STORYMIRROR

Apurba Kr Chakrabarty

Children Stories Horror Others

3  

Apurba Kr Chakrabarty

Children Stories Horror Others

নিশি রাতে কবরখানা

নিশি রাতে কবরখানা

8 mins
761

সে সময়ে গ্রাম বাংলায় আনন্দবিনোদন বলতে উৎসব পূজাপার্বন মেলা। কুড়মুনে বড় উৎসব শিবের গাজন ও মেলা।চৈত্র মাসে শেষ ক দিন মানুষের মনে আনন্দ রাখার জায়গা থাকে না।

এই তল্লাটে এক ডাকে কুড়মুনের গাজনের ধুমধাম সন্ন্যাসীদের নাচ,সং সাজা,ম্যাজিক শো, নাগোরদোল্লা, সার্কাস, আর রকমারি হাজার দোকানে মেলা প্রাঙ্গন জমজমাট থাকার কথা সবাই জানে।

সঙ্গে বড় আকর্ষণ ছিল তিনদিন ফ্রীতে কলকাতার নামকরা যাত্রাদলের যাত্রা পালা। গাজন তলায় বড় প্রাঙ্গনেই স্টেজ বানিয়ে এই যাত্রা পালা হতো।

দুর দুরান্তের আত্মীয় স্বজন কুটুম্ব এ সময়ে কুড়মুনে ভীড় জমাতেন। নমিতার মেজ ভায়ের এই সবে বিয়ে হয়েছিল। এবার বৌকে নিয়ে সে দিদির বাড়ি গাজনে বেড়াতে এসেছিল।

সেদিন ছিল ভক্ত প্রহ্লাদ যাত্রা পালা। দুপুর থেকেই চটবস্তা বিছিয়ে নমিতার বড় মেয়ে, বড় ছেলে ও মেজ মেয়ে জায়গা আগলে বসে, যাত্রা মঞ্চের সামনে।রাতে যাত্রা কালে মঞ্চে সামনে বসতে হলে, ফ্রীতে যাত্রা তাই দিন থেকেই চটবস্তা পেতে জায়গা দখল রাখতে হবে। এটাই নিয়ম।

ছয়ের দশকের মাঝামাঝি, সে সময়ে যাত্রা শুরু হতেই রাত বারোটা, তার বাজনার মহড়া,সখীদের নাচ, সে কত যে বাহানা ! অবশেষে যাত্রা শুরু। শেষ হতে হতে ভোড়ের আলো ফুটে যেত।

এদিন নমিতা তার ভাই, ওর বৌ,আর ছোট মেয়েকে নিয়ে, রাতে খাবার খেয়ে দশটার পর যাত্রপালা দেখতে গাজন তলার উদ্দেশ্যে রওনা দিল।বড় তিন জন ছেলে মেয়ে আগেই দুপুর থেকে ওখানেই আছে,চটবস্তা বিছিয়ে রাতে যাত্রাপালা দেখার জায়গা দখল করে, একজন করে বাড়ি থেকে খেয়ে গেছে পালা করে।

কুড়মুন বেশ বড় গ্রাম।গ্রামে ঈশান দিকে বামুন পাড়ায় নমিতাদের বাড়ি , সেখান থেকে গাজন তলা না হলেও অন্তত এক মাইল পথ। মাঝে প্রথমেই পরে মুসলমান পাড়া,তারপর বাগ্দী পাড়া ,ঘোষ পাড়া কোমর পাড়া হয়ে গাজন তলা।

তখন সবে সখীদের নাচ শেষ হয়েছে, আসল যাত্রা এবার শুরু হবে। বড় মেয়ের পেট কুনোনো ও বার্জ্য বেগ এতটাই অসহনীয় হয়ে ওঠে ,মা তো তাই নমিতা বাকী ছেলেমেয়েদের তাদের মামা মামীর দ্বায়িত্বে রেখে ভীড় ঠেলে বাড়ির দিকে রওনা দিল। যাত্রার আনন্দটাই তার মাটি।

হরিনাথ তার স্বামী, বড় ঘুমকাতুড়ে আর বেরসিক মানুষ, ঘুম নষ্ট করে যাত্রা দেখার বিলাসিতা তার কোনদিনই নেই।তাই তার কাছেই বাড়িতে এদিন নমিতা তার দেড় দুবছরের কচি ছেলে অপুকে রেখে এসেছে।

বড় মেয়ে মালাকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিল নমিতা, নিঝুম গ্রাম । বেশীরভাগ মানুষই তো যাত্রা পালার আনন্দ নিতে গাজন তলায় গেছে। বাগ্দীপাড়া পেরিয়ে মালার আর সহ্য হয় না।বাড়িতে তাদের নতুন বাথরুম টয়লেট করা হয়েছে। কিন্ত সে তো কত দুর! মাঝে মুসলমান পাড়া । আর পারছে না সে।

রাস্তার উত্তরে বামদিকে এক মস্ত বড় পুকুর। গাছপালা বন ঘন জঙ্গলময় উচু পাড়। এ দিকটা তাদের আসা যাওয়া প্রায় নেই। বাস স্ট্যান্ড, স্কুল, দোকান পাট সবই উল্টো দিকে। গ্রামের বৌ নমিতা, আর এ দিকটা মুসলমানদের বাস, তাই এ পাড়ায় তার যাওয়ার আসা ছিল না । গাজনের সময় যাওয়ার আসার পথে রাস্তা পরে, এই পর্যন্তই পরিচয়। সে তো বছরে বড় জোর দু চার দিন !দল বেঁধে যাওয়া আসা হাঁটার পথ হিসাবে।

মালার এমনই পরিস্থিতি, হয়ত রাস্তাতেই না হেগে ফেলে ! সেই আশঙ্কায় নমিতা মেয়েকে নিয়ে ঐ পুকুরে দক্ষিণ পাড়ে এক উচুমত ঢিবিতে নিয়ে যেই উঠেছে।এক তীব্র বিকট শব্দ, জীবনে এমন শব্দ সে শোনেনি ।মানুষ বা কোন জীব জন্তুর নয়,এযেন এক অন্য কর্কশ আর ভয়াল চিৎকার , বীভৎস তার আওয়াজ।

মালার শরীর থর থর করে কাঁপছে , মাকে সে জোড়ে জড়িয়ে ধরে। পায়খানার বেগ কোনদিকে হাওয়া।

নমিতা খুব সাহসী মেয়ে তারও যে বুক ধরফর শুরু হয়েছে । তীব্র এক অপার্থিব শব্দ যেন!সঙ্গে পুকুরের জলে যেন হাজার মানুষ এক সাথে ঝাঁপ দেওয়ার মত শব্দ। পুকুরের জল এমন তোলপাড় শুরু হল ,তা যেন ক্রমেই বাড়ছে ।পুকুর উপচে জল রাস্তায় উঠে পড়ছে আবার নেমে যাচ্ছে ,যেন ভরা কোটালের সমুদ্রের তীরে জোয়ার ভাটা।

নমিতা মেয়েকে নিয়ে পুকুরের উচু পাড় থেকে,ভয়ে পিছিয়ে পিছিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছে। কিন্ত এই পরিস্থিতিতে এই রাস্তায় এই জোয়ার ভাটার মত জলের তান্ডবে যাবে কী করে! ভয়ে ঈশ্বর ও গৃহ দেবী মা চামুন্ডার স্মরণ নিচ্ছিল।

হঠাৎই রাস্তার ডান পাশে ,পুকুরটির ঠিক উল্টো দিকে একটি বাড়ি ,ব্যবহার খুব হয় বলে মনে হয় না।কেমন যেন ভুতুরে ভুতুরে আলো আধাঁরে দেখে মনে হচ্ছিল নমিতার। ঐ বাড়ির দরজা খুলে কেউ যেন লন্ঠনের আলো নিয়ে বের হলেন।

বেশ বয়স্ক,গঠন লম্বা ,পরনে সাদা পাঞ্জাবী আর সাদা ধুতি লুঙ্গির মত করে পরা,মুখে একরাশ সাদা দাড়ি, গোঁফ ছোট করে ছাঁটা,চোখে ভারী চশমা,মাথায় টুপি।

তিনি এগিয়ে আসছেন নমিতার দিকেই! নমিতার হাত পা কেমন যেন ঠান্ডা হয়ে আসছে। বৃদ্ধ মানুষটি আরও কাছে এসেগেলেন । লন্ঠনের আলো তুলে নমিতার মুখের খুব কাছে এনে ভালো মত নিরক্ষন করে দেখে, বিস্মিত সুরে বললেন "এত গভীর রাতে এখানে তুমি কে? কেন এসেছ!"

নমিতা প্রায় কেঁদে ফেলে সবঘটনা বৃদ্ধকে খুলে বলল।

বৃদ্ধ বেশ আক্ষেপের সুরে বললেন "তোবা তোবা !ঐ ঢিবিতে তোমার মেয়ে হাগতে গেছিল!"

ভয়ার্ত্ত নমিতা ইসারায় হ্যাঁ জানাল।

বিস্মিত হতবাক বৃদ্ধ বললেন "ওটা যে কবর খানা জানো?"

নমিতার ভয়ে চমকে ওঠে বলে "আমার জানা ছিল না বিশ্বাস করুন!"

বিশের গড়ের জলে তান্ডব আর রাস্তায় জোয়ার ভাটা সমানে চলেছেই, সঙ্গে বিকট সেই শব্দ। বৃদ্ধ বললেন " তোমার বাড়ি কোথায় ?"

নমিতা বলল সামনে "বামুন পাড়ায়। "

বৃদ্ধ গম্ভীর গলায় বললেন" এই রাস্তা দিয়ে তুমি এখন যেতে পারবে না।আমার সঙ্গে এসো।"

নমিতার ভীষণ ভয় হচ্ছিল।এই বৃদ্ধকে তার ঠিক ভরসা হচ্ছিল না, কিন্ত উপায় কী! বৃদ্ধ ঐ ভগ্ন প্রায় প্রাচীর ঘেরা বাড়ির দিকে অগ্রসর হলেন।গৃহে প্রবেশ করলেন।

নিরূপায় নমিতা মেয়েকে জড়িয়ে ধরে মা চামুন্ডার নাম করতে করতে ঐ বাড়িতে প্রবেশ করল।বড় এলাকা জুড়ে বাড়ি।সাধারণ মানুষের বসবাসের উপযোগী বাড়ি বলে তো মনেই হয় না।বেশকিছু বড় বৃক্ষ আবার সঙ্গে কিছু ফুল গাছ। বৃদ্ধ তাদের হাঁটিয়ে হাঁটিয়ে অনেকটা পথ পার করিয়ে,বাড়ির ভিতরে ভিতরে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে বাড়ির উত্তর দিকের আর একটি দরজা খুলে বের হলেন ।

পুকুরটির দক্ষিণ থেকে উত্তর, পশ্চিম পাড় বরাবর পথ তারা অতিক্রম করে ফেলেছিল,বাড়ির ভিতরে ভিতরে গিয়ে। পুকুরের পশ্চিম পাড়ের পথে তখনও জলের যেন জোয়ার ভাটার তান্ডব চলছে,যা যেকোন বলবান মানুষকেই আছরে ফেলে পুকুরে জলে টেনে এনে ডুবিয়ে মারার পক্ষে যথেষ্ট। 

নমিতার এই গ্রীষ্মের রাতেও যেন তীব্র শীতের কাঁপুনী ধরেছে। ভয়ার্ত্ত  অসহায় ভাবে নমিতা , বৃদ্ধের দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে যায়।

বৃদ্ধ স্মিত হেসে বললেন "কোন চিন্তা নেই মা , আমি তোমার বাড়ি অবধি দিয়ে আসছি চল।"

নমিতা এবার বুঝল, এই বৃদ্ধ মহান ,যেন অন্তর্যামী ! আসলে নমিতার পুকুরটিকে পিছনে ফেলে হেঁটে তার বাড়ীর পথে যেতেও তীব্র ভয় করছিল। তাই বৃদ্ধর কাছে তার আবেদন ছিল, যদি তাকে তার বাড়ি অবধি সঙ্গে যান। কিন্ত তিনি নিজেই সেই প্রস্তাব দিলেন। 

বাড়ীর সামনে নমিতা ও মেয়ে পিছনে বৃদ্ধ, নমিতা প্রানপন দরজার কড়া নাড়তে লাগল। হরিনাথের ঘুম যতই গাড় হোক না কেন,এত শব্দে মৃত মানুষ জেগে উঠবে, তাই দ্রুত উঠে আসে ,কপাটের ফাঁক দিয়ে নমিতা ও বড় মেয়ে মালাকে দেখে তৎক্ষণাৎ দরজা খুলে দিল। বিস্ময়ে বলল" কি ব্যাপার যাত্রা না দেখে-- "

নমিতা ভয়ে আবেগ বলল"সে পরে বলব , এই পিতৃতুল্য ভদ্রলোক-" বলে পিছন ফিরে তাকাতেই দেখল কেউ নেই। অবাক বিষ্ময়ে বলে "কোথায় গেলেন! "

হরিনাথ বলে "কে!"

তাড়াতাড়ি বাড়ীতে ঢুকেই এবার নমিতা দরজা বন্ধ করে ভয়ে হাঁপাতে লাগল। মায়া কেমন যেন ঘোরে। কোন কথাই বলতে পারছিল না ,কেবল ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে ছিল।

রাতে সব কথা নমিতা সেদিন হরিনাথকে আগাগোড়া বললে, হরিনাথ চমকে ওঠে। ঐ কবরখানার আর পুকুরের নিয়ে অনেক অলৌকিক ভুতুরে কান্ড সে গ্রামের মানুষ তাই জানে।তবে তা সত্য না গুজব তার মনে প্রশ্ন ছিল। তার ধারনা আজ স্পষ্ট হল, তবে এই নিয়ে রাতে আর কথা বাড়াতে চাইল না।এতে নমিতার ও মালার আরও ভয় হবে, হয়ত সমস্যা বাড়বে।

 পরদিন সকালে নমিতাকে কিছু না বলেই হরিনাথ গেল বিশেরগড়ের রাস্তার পশ্চিম দিকে অবস্থিত এ গ্রামের একমাত্র মসজিদে ।যেটা নমিতা ভুতুরে বাড়ি ভেবেছিল।

সে যুগে গ্রামে পাকা বাড়ি খৢঁজে বের করাই সমস্যা হত। এ গ্রামে সেসময়ে বিশ ত্রিশ ঘর মুসলমানদের বাস। বেশীরভাগ অসচ্ছল,দুচার ঘরের অবস্থা ছিল সচ্ছল। গ্রামের মসজিদ বাড়িটি আয়তনে অনেক বড় ,ভিতরে গাছ গাছরায় ও নির্জনতা নীরবতাময় যেন বিছিন্ন এক বাড়ি ।এ বাড়ীতে রাতে কেন দিনে যেতও কেমন যেন গা ছমছম করে । তার উপর সম্মুখেই সেই পুকুর সহ প্রকান্ড কবরখানা, উচুপাড় ও বন জঙ্গলের ভরা এক নির্জন প্রান্তর।নমিতার মনে হয় ,ভুতুরে বাড়ি বিশেষত রাতে সেই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ভাবাই স্বাভাবিক।

হরিনাথের মনে হয়েছিল ঐ মসজিদের মৌলবী রাতের বিপদগ্রস্ত নমিতাকে ও কন্যা মালাকে যে মহানুভবতা দেখিয়ে রক্ষা করেছেন। তাকে কৃতজ্ঞতা ও সম্মান জানানো উচিত ।

তিনি ব্রাহ্মণ সন্তান,তাই পাশেই মুসলমান পাড়া হলেও কোন দিন মসজিদে ঢোকে নেই। মৌলবীকেও চেনে না। তাই একটু কিন্ত কিন্ত মনে সকল তখন আট কী নটা হবে,মসজিদ বাড়ীর পুবের দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলেন, ভিতর থেকে দরজা খোলাই ছিল।

বড়ই নির্জন নিঃশব্দ দশ বারো কাঠার উপর বড় প্রাঙ্গন কিছু বড় গাছ তার পর ফুলের বাগান। বাড়ীর পশ্চিম দিকে , মাটির  দেওয়াল আর খড়ের ছাউনি দেওয়া মসজিদের কক্ষ, আজান ও প্রার্থনার স্থল।

এক বয়স্ক মানুষ ফুল গাছ পরিচর্যা করছিলেন।হালকা দাড়ি, কম উচ্চতা, মাঝারি বর্ন, হরিনাথ তাকে গিয়ে প্রশ্ন করল" মৌলবী সাহেব সাথে একটু দেখা করতে চাই, উনাকে একটু পাবো---"

কথা শেষ হবার আগেই ভদ্রলোক বললেন " আমিই তো মৌলবী! "

হরিনাথ বলল" ও তাহলে সেই ভদ্রলোক যিনি কাল রাতে এই বাড়ী থেকে আলো হাতে বেরিয়ে আমার স্ত্রী কন্যাকে বড় বিপদের হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন!"

বিস্মিত মৌলবী বলেন "কাল রাতে? কী যে বলছেন আপনি ! এ গৃহে আমি ছাড়া তো আর কেউ থাকেন না। "

হরিনাথ মাথা যেন কাজ করছে না বলে "তবে যে এই বাড়ি থেকেই এক বৃদ্ধ,লম্বা,সাদা দাড়ি, চোখে ভারী চশমা ,পরনে পাঞ্জাবী পরে, রাত তখন প্রায় একটা, কে বের হয়েছিলেন?"

মৌলবী আকাশ থেকে পরে ।"এমন তো কেউ এখানে আছেন বলে আমি অন্তত জানি না। কী ব্যাপার খুলে বলুন না! "

হরিনাথ সবটাই আগাগোড়া যেমন টা নমিতা বলেছিল বলল। মৌলবী চোখ কপালে তুলে বলে "কী ভয়ঙ্কর সাংঘাতিক! উনি নিশ্চয় কোন মহান ব্যক্তি,আল্লাহ বা ঈশ্বরের দুত এটা নিশ্চিত। " তারপর বললেন "চলুন ঐ উত্তর দিকে দরজা, যেদিকে উনি আপনার স্ত্রী আর কন্যাকে পথ দেখিয়ে রক্ষা করেছিলেন।"

উত্তরের দরজা নিকট গিয়ে হরিনাথের তো বাকরুদ্ধ অবস্থা। চাবি দেওয়া দীর্ঘদিনের অব্যবহারে অর্দ্ধ ভগ্ন দরজার করুন দশা,মাকরসার ঘন জালে আর ঝুলে নোংরা জরাজীর্ন অবস্থা ! গতরাতে এ দরজা খোলার কোন নমুনা নিদর্শন দুরে থাক, এক কথায় তা অসম্ভব মনে হয়।

মৌলবী বললেন "আপনি তো বললেন সামনের রাস্তায় পুকুরের জলে জোয়ার ভাটা খেলছিল, আজ কী তার কিছু লক্ষন দেখতে পারছেন! কোথায় জল!কোথায় কাদা! "

হরিনাথ উত্তেজনার বশে পূর্ব মুখী দরজা দিয়ে যখন মসজিদ বাড়িতে প্রবেশ করে এত খেয়াল করেন নি। বুঝল যা কিছু গত রাতে ঘটেছে সবটাই ভৌতিক ও অলৌকিক। কিন্ত নমিতার একার ভ্রম কী করে বলা যায়! একা তো নয়, সঙ্গে তার মেয়ে সাক্ষী।

মৌলবী এবার ভুল ভেঙ্গে দিয়ে বললেন, "এই তো মাস তিনেক হল, বাগ্দী পাড়া একটা ছেলে এই পুকুরেই জলে ভুবে মরেছে, সকালে ভেসে ওঠে। সে নাকি রাতে ঘরেতেই ঘুমোচ্ছিল, কখন ঘর থেকে বেড়িয়ে হয়ত কাছাকাছি ভেবে অলসতায় কবরস্থলে কিছু অনাচার করেছিল ।আজকালকার ছেলে সব পুরোন কথার বিশ্বাসে মুল্যই দেয় না।"

হরিনাথ মৌলবীকে নমস্কার জানিয়ে বাড়ি ফিরে এল। নমিতাকে সব কথা বললেন না , হয়ত ভয় পাবে। শুধু বললেন "যিনি গতরাতে তোমাদের রক্ষা করেছিলেন তিনি যেই হোন , তাঁকে শ্রদ্ধাভরে প্রনাম করো। তিনি আর  সাধারণ মানুষ নন,ঈশ্বরের দুত।



ଏହି ବିଷୟବସ୍ତୁକୁ ମୂଲ୍ୟାଙ୍କନ କରନ୍ତୁ
ଲଗ୍ ଇନ୍