বসন্ত ঋণ
বসন্ত ঋণ


বসন্ত ঋণ
সম্মোহনের টেরাকোটায় আমার দু-চোখে আজও ঘোর অনাচার
আমার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় সজীব হয় গোপনীয়তার ঘ্রাণে
খিড়কির দরজা খুলে হেঁটে চলে যাই ইহজীবন
ভোরের আলোয় উজ্জ্বল হয়ে ওঠে যাবতীয় না-থাকা
পূর্বাশ্রমে মাথা নত করে রাখি দুঃসহ স্মৃতিভারে
সকালের আগমনে সচেতন হই ফের
যত্নে সাজাই মুখোশের হাসি মুখ
রঙের আয়োজন পথের ধুলোয়
রিক্ত বৃক্ষজন্মেও ঢেউ তোলে তিরতিরে হাওয়া
তবু একতারা বলে, "আমি বিরহ ভালোবাসি"
বিন্যাস চিত্র প্রদর্শনী হয় যাপনের অভ্যাসে
ঘুমন্ত গৃহস্থ ভয় পায় খামোখাই
সীমান্তবর্তী শীর্ণকায়া যে নদী
মন্থর গতি--
গন্তব্যের আড়ালে খোঁজে ঘর
আমিও পরাজিত অশ্বের ন্যায় বসে আছি
সূর্যের আড়ালে, পাথরে কিংবা ফুলের পরাগে
দায়ভার বইতে ক্লান্ত লাগে
সঙ্গোপনে রক্তাক্ত হয় মন নামের অছায়াপথ
বর্ণহীন সন্ধ্যা নামে পৃথিবীর কার্নিশে
একাকী ফড়িং - - নিভে যাওয়া আলো মাখে সর্বাঙ্গে
প্রস্থানের স্মারক, বোধহয়
বিচ্ছেদ সমারোহে ক্ষত ঢাকে পলাশের লাল
ঝরা পাতা থেকে সরে আসে ছবির কোলাজ
হাতে হাত রেখে বাকি থাকে সমাপন
শহরের ঝুল বারান্দায় তখন নিছক অবসর
কড়ি দিয়ে কিনে নিতে চাই, সোহাগের দাম
ফরিয়াদি চাঁদ
উদাসীন মোড়কে ঢেকে রাখে অসহায়তা
নিরাশ্রয় রাত মোহনা কাঁদে, একা
অবিশ্বাসের ইতিহাস
দেউলের কোঠরে মাথা কুটে মুক্তি চায় জ্যোৎস্নার ডাকে
রক্তচন্দনে ধুয়ে মুছে ফেলি দেবতার অভিশাপ
ভারী হয়ে ওঠে পাষাণের অবরোধ.....
তুমি নারী থেকে নিছক প্রেমিকা হলে এভাবেই
নিরাপদ পরিচয়ে
বসন্তের সমাগমে
আমাদের মিথ্যা বসত
চুরি করা 'সংসার' নাম--
ইতিবৃত্তে পূর্ণচ্ছেদ।
আজন্মলালিত ব্যথার কবজ - -
জ্বলে গেছে রাত শেষে ভোরের আখরে
ঠোঁটের আদেশে বিষ হয় উষ্ণতম মাস
ধ্বংসের গহ্বরে অবিরাম প্রতিধ্বনি
নির্দয় হাতে সৎকার করি সন্তানের চিতাভস্ম
তারপর ধৈবত জুড়ে নিথর স্তব্ধতা
তোমার উপেক্ষা জানে, কিভাবে বসন্তের ঋণ
আমাকে পুরুষ সাজাল, নির্বিকারে ।
দৃশ্য