মুক্তি
মুক্তি


পৃথিবী কাঁপিয়ে করোনার কোপ অবশেষে বাংলাতে
সর্বত্রই জনতা কার্ফু, করোনার করাঘাতে।
স্যানিটাইজারে বারেবারে হাত ধুয়ো ‘ওরে গৃহবাসী’
মুখে যদি মাস্ক না থাকে তোমার, করোনা পরাবে ফাঁসি।
লকডাউনের এমনি গেরোতে এ বাংলা জেরবার
কড়া সীমারেখা, গন্ডি পেরোলে জোটে পুলিশের মার।
ঘরে বাড়ন্ত আনাজপাতির সঙ্গে যা প্রয়োজন
চোরাকারবারে চালের আড়ত সাবাড়ের মূলধন।
গত হয়ে গেল তিন চার মাস নাজেহাল হয়ে শেষে
সংকটময় পরিস্থিতি যে জবাই করেছে ঠেসে
পরিযায়ী ব'লে ভুখা শ্রমিকেরা কালো দাগে চিহ্নিত
রেলের লাইনে ছড়ানো রুটির টুকরো আবিষ্কৃত,
ওঠে রাষ্ট্রের উন্মাদ চাকা সহায়হীনের বুকে
দুঃসময়ের এমন প্রহরে মৃত্যুকে দেবে রুখে?
নিয়তির হাতে নিজেকে সঁপেছ, কোথায় গুঁজবে মাথা?
সুন্দরবনে ভাঙে নদীবাঁধ, উড়েছে ছাউনি-ছাতা।
এসেছে ভয়াল উম্পুন মহাউত্তাল তাণ্ডবে;
সীমান্তে চলে গোলাগুলি ফের, ধ্বংসের উৎসবে।
দ্বারে ঘুরে গেছে মৃত্যুদেবতা, ধরেছে নগ্নরূপ!
শাস্তি নাকি এ সান্ত্বনা দেওয়া, সভ্যতা নিশ্চুপ।
এই তবে খাসা জনদূরত্ব, মানবতা অবহেলে!
হাসপাতালের বেডের অভাবে মরেছে কিশোর ছেলে।
বাড়িতে কোভিড পজিটিভে তিন হপ্তা জ্বলেনি উনুন
হাতে ভাতে মেরে ফেলার ফন্দী, মাকড়শা-জাল বুনুন।
বিশ্বাসে রাখি দায়বদ্ধতা, উত্তরণের আলো!
এসো, নিরাশার গভীর আঁধারে পূণ্যপ্রদীপ জ্বালো।
দুপুর গড়িয়ে বিকেল নেমেছে, স্ফটিকে সোনালী রোদ
জীবনের আলো-আঁধারি খেলাতে অটুট মূল্যবোধ,
সেই চেনা প্রত্যয়েই আমরা প্রত্যহ জেগে উঠি
আগমনী গান ভোরের আজানে মিশে যায়, মেলে ছুটি।