চবনপ্রাস
চবনপ্রাস
চবনপ্রাস হ’ল চিনি, মধু, ঘি, আমলা ,জ্যাম, তিলের তেল, বেরি এবং বিভিন্ন ভেষজ মশলার মিশ্রণ। চরক সংহিতা আয়ুর্বেদিক গ্রন্থে প্রথম এর উল্লেখ পাই আমরা। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ডায়েটরি পরিপূরক হিসাবে চবনপ্রাস খেয়ে চলেছে। কিন্ত জানেন কী এর জন্ম বৃত্তান্ত?
মহাভারতের আদিপর্বে ঋষি চবনের নাম বেশ কয়েকবার নেয়া হয়েছে। ঋগ্বেদেও একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা আছে তাকে নিয়ে। বলা হয় এই ঋষি চবনের নামেই অমৃত মিশ্রণ যা আমরা গত দশ হাজার বছর ধরে খেয়ে চলেছি অমোঘ বিশ্বাসে।
মহর্ষি ভৃগুর পুত্র এই চবন। চবনপ্রাস হ’ল চিনি, মধু, ঘি, আমলা ,জ্যাম, তিলের তেল, বেরি এবং বিভিন্ন ভেষজ মশলার মিশ্রণ। চরক সংহিতা আয়ুর্বেদিক গ্রন্থে প্রথম এর উল্লেখ পাই আমরা। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ডায়েটরি পরিপূরক হিসাবে চবনপ্রাস খেয়ে চলেছে। কিন্ত জানেন কী এর জন্ম বৃত্তান্ত?
মহাভারতের আদিপর্বে ঋষি চবনের নাম বেশ কয়েকবার নেয়া হয়েছে। ঋগ্বেদেও একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা আছে তাকে নিয়ে। বলা হয় এই ঋষি চবনের নামেই অমৃত মিশ্রণ যা আমরা গত দশ হাজার বছর ধরে খেয়ে চলেছি অমোঘ বিশ্বাসে। *প্রথম গল্প* বলছে মহাভারতের আদিপর্ব আর সেই গল্পের ই কিছুটা কাব্যিক পরিশিষ্ঠ রয়েছে অনুশাসন পর্বে। ঋষি চবনের ধ্যান ভাঙিয়ে বৈদিক রাজা শৈরাতির ( বৈবাস্বত মনুর পুত্র)কন্যা সুকন্যা (সংস্কৃত: सुकन्या) পড়লেন মুনির রোষে। শাপিত হয় বাঁচাতে চবনের সাথে সুকন্যার সাথে বিয়ে দিলেন রাজা শৈরাতি। চলছিল সব ভালোই কিন্তু চবন বয়েসে ছিলেন বৃদ্ধ আর রাজকন্যা তখন সদ্য যুবতী।মুখে কিছু না বললেও মুনি ভালো মতোই জানতেন ভয়ে বা শ্রদ্ধায় স্ত্রী চুপ করে আছে হয়তো কিন্তু সাংসারিক ধর্ম তথা কামের বিষয়ে মুনি বয়েসের কারণে নিতান্তই অপারগ। বিষয়টি বেশ কষ্ট দিতে থাকে তাকে। এমন সময় একদিন হাজির বৈদিক দেবতা অশ্বিনী কুমার ভাত্রদ্বয়।ঋগ্বেদের আমল থেকে এই দুই ভাই হলেন দেবতা কুলের ডাক্তার।বিপদে পড়লে এদের ডেকে পাঠান ইন্দ্র কিন্তু সম্মান দেন না আর তাই যজ্ঞের সোম রসের আহুতি র ভাগ পান না এঁরা।এই নিয়ে একটা চাপা দুঃখ ছিল তাদের ও। চবন এদেরকে সেই সোম রস উৎসর্গ করলেন আর কৃতজ্ঞতা স্বরূপ দেবতা দুজন চবনকে বললেন কী তার কামনা। সুযোগ বুঝে ঋষি চাইলেন এমন একটা অষুধ যাতে তার যৌবন ফিরে আসে র সুন্দরী সুকন্যার পাশে ঘুরে ফিরে চলতে কোনো inferiority complex না হয়। ব্যাস !! তৈরি হলো এক অদ্ভুত আয়ুর্বেদিক মিশ্রণ ।প্রাসন অর্থাৎ বেটে বা গলিয়ে খাওয়ানো র প্রথায় চবনের জন্য তৈরি হলো চ্যবনপ্রাস ।সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলিতেছে
এর আরেকটা version পাওয়া যায় ঋগ্বেদে । ভৃগু র স্ত্রী পুলমা যখন চবন কে গর্ভে ধারণ করে আছেন এক রাক্ষস তার ও নাম পুলমা (কেউ বলে পুলোম) , ভৃগুর স্ত্রীকে কিডন্যাপ করে নিয়ে পালায়। সেই ঘটনার পিছনেও আরেক ঘটনা আছে সে আর বলছিনা এখন।যায় হোক বরাহ রূপ ধারণ করে সেই রাক্ষস যখন প্রানপন ছুটছে দৌড়ঝাঁপের ফলে গর্ভ থেকে চ্যুত হয় যে সন্তান সেই চ্যবন। অকালে ভূমিষ্ট হওয়াতে তার জীবন রক্ষা র জন্য জঙ্গলের সব উপকারী বৃক্ষ নিজেদের সেরা উপকরণ দিয়ে যে প্রাস তৈরি করে শিশুটিকে খাইয়েছিলো তাই নাকি চ্যবনপ্রাস।
আপনার যে গপ্পো টা মনে ধরলো সেটাই ঠিক ধরে নিন।আর রোজ সকালে এক চামচে চবনপ্রাস খেতে ভুলবেন না যেন