তোমার বাবা নাম ...... রাহাত বলে জ্বী । তখন ইলহামের বাবা বলে আমি তোমার ভাইয়া হব আঙ্কেল না ।
তারপর কয়েকদিন পর , রাহাতের ছোট বোন ইলহামের সাথে পরিচিত হয়। তাদের মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একে অপরের সাথে সময় কাটাতে লাগল। রাহাত কখনো তার বোনের কাছে এই অনুভূতি প্রকাশ করেনি। তবে, একদিন রাহাত তার ছোটো বোনকে বললো, তোর আপু (ইলহাম) এত সুন্দর কেনো ?" রাহাতের বোন হাসল ...
রাহাত বলল আমি সুন্দর না ?
তার ছোট বোন বলল হুম তুমি অনেক সুন্দর ।
রাহাত কিছু না বলে হাসল ।
এর পরদিন, রাহাতের ছোট বোন এসে ইলহামকে বলল আপু তুমি এত সুন্দর কেন? তখন ইলহাম বলল আল্লাহ বানিয়েছে তাই । তুইও অনেক সুন্দর । রাহাত এর বোন বলল আমার ভাই সুন্দর না ? ইলহাম হাসল ...
এভাবেই দিন চলছিল , রাহাতের বোন ও ইলহাম অনেক গল্প করত , গেম খেলত ...... কিছুদিন পর,হঠাৎ ইলহাম রাহাতকে অঙ্ক করতে দেয় এবং রাহাত তা করে দেয় । তারপর কিছুদিন পর ,রাহাত তার বোনকে বললো, “তোর আপু যদি কোনো অংক করতে সমস্যা পায়, তো তাকে বল আমি সাহায্য করতে পারি।” হয়তো রাহাত ভেবেছিল এই সুযোগে যদি ইলহামের সাথে তার কথা হয় ...
একদিন, ইলহাম রাহাতকে অংক করতে দিলো। এবং রাহাত তা করে যখন তার বোনেকে দিয়ে পাঠাচ্ছিল তখন তার মা বুঝতে পারে এবং রাহাতকে বলে এটা কার খাতা তোমার কাছে কেনো? রাহাত বলে ইলহাম অঙ্ক করতে দিয়েছে ।
এটা শুনে রাহাতের মা সোজা গিয়ে ইলহামের মাকে এ বিষয়ে জানিয়ে দেন এবং ইলহামের মা তাকে বকা দেন। এরপর থেকে, রাহাতের ছোট বোন আর কখনোই ইলহামের সাথে ভালো ভাবে কথা বলে নি , রাস্তায় দেখলেও এড়িয়ে চলত।
এই ঘটনার পর, রাহাত আর ইলহামের মধ্যে সম্পর্কের একটি অদ্ভুত শূন্যতা তৈরি হয়। তারা একে অপরকে পছন্দ করতো, কিন্তু তাদের মধ্যে যোগাযোগের কোনো সুযোগ ছিল না। তারা একে অপরকে ভালোবাসতো, কিন্তু নিজেদের মনের কথা প্রকাশের সুযোগই পায়নি।
তবে, রাহাত আর ইলহামের মধ্যে কিছু ছিল, যা কখনো প্রকাশ পায়নি। তাদের হৃদয় একই অনুভূতিতে ঢেকে ছিল, কিন্তু মনের কথা কখনো মুখে আসেনি।
এভাবেই চলতে থাকলো—ভালোবাসা ছিল, কিন্তু একে অপরের কাছে তা প্রকাশ করার সুযোগ কখনোই আসেনি।তারা ভাবতো তাদের কি কখন কথা হবে না? কখন কি তারা তাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারবে না ? একদিন, হয়তো তারা তাদের মনের কথা প্রকাশ করবে। তবে তা ঠিক কখন হবে, কেউ জানে না। সমাপ্ত

