রোদ-মেঘ-ঝড়-বৃষ্টি
রোদ-মেঘ-ঝড়-বৃষ্টি


।এক।
মহাবিশ্বের এক কোনে থাকা সূর্য থেকে
নেমে এসেছি আমি রোদ হয়ে,
সবার জীবনে নিয়ে এসেছি আলো
আর একটু নিয়ে উষ্ণতা।
মৃত্তিকা হতে এই উষ্ণতায় শুষে নিয়ে আমি
দিই ফিরিয়ে জলকে, বৃষ্টিরূপে, শিলারূপে,
এক সত্ত্বার ছোট ছোট অংশকে পাঠাই
দূরেদূরে, আর সেই সত্ত্বাদের হয় বন্ধু নতুন-নতুন।
মেঘ-বৃষ্টির সম্পর্ক এক চিরন্তনের প্রেম
মেঘ রাখে আগলে বুকে বৃষ্টিকে, আর
বৃষ্টি হয়েও সে বারবার ফিরে আসে
মেঘের কাছে, কারণ তারা অমর, ভালোবেসে।
ঝড় এসে যখন নিয়ে যায় মেঘ
মেঘের সত্ত্বা টুকরো হলেও,তার ছোট বুকে
রয়ে যায় বৃষ্টি, আর যখন ঝড় চলে যায় দূরে
মেঘেরা আবার জটলা করে, সঙ্গে নিয়ে বৃষ্টি।
এই তিনের ভালোবাসায় আমি থেকে যাই
একলা, হয়তো প্রেমিকহীন, দূর হতে শুধু দেখি
এই গল্প, আর শুনি ধূসর ভায়োলিন,
যা বেজে চলে যখন ঝড় বয়ে যায়।
আমার গল্পে কি আমি খল?
মৃত্তিকার কি শত্রু আমি? আমি যে বারবার
কেড়ে নিই তার বন্ধু বৃষ্টিকে, সাথে
কেড়ে নিই তার প্রাণের নমনীয়তা।
।দুই।
পথের কোণে বসে আছে এক ভিকারিনী
কাঁপছে, থরথর করে, আর কাঁদছে
ভিজে মৃত্তিকায় আর যে হবে না শোয়া, ঠান্ডায়
তার বেড়ে উঠছে যে শরীরের উত্তাপ।
পথের ওপারে রয়েছে বসে বেঞ্চে এক যুগল
নীল ছাতার নীচে তারা করছে প্রেমের অন্বেষণ
বৃষ্টিবাদলা যে তাদের কাছে রোমান্টিক সময়
আর সময় আনন্দের।
আমার পথ চেয়ে বসে আছে সেই ভিকারিনী
সে যে আমার প্রেমিকা, আমার নায়িকা
এই ভালোবাসার গল্পটা না হয় একটু আলাদা
তথাকথিত ভালোবাসায় যে মেটে না ক্ষুধার
জ্বালা, ক্ষুধার গভীরতা, বরং আমার উষ্ণতায়
মেটে তার প্রাণের জ্বালা, আমার আলতো ছোয়ায়
সে ফিরে পায় বেঁচে থাকার গান,
আর আধপেটে দিনগুজরান করা এই নায়িকা
আমার উষ্ণতায় স্মৃতিচারণ করে
তার পুরোনো সোনালী দিনগুলি।