Mitali Chakraborty

Children Stories Inspirational

3  

Mitali Chakraborty

Children Stories Inspirational

সংবেদনশীল:-

সংবেদনশীল:-

2 mins
403


বারান্দার রেলিং ধরে দাড়িয়ে আছে তিথি। কিছুক্ষন আগেই উঠেছে ঘুম থেকে। ঘুম ভাঙ্গলে পরে গিয়ে দাঁড়িয়েছে বারান্দায়। তিথির এখন স্কুল বন্ধ, কোচিং সেন্টারও বন্ধ, কারণ সারা দেশে করোনা ভাইরাসের জেরে লক আউট চলছে, সবাই যে যার ঘরে থাকে। কেউ বেরোয় না ঘর থেকে, তিথিও বের হয়ে না। সারাদিন টিভি নয়ত ভিডিও গেম এসব নিয়েই কাটছে তার সময়। মাঝে মধ্যে মন ভালো করার জন্য একটু বারান্দায় গিয়ে দাড়ায়, উন্মুক্ত আকাশটার দিকে চেয়ে থাকে। তিথি নবম শ্রেণীর ছাত্রী। পড়ার চাপ একটু আছে বৈকি কিন্তু স্কুল আর কোচিং অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ বলে নিজের পড়াটা নিজেই করে নেয় সে। 

তিথি বারান্দা থেকেই দেখতে পেলো গেটের বাইরে একট মা কুকুর তার বাচ্চা গুলোকে নিয়ে ঘুরঘুর করছে এদিক ওদিক। বড়ো মায়া হলো তিথির। তিথি সব সময়ই একটু সংবেদনশীল অবলা জীব গুলোর জন্য। ভালো বুঝতে পারলো যে মা কুকুর টা খাবারের সন্ধানে ব্যস্ত। অন্য সময় মা কুকুরটার কপালে একটু আধটু খাবার জুটতো পাড়ার লুচি তরকারি খাবারের স্টল টা থেকে, কিন্তু করোনার আর লক আউটের প্রভাবে বর্তমানে খাবারের স্টল গুলো সব বন্ধ। রাস্তার কুকুরেরকে কে'ই বা ঘরে তোলে, আর এখন যখন এরকম ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব চলছে সেখানে তো এসব নেড়ি কুকুর গুলোকে কেউ বাড়ি ঘরেও ঢোকাবে না। ব্যাকুল হয়ে ওঠে তিথি। বুক টা মোচড় দিয়ে ওঠে তার। তিথি খুব ভালো করেই জানে যে তার বাবা মা কেউই পছন্দ করেন না কোনো পশু পাখি তাদের বাড়িতে ঢুকুক। সাতপাঁচ ভেবে তিথি মনে মনে কিছু স্থির করে।

***************

- কিরে তিথি, থালাতে করে কি নিয়ে যাচ্ছিস? আর কোথায় যাচ্ছিস? জানিস না বাড়ি থেকে বেরোনো যাবে না? করছিস টা কি??

- আহ্ মা! আমি এই যাবো আর এই আসবো।

- কিন্তু যাবি কোথায় সেটা তো বল? আর থালা তে কি এত ঢাকা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিস?

- আরে মা আমি এই যাচ্ছি আর এই ফিরে আসছি, আর দূরে না আমাদের গেটের কাছেই যাচ্ছি আমি। আর ফিরে এসে হাত আবার ভালো করে ধুয়ে নেবো। চিন্তা করছো কেনো??

এই বলে দ্রুতপায়ে থালাটা নিয়ে বেরিয়ে গেলো তিথি।

- আয়, আয়। এদিকে আয়। নে নে খা। আয়।

থালা থেকে একটু বিস্কুট, একটু চানাচুর, বাদাম ভাজা, ভাজা চিড়ে ছড়িয়ে দিল তিথি সেই মা কুকুরটার সামনে। মা কুকুরটা তার বাচ্চা গুলো সহ খেতে শুরু করলো। তিথি করুন চোখে দেখছে অবলা প্রাণী গুলো কে। এরা তো আর বোঝেনা লক ডাউন বা কারফিউ বা ভাইরাসের আতংক। এরা যে খাওয়ার পাচ্ছে না। তিথির বড্ডো শান্তি লাগল অবলা জীব গুলো কে খেতে দেখে। 



Rate this content
Log in