মুক্তির দূত
মুক্তির দূত


মুক্তির দূত
ভেজে ,
তপ্ত
সপ্তসিন্ধু ,
পড়ে রক্ত বিন্দু বিন্দু;
মরে চোখের পলকে একে একে সব
মুসলিম কিবা হিন্দু!
দেখি,
দেশেতে
দশের দৃশ্য,
যেন করুন কাঙাল নিঃস্ব ;
ওঠে দিকে দিকে আজ বিদ্রোহী রব
কাঁপে অনাথের বিশ্ব।
ওরে,
বিপ্লবী সংগ্রামী,
হতে
চাই বিদ্রোহী আমি;
জানি যুদ্ধই আনে বৈভব
দেশে সম্পদ নামি দামি!
জানি,
এ দেশ
রত্নগর্ভ,
যত বিদ্রোহীদের স্বর্গ;
তবে এখানে ,ক্ষুধার শৈশব
মাগে আজও রক্তের অর্ঘ্য!
পথে,
পথে ওই
ওই ওই শোনা যায়
রাতের বিনাশ স্পষ্ট;
আমি কংশের কাটা মুণ্ডু
দুহাতে , ভাঙিয়া করিব নষ্ট!
ওড়ে,
এলো চুল
ওড়ে দেবীর অঙ্গ,
বেদীর পাথর আস্ত;
যদি ঝরে খুন
তবু লিখে যাব আমি বিনাশের দরখাস্ত!
ওহে,
সৈনিক
কেন লুকাবি,
এখনও,মহিষাসুরের গর্তে!
দেখ ভেবে দেখ কেন
কাপুরুষ তুই যোদ্ধার পরিবর্তে!
নদী,
মাঠ ঘাট,
যেন মৃত্যু কাতর,
শুনি প্রলয়ের নিঃ'শ্বাস;
হবে শান্ত ঘূর্ণি ঝঞ্জা
যেন এ এক কঠিন বিশ্বাস!
জানি ,
অরাজকতার,
লেগে আছে রঙ,
যত -বিপ্লবী ষড়যন্ত্রে;
তবু গাহি গান আমি একেলাই ,
আজও বিদ্রোহীদের মন্ত্রে!
দিক'
বিদিকের
জ্ঞান শুন্য,
ওই শ্রমজীবী দের সন্ন্যাস,
যেন পলাশের কালো অঙ্গে,
শত শিমূলের শিরা বিন্যাস!
আমি জানি ,
আজও
ওঠে সূর্য ,
ওই পাশ্চাত্যের শহরে;
জানি আজও শোনা যায়
সেই হুঙ্কার , মৃত্যুর নৌবহরে।
কূল,
গোত্রের,
ভেদা-ভেদহীন ,
সেই চির সাতান্ন সাল,
আজও বলে যায় কানে
কানে সেই সব বিদ্রোহীদের হাল।
বলে,
জেগে ওঠ,
ওরে বিদ্বান যত,
চির নিসুপ্ত বীর,
ধর তলয়ার, নয় কাস্তে,
আয় নিয়ে আয় নর শির!
শেষ,
আহ্বান ,
তাই দিয়ে যাই,
এই মৃত্যুর সাম্রাজ্যে;
ক্ষুধা যাতনা চড়েছে সপ্তমে
তারে সহ্য হয় না আর যে!
ওরে,
বিদ্রোহী,
আজ মৃত্যু গরল,
এনেছি ক্ষুধার পাত্রে;
আজ কারাগারকেই মুক্তি দেব,
এই শেষ বিদ্রোহী রাত্রে!
..................... স্মরণে নজরুল