Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Aparna Chaudhuri

Children Stories Fantasy

3  

Aparna Chaudhuri

Children Stories Fantasy

তিন্নি আর মামমাম (পর্ব ১৩)

তিন্নি আর মামমাম (পর্ব ১৩)

3 mins
252



“ তোমাদের এখানে টিভি নেই, ট্যাব নেই, খেলনা নেই, আমি কি করি বলত সারা দিন?” তিন্নি মন খারাপ করে বসে আছে । আসলে আজ রাজু আর টুকটুকি আসেনি। কারণ রাজুর জ্বর হয়েছে।

মামমাম ওর পাশে এসে বসলো, “ সত্যি তো দিদি, খুব মুশকিলের কথা। কি করা যায়?”

দুজনেই গালে হাত দিয়ে ভাবতে বসলো। সেঁজুতি মামমাম ওদের ওভাবে বসে থাকতে দেখে জিজ্ঞাসা করলো, “ কি গো তোমরা অমন মুখ গোমড়া করে গালে হাত দিয়ে বসে আছো কেন?”

ওরা ওদের মন খারাপের কথা বলতেই সেঁজুতি মামমাম হেসে উঠলো,” ও...... এই কথা? তা তোমরা শুধু খেলনা পুতুল নিয়ে খেলো আমি তোমায় আজ পুতুল তৈরির কারখানার নিয়ে যাবো। সেখানে তুমি পুতুল তৈরি দেকবে, নিজেও বানাবে।“

“ নিজেও বানাবো?” লাফিয়ে উঠলো তিন্নি। সঙ্গে সঙ্গে সেঁজুতি মামমামের হাত ধরে ঝুলে পড়লো।

“ কোতায় নিয়ে জাচ্চিস ওকে?” জিজ্ঞাসা করলো মামমাম।

“ কুমোর বাড়ী......” গেট দিয়ে বেরিয়ে যেতে যেতে চেঁচিয়ে জবাব দিল সেঁজুতি।

কুমোর বাড়ী আশ্রম থেকে খুব দূরে নয়। মেঠো পথ দিয়ে যেতে যেতে পথে পড়ল নয়ন মুদির দোকান। সেখানে চাল ডাল থেকে চকোলেট মিঠাই সব পাওয়া যায়। তিন্নি দোকানটার দিকে তাকিয়ে আছে দেখে নয়ন মুদি ওকে ডেকে একটা বাদাম চাকতি দিল, দাম নিল না।

কুমোর বাড়ীটার সামনে অনেক তা খোলা জায়গা। তার একদিকে অনেক হাঁড়ি, কলসি, ভাঁড় রাখা আছে। মাঝে একটা খোলায় ছাওয়া জায়গায় মাটির ওপর একটা চাকা লাগানো। একটা ছোটো মেয়ে একটা লাঠি দিয়ে সেই চাকা টাকে সমানে ঘুরিয়ে চলেছে।

“ এই টেঁপি তোর বাপ কোথায়? “ জিজ্ঞাসা করলো সেঁজুতি মামমাম।

“ এইতো দিদি , আমি একেনে। কিচু দরকার?”

“ এই দিদির নাত্নিকে নিয়ে এলুম মাটির পুতুল তৈরি দেকাতে। এই আমাদের তিন্নি, কোলকাতায় থাকে। “

“ টেঁপি অ টেঁপি এদিকে আয়। “

টেঁপি নামক মেয়েটি চাকা ঘোরানো ছেড়ে ওদের সামনে এসে দাঁড়ালো। রোগা, লম্বা, মাথায় এক মাথা ঝাঁকড়া চুলে কাল রাতের আধ খোলা বিনুনি। বয়সে তিন্নির চেয়ে একটু বড় হবে। ওর দিকে চেয়ে দাঁত বার করে হাসল।

“ টেঁপি ওকে তোর পুতুল গুনো দেখা ।“

টেঁপি তিন্নির হাত ধরে ওকে ভিতরে নিয়ে গেল। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই তিন্নির আর পুতুল খেলা ভালো লাগলো না। ও চলে এলো কুমোরের চাকের সামনে। অবাক হয়ে দেখতে লাগলো কিভাবে কয়েক মিনিটের মধ্যে কুমোর কাকা একটা মাটির তালের থেকে একটা গ্লাস বাঁ মাটির ভাঁড় বানিয়ে ফেলছে। কয়েকবার দেখার পর ওর মনে হল এতো ভারি সহজ কাজ।

“ আমিও বানাবো। কাকা আমাকেও বানাতে দাও না প্লিজ।“

“ হা হা হা ...... তুমি এখনও ছোটো আছো মা তুমি কি পারবে?”

“ পারবো খুব পারবো। তুমি দিয়েই দেখ না।“ জেদ করতে লাগলো তিন্নি। শেষে ওর জেদের কাছে হার মানতে হল। এক গাল হেসে একতাল মাটি নিয়ে বসলো তিন্নি চাকের সামনে। কাকা ওকে শেখাতে লাগলো কি ভাবে বানাতে হবে । তিন্নি মন দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আধ ঘণ্টা চেষ্টা করার পর তিন্নি ক্লান্ত ও বিরক্ত হয়ে গেলো। আর যে জিনিষটা তৈরি হল সেটাকে ভাঁড় বা গ্লাস কিছুই বলা যায় না।

“ ধ্যুর তোমার চাকাটাই খারাপ।“ বলে গাল ফুলিয়ে উঠে গেলো তিন্নি।

“ তুমি ঠিক বলেছ দিদি। তুমি বরং টেঁপির সঙ্গে পুতুল বানাও। আমি তোমার জন্য খেলনা বাটি বানিয়ে দিচ্ছি।“ বলল কুমোর কাকা।

খুব অনিচ্ছা সত্ত্বেও তিন্নি পুতুল বানাতে গেলো। এবার কিন্তু ফল অত টা খারাপ হল না। তিন্নি একটা পুতুল বানিয়ে রোদে শুকোতে দিল। খুব একটা খারাপ লাগলো না দেখতে।

টেঁপি বলল , “ কাল তোমার পুতুল তোমার কাছে পৌঁছে দিয়ে আসবো।“

তিন্নি খুশী মনে ফিরে এলো।

পরের দিন সকাল বেলায় একটা ঝুড়ি মাথায় করে টেঁপি আসলো আশ্রমে। তিন্নি দাওয়ায় বসে পা দোলাচ্ছিল। টেঁপিকে দেখে ছুটে এলো। টেঁপি মাথার থেকে ঝুড়ি নামিয়ে দেখালও । তিন্নির বানানো পুতুল টাকে পুড়িয়ে, রঙ করে তার চোখমুখ এঁকে , কাপড় পরিয়ে নিয়ে এসেছে। সঙ্গে এনেছে আরও একটা পুতুল আর এক সেট খেলনা বাটি।

তিন্নির খুশীর সীমা রইল না,” মামমাম দেখো ...... এই পুতুলটা আমি বানিয়েছি। “ চিৎকার করে আশ্রমের সবাইকে জড়ো করে ফেলল তিন্নি।

সবাই তিন্নির কাজের প্রশংসা করলো। টেঁপি শুকনো মুখে এক কোনে দাঁড়িয়ে ছিল। মামমাম চুপি চুপি ওর কাছে গিয়ে ওর হাতে দুটো নারকেল নাড়ু দিয়ে ওর কপালে একটা চুমু খেলো। তারপর কানে কানে বলল,” আমি জানি কতটা তিন্নি বানিয়েছে।“

টেঁপির মুখটা হাসিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠলো।



Rate this content
Log in