পতিতের কান্না
পতিতের কান্না


ওহে রজনী, মোরে দিও না মুক্ত জোছনা,
আমি তুচ্ছ, তাই ভুলে যেতে পারি আঁধারের অনুসূচনা ।
ওহে স্বপ্ন, মোরে দিও না মিথ্যা সাহারা,
আমি, ভগ্ন রুগ্ন হৃদয় খানিরে কেমনে করিব পাহারা?
ওহে নিদ্রা, বৃথা কোরোনা বার্থ চেষ্টা!
আমি মরিবার আগে, দেখে যেতে চাই আমার করুণ শেষটা!
ওহে সূর্য, জানি তাড়া নেই আজ সকালের
আমি ভোরের আকাশে, তাই দেখিতেছি কাল বৈশাখী অকালের!
ওহে বিশ্ব, কেন করিতেছ বৃথা কষ্ট?
কেন বলিছনা হায়, দেখিয়াছ তুমি আমার বিনাশ স্পষ্ট!?
কেন রক্ত, আজও বহিবি ধমনি গহ্বরে?
নিজ ঘর ছাড়িয়া, কেন দৌড়াবি অজানা অচেনা শহরে?
ওহে বাতাস, মোরে দিও না শীতল স্পর্শ
আমি যুগ যুগ ধরে বহিতেছি সাথে মৃত্যুর পরামর্শ!
ওহে রশ্মি, বৃথা করিও না দিকভ্রান্ত,
আমি মুক্তির খোঁজে পথে নামিয়াছি ভুলিয়াছি দ্বার প্রান্ত!
ওহে সমাজ, আমি জানি তোর অভিসন্ধি,
তবে লাভ কিছু নাই, জেনে রাখ আমি ক্ষণিকের প্রতিবন্ধী!
ওহে সময়, আমি জানি চোখ তোর তীক্ষ্ণ,
আমি এক দুই করে, পার করিয়াছি সকল ব্যাঘাত বিঘ্ন;
ওহে সুন্দর, আমি কুৎসিত কল্পনা,
আমি অনন্ত শ্বেত তূষারের মাঝে খুঁজিতেছি জলকনা!
ওহে বাহ্য, আমি নিকটের রূপে বন্দী,
আমি প্রেম মুক্তির সাগর তটে এঁটেছি মরন ফন্দি ॥
ওহে সুর, আজি এসেছি মনের দোয়ারে,
তবে ভাসিবনা বৃথা, আজকে হেথায় জীবন গানের জোয়ারে।
ওহে রুদ্র, আমি দুর্বল জরাজীর্ণ,
আজি ক্ষুধার জ্বালায় মন বিষাক্ত, বাহুডোর সংকীর্ণ।
ওহে যৌবন, বৃথা দিস না মোহের বাঁধন,
আমি বিষের জ্বালায় তুলেছি অস্ত্র ভুলেছি ভবের সাধন!
ওহে মরুতট, আমি কাঞ্চন বালিয়াড়ি
আমি রূপের নেশায়, দিয়েছি বৃথাই শল্যের দেশে পাড়ি!
ওহে বন্ধু, জানি বন্ধু আমিও নই
থেমে যাক কাল, তবু আমি মোর শেষ কথা জানাবোই!
ওহে সুখ, আমি ক্লান্ত বড়ই
ভ্রান্ত যদিও নই, আজি দিবসের অন্তে, তবু মুক্তি পেলাম কই?
ওহে শত্রু, মোরা শত্রু যদিও হই,
কেমনে সমাজ শাস্ত্র ভুলিয়া বন্ধুর বেশে রই?
তাই বন্ধু আজ বন্ধুর স্বরে কই
আমি এই আঁধারের অঙ্কেতে ঢাঁকা মুক্তিরই হইচই! ॥॥
--------X----------