বলতে পারো কেন?? - রবি পাত্র
বলতে পারো কেন?? - রবি পাত্র
ওই যে শিশুটা রাস্তার ধারে
চায়ের দোকানে বহাল কাজে।
বলতে পারো কেন?
চিৎকার করে বলে বাবু,
তাড়াতাড়ি কাজ কর,খরেদ্দের যে পালাবে,
তোর কি জ্ঞান বুদ্ধি নেই?
হাত পুড়ে যায়, পা চলে না আর,
টলতে টলতে গরম কেটলির ছ্যাঁকায়,
হাতখানা যায় ফোসকা হয়ে।
ঘুমে চোখের পাতা বন্ধ হয়ে যায়,
বাবুর মুখে বাক্য তবুও থামে না।
বলতে পারো কেন?
রাত-দিন কাজ করে,
বিশ্রাম নামক শব্দখানা প্রায় উঠে গেছে,
নরম হাত দুটোতে কালো ঘা হয়ে গেছে।।
বলতে পারো কেন?
যে বয়সে থাকতো হাতে কলম,
পাশে থাকতো বই-খাতা,
এখন তার হাতে চায়ের কেটলি!
বলতে পারো কেন??
যে শিশু আজ অংকে কাছে -দূরে মাপ শিখতো,
সে এখন চায়ে চিনির মাপ করে।
বলতে পারো কেন?
যে বয়সে বই হাতে, ছুটে যেত পাঠশালায়,
সে এখন ছুটে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে।
যে শিশু খেলতো এখন পুতুল ,লুকোচুরি
সে এখন চায়ের দোকানে খেলে,
গরম কেটলি সঙ্গে।
বলতে পারো কেন?
এখন তার গল্প শোনার সময়,
কিন্তু গল্প তার কপালে জোটে না।
শুধুই জোটে বাবুর কটু গালি।
বলতে পারো কেন?
যে শিশুর হাতে গড়ে ওঠে, সোনার দেশ,
কেন তারা ছুটে কর্মের খোঁজে??
যাদের বুদ্ধি-জ্ঞানে এগিয়ে যাবে,
বিজ্ঞান-প্রযুক্তি শিল্পকলা,
বলতে পারো কেন?
তাদের পিষে মারা হচ্ছে, কাজের দোকানে??
শিশুর জীবন অনাগত ভবিষ্যতে,
সাফল্যের বপনকাল,
কেন তাকে ঠেলে দিচ্ছে সমাজ অন্ধকারে?
তাই বলি কি শিশুশ্রম নয়,
শিশুর জীবন হোক স্বপ্নময়।