সত্যজিৎ স্মরণে
সত্যজিৎ স্মরণে


যে বাঙালি একটি বারও ২১ রাজনী সেন
রোডে গিয়ে ফেলুদার খোঁজ করেনি
প্রদোষ চন্দ্র মিত্তের মতো বুদ্ধিদীপ্ত মনোভাব
গড়ার স্বপ্ন একটি বারও দেখেনি
কিংবা ছোট ভাইটির প্রশংসায় একটি বারের
জন্যও বলেনি "সাবাশ তোপসে"
বৃষ্টি মাখা সন্ধ্যেবেলায় মনে হয়নি একসাথে
মিলে তারিণী খুড়োর গল্প শুনি বসে
অথবা যে বিস্মিত হয়নি প্রফেসর শঙ্কুর
নানান এডভেঞ্চার আর আবিস্কারে
সৌভাগ্যবান হতে চাইনি, স্বপ্ন মাঝে
ভূতের রাজার দেওয়া তিনটি বরে
একটি বারও যার ইচ্ছা হয়নি দেখা করতে
জটায়ু কিংবা গুপি বাঘের সাথে
'অনাথবাবুর ভয়' পড়ে ছাদের দিকে তাকিয়ে,
গা ছমছম করেনি গভীর রাতে
যার ইচ্ছা হয়নি ছোট গল্পগুলো পড়তে
পড়তে শেষটুকু আগে জানতে
একটা চারমিনার ধরিয়ে, গায়ে সাদা শাল
জড়িয়ে ‘ফেলুদা সমগ্র’ পড়তে
ছেলেবেলার কল্পনায় একটি বারের জন্যও
যে 'হীরক রাজার দেশে' ঘোরেনি
আর যাই হোক, পূর্ণাঙ্গ রূপে বাঙালি
সে বোধহয় এখনো হয়ে ওঠেনি
যিনি ছিলেন একাধারে চিত্র পরিচালক,
ক্যামেরাম্যান থেকে
শুরু করে সেট ডিসাইনার
স্ক্রিপ্ট রাইটার, গ্রাফিক শিল্পী, ‘সন্দেশ’-এর
সম্পাদক থেকে শুরু করে গীতিকার, সুরকার
প্রতিটি সিনেমাতেই ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড থেকে
শুরু করে কতইনা আন্তর্জাতিক পুরস্কার
লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড হিসেবে
যিনি পেয়েছেন সাম্মানিক অস্কার
একদিকে যেমন তার সাহিত্য সৃষ্টিতে
আজও নস্টালজিক প্রতিটি বাঙালি মন
অন্যদিকে তার সিনেমার জগত যেন
জীবনের প্রতিটি আঙ্গিকের প্রতিফলন
প্রকৃত অর্থেই তুমি দেশের মানিক, তোমার
মূল্যায়ন হতে পারেনা কোনো পুরস্কারে
সিনেমা, সাহিত্য, সংস্কৃতি যতদিন থাকবে বেঁচে,
ততদিন তুমি রবে মোদের হৃদয়খানি জুড়ে
আবার তুমি এসো ফিরে, আবার মোদের সম্মৃদ্ধ করো
তোমার ঐশ্বরিক প্রতিভার মাধ্যমে, এই রইলো কামনা
সত্যই - “এই পৃথিবীতে বাস করে সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্র
না দেখা, চন্দ্র-সূর্য না দেখার মতোই অদ্ভুত ঘটনা!”
তোমার জন্ম শতবর্ষে, আজ না হয়,
গঙ্গা জলে গঙ্গা পুজোই দিলাম
প্রিয় মানিকদা - যেখানেই আছো ভালো থেকো,
"মহারাজা তোমারে সেলাম"