Aayan Das

Others

3  

Aayan Das

Others

পেডিগ্রি

পেডিগ্রি

5 mins
17.2K


মেয়েটি সামনে এসে দাঁড়ালো জাষ্ট একটা ব্রা আর প্যান্টি পরে।যদিও অজুহাতের মত তার সারা শরীরে একটা ট্রান্সপারেন্ট জ্যালজেলে পোশাক রয়েছে এবং ঐ আবরনটির জন্যই মেয়েটিকে আরো খোলামেলা লাগছে।মেয়েটি অর্ঘ্য র দিকে হাত বাড়ালো-'হাই!'

অর্ঘ্য ও প্রত্যুত্তরে হাত বাড়ালো-''হাই!''

''কামন্..লেত্স্ এনজয় দ্য নাইত..''

এবার অর্ঘ্য কেমন যেন থমকে গেল।

ব্যাঙ্ককের নাইট ক্লাবে তখন আলোর রোশনাই। উদ্দাম নাচানাচির সঙ্গেই চলছে মদের ফোয়ারা আর নারী পুরুষের প্রকাশ্য লিপলক,স্মুজিং।অর্ঘ্য দেখলো সুমন আর অভিজিৎ একই সঙ্গে দু-দুটো মেয়েকে ভাড়া করেছে।ওদের বস মিঃ সোলকার একটু আগেই এই নাইটক্লাব থেকে দুটি মেয়েকে ভাড়া করে এই মুহূর্তে স্যান্ডউইচ ম্যাসাজ নিচ্ছেন,যাওয়ার সময় ঈষৎ মাতাল অবস্থায় অর্ঘ্য র দিকে হাত নাড়িয়ে বলেছিলেন,''-ইউ ব্লাডি ইউসলেস..এখানে এসেও বউয়ের কথা ভাবছো? আজকের রাত টা জীবনে একবারই আসবে ইডিয়ট..এনজয় দ্য নাইট..পরে পস্তাবে শালা।''...

অর্ঘ্য একটা চাপা দীর্ঘশ্বাস ফেলেছিল।তার সমস্ত বন্ধুবান্ধব আজকের রাতটাকে অন্যরকম ভাবে ব্যবহার করছে।কিন্তু সে কেন পারছেনা!একটা অদৃশ্য বাঁধন,সে কিছুতেই বাঁধনটাকে খুলতে পারছেনা কেন?ভয়টা কি?একটা তো মাত্র রাত সে যদি এই মেয়েটির সঙ্গে শোয়, কী এমন মহাভারত অশুদ্ধ হবে?রুশা র প্রতি খুবই কী অন্যায় করা হবে?স্বামী হিসেবে সে কী সমস্ত দায়দায়িত্বই সঠিক ভাবে পালন করেনা?রুশা কে ভালবাসেনা?তার বিনিময়ে এই একটা মাত্র রাত..অন্য এক নারী র সঙ্গে লিপ্ত হওয়া..খুবই কী অন্যায়?

অর্ঘ্য অনেকটা হুইস্কি একসঙ্গে গাল্প করল।

অর্ঘ্য ফার্মা ইন্ডাষ্ট্রির একজন সেলসম্যান।কোম্পানির টার্গেট ফুলফিল করায় ইনসেন্টিভ হিসেবে তাদের মত আটজন পারফর্মার কে তিন রাত চারদিনের প্যাকেজে ব্যাঙ্কক- পাটায়া ঘোরানো হচ্ছে।

ব্যাঙ্ককে আসার পর শুধুই ধাক্কা খেতে হচ্ছে,-মানসিক ধাক্কা।এই দেশটি যেন চলছেই যৌন ব্যবসার উপর ভিত্তি করে।সকালে চায়ের সঙ্গে একটা করে কন্ডোম দিয়ে যায়।কোনো একজন ভদ্র পরিবারের থাই মেয়েকে(অথবা কোনো পুরুষ কে)তিনদিনের জন্য বুক করে তার বাড়িতেই আশ্রয় নেওয়া যায় এবং নির্দ্বিধায় তিনদিন তার সঙ্গে সহবাস করা যায়।সমস্ত ব্যাপারটার মধ্যে একটা বাড়ি বাড়ি গন্ধ থাকে।

আরো ধাক্কা খেতে হয় ন্যুড-শো গুলোতে গেলে।গতকাল অর্ঘ্যরা গিয়েছিল লাইভ সেক্স দেখতে।একটি সুদৃশ্য স্টেজে দুজন নারী পুরুষের প্রকাশ্য মিলন,সঙ্গে মিউজিক।সঙ্গমরত অবস্থায় নারীটিকে কোলে নিয়ে পুরুষটি নিচে নেমে এল।এবার একেবারে সামনের সারিতে বসা এক দর্শকের কোলে বসিয়ে সঙ্গম করতে লাগল।এই সুযোগে পুরুষ দর্শকেরা মেয়েটিকে যথেচ্ছভাবে মলেষ্ট করে নিল।

অর্ঘ্যর গা গুলিয়ে উঠেছিল।সে জন্ম রোমান্টিক।সে নারী কে রোমান্টিক দৃষ্টিতে দেখে।অর্ঘ্যর লেখালেখির অভ্যেস আছে।সেখানেও কোনো প্রেমের কবিতায় বা গল্পে নারী আসে রোমান্টিকতার প্রতিমূর্তি হয়ে।নারীর নগ্নতা কে সে বিন্দুমাত্র উপভোগ করেনা।অধিকাংশ মানুষ ই নগ্ন অবস্থায় অতি কুৎসিত।

''কাম জেন্টলম্যান''...মিঃ সোলকার তার ঘরে সবাইকে ডেকে পাঠিয়েছেন।-

''সি,উই অল আর ফ্যামিলিম্যান,উই হ্যাভ কিডস অলসো।উই লাভ আওয়ার ফ্যামিলি এক্সট্রিমলি।বাট উই উইল এনজয় হিয়ার দ্য সেক্স।এই থাই মেয়েগুলো সেক্স- কে একটা শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে।সেক্স উইথ এ থাই গার্ল ইজ দ্য লাইফটাইম এক্সপিরিয়েন্স।উই মাষ্ট এনজয় দ্যাট।ফর কামিং থ্রি ডেস উই উইল বি দ্য ম্যারেড ব্যাচেলর।''

এরপর ওরা ভিডিওতে স্যান্ডউইচ ম্যাসাজ দেখেছিল।দুটি মেয়ে- সারা দেহে চপচপে করে তেল মাখা-এই অবস্থায় একজন পুরুষকে মাঝখানে নিয়ে বিচিত্র রকমের রমন করছিল।

সেইসময় সবার সঙ্গে অর্ঘ্য ও হাসতে হাসতে মাথা নেড়েছিল।অথচ এখন মনে হচ্ছে কেউ যেন তাকে চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে রেখেছে।

''বাবা,আমার জন্য ঘড়ি কিনেছো?''

অর্ঘ্য হঠাৎ যেন শুনতে পেল তার সাত বছরের ছেলের গলা...''ঋক..তুই কোথায়?তুই এখানে কেন?''

''আমি এখানে বাবা.,ঠিক তোমার পিছনে।তুমি আমার ঘড়ি কিনেছো বাবা?''

''হে ম্যান..কাম অন..লেত্স্ এনজয় দ্য নাইত..সি, আই হ্যাভ নো তিথ..আই উইল সাক ইউ আনতিল ইউ স্তপ মি..ইউ এনজয় দ্য মোস্ত..''

মেয়েটি নিজের নকল দাঁত খুলে ফেলল।সাকিং এর সময় দাঁত লেগে যাওয়ায় পুরুষদের অসুবিধা হয় বলে থাই মেয়েরা অপারেশন করে দাঁত তুলে ফেলে।এই মেয়েটিও অপারেশন করেছে।

''আমি কিন্তু আসলে তোমার গজদাঁতেরই প্রেমে পড়েছিলাম অর্ঘ্য।তুমি যখন হাসতে তখন তোমার গোঁফের ফাঁক দিয়ে গজদাঁতটা বেরিয়ে পড়ত। আর জানো অর্ঘ্য,আমি কেমন যেন দুর্বল হয়ে পড়তাম অথচ, কিছুতেই তোমাকে বলতে পারিনি-''

অর্ঘ্য নিজের ঠোঁটে জিভ ছোঁয়ালো।তার ঠোঁটে যেন লেগে রয়েছে রুশা র ঠোঁটের কেয়াফুলের ভেজাভেজা গন্ধ-

'রুশা-আজকের রাতটা তুমি কী আমাকে একটু ছেড়ে দেবে?এই মেয়েটার সঙ্গে মিনিট চল্লিশ..সব জেনে তুমি কী আমাকে একটুও ক্ষমা করবেনা রুশা?''

অর্ঘ্য আরো একটা হুইস্কি নিল।

''স্যার..প্লিজ বাই ওয়ান হুইস্কি ফর মি,আই অ্যাম থার্স্তি-''

অর্ঘ্য ওয়েটার কে ইশারা করল মেয়েটিকে হুইস্কি দিতে..

''হোয়াত্স্ ইয়োর প্রবলেম ম্যান?''মেয়েটি একটানে তার উপরের জামাটি খুলে ফেলল।এখন তার পরনে শুধু সোনালি রঙের ঝালর দেওয়া ব্রা আর প্যান্টি।

''বৌদি-দাদা আমার গুরু,আমার আইডল।দাদা আমাকে লিখতে শিখিয়েছে,দাদা র মত ভাল লোক,অনেষ্ট লোক-আমি দেখিনি।''সৌভিক কথা বলে উঠল না?''না, না, না,প্লিজ আমাকে অতটা শ্রদ্ধা করিসনা। সৌভিক,আমি অতটা ভালমানুষ নই,আমি একটা সাধারন রক্তমাংস।এখনও নারী শরীরের প্রতি আমার তীব্র লোভ।ঐ দেখ,ঐ প্রস্টিটিউট টা কে আমি..''

''কাম্ অন্, লেতস দ্যান্স,লেত্স্ মুভ''--মেয়েটি ঘন হয়ে বসে অর্ঘ্য কে ফিসফিস করে বলল-

''আমার ছেলে একদমই অন্যরকম,ও পাঁচজনের থেকে একদমই আলাদা।ও কোনো খারাপ কাজ!নাঃ,করতেই পারবেনা-ওর নিজস্ব একটা ভ্যালুজ আছে।ওর নিজেকে নিয়ে একটা অহঙ্কার আছে।''...

'না, মা- বিশ্বাস করো -আমি এখন আর অতটা ভাল নেই,আমার ভিতরে একটা ডিসঅনেস্ট লোক,আমাকে বড্ড জ্বালাতন করে মা।মা..প্লিজ,আমাকে বাঁচাও;আমার বড় হেল্পলেস লাগছে মা!''

''আর ইউ এ সেইন্ত?দ্য ইন্দিয়ন সেইন্ত?''হুইস্কি শেষ করে মেয়েটি অর্ঘ্য কে জড়িয়ে ধরে তার কাঁধে মাথা রেখেছে।মেয়েটি অর্ঘ্য র কানের লতিতে ছোট্ট একটা কামড় দিল।''-ইউ আর ভেরি সেক্সি অ্যান্ড হ্যান্দসাম!আই লাইক দ্য ম্যান অফ দার্ক কমপ্লেক্সন-লেত্স্ মুভ..হ্যাভ সেক্স-''

''তুই ড্রিঙ্ক করে বাড়ি এসেছিস পিকলু?''

''না,মানে অফিসের পার্টি..ওখানে তো সবাই খায়-''

''কলকাতায় কারো বাড়িতে থাকতে পারতিস,তুই হাঁটতে পারছিস না,তোর পা টলছে!তুই জানিসনা- এখানে,এই পাড়ায় সবাই আমাকে কী চোখে দেখে,হেডমাষ্টার মশাই এর ছেলে হিসেবে তোর কী পজিশন!সেখানে এই সন্ধ্যেবেলায় নেশা করে..তোর নিজস্ব কোনো বোধ নেই?তোর নিজের কোন মতামত নেই?আমি কী কষ্ট করে চরম দারিদ্রের মধ্যে বড় হয়েছি,তোকে পড়াশুনো করিয়ে এই জায়গায় নিয়ে এসেছি।মনে রাখিস, -এ পারসন ক্যান আর্ন মানি বাট হি কান্ট আর্ন পেডিগ্রি,পেডিগ্রি ইস সামথিং ডিফারেন্ট-''

''আমার ভুল হয়ে গেছে বাবা-''

''ভুল..?হোয়োত্ দু ইউ মিন বাই ভুল?''

''সরি,প্লিজ ডোন্ট অ্যালাও মি টু টাচ ইউ,আই অ্যাম সাফারিং ফ্রম এ ডিসিস।প্লিজ লিভ মি অ্যালোন..''

''দেন প্লিজ গিভ সাম মানি,আই স্পেন্দ এ লঙ তাইম উইথ ইউ-''

অর্ঘ্য বেশ কিছু থাই মুদ্রা মেয়েটিকে দিয়ে দেয়।তার বিবেককে সে মারতে পারেনি।একটু হলেই সে হত্যা করে ফেলছিল তার পেডিগ্রি কে,সামান্য একটা নারী শরীরের জন্য।

অর্ঘ্য র হঠাৎ ভীষন হালকা লাগছে।ভীষন আনন্দ হচ্ছে।মেয়েটি যেতে গিয়েও আরেকবার পিছনে ফিরে তাকাল।অর্ঘ্য এগিয়ে গিয়ে মেয়েটিকে বুকে জড়িয়ে ধরল।সেই আলিঙ্গনে কোথাও কোনো কামনার উত্তেজনা নেই,রয়েছে এক নিবিড় বন্ধুতা ও সহমর্মিতা।

#positiveindia


Rate this content
Log in