Maheshwar Maji

Others

0  

Maheshwar Maji

Others

ভার্জিন

ভার্জিন

8 mins
1.3K


মানস আইটি সেক্টরে কর্মরত।বিজ্ঞানের একজন ব্লিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট হয়েও সাহিত্যের প্রতি তার অগাধ টান ছিল।সতেরো বছর বয়েসে প্রথম গল্প ছেপেছিল "আনন্দমেলা" পত্রিকায়।অনেকের কাছ থেকে শুভেচ্ছা বার্তা পেয়ে সাহিত্যকে আরো বেশি কাছে টেনে নেয়।

মানসের বর্তমান বয়স তিরিশ বছর।নয়নার সঙ্গে তার আলাপ দুবছর আগে একজন ফ্রেন্ডের বার্থডে পার্টিতে হয়েছিল।সেই থেকে যোগাযোগ শুরু।আজ দুজনের মধ্যে একটা গভীর সম্পর্কের সৃষ্টি হয়ে গেছে। 

নয়না একটা প্রাইভেট ইস্কুলে পড়ানোর পাশাপাশি গানও গায়।একটা অর্কেস্ট্রা টিমে মেন সিঙ্গার।

মানসের প্রথম উপন্যাস দিন কয়েক আগেয় প্রকাশ পেল।"অন্ধকারের বাতি"।বেরোনোর সাতদিনের মাথায় প্রথম সংস্করণের পাঁচশো কপি হাতে,হাতে শেষ।দ্বিতীয় সংস্করণের কাজ পূর্ণ উদ্যোমে চলছে।এবার সংখ্যাটা দু হাজার কপি করা হচ্ছে।কারণ আটশোর মত প্রি বুকিং হয়ে আছে।তার মানে দিন সাতেকের মধ্যেয় দেড় হাজার কপি শেষ!

স্বাভাবিক ভাবেই পাঠক মহলে একটা আলোড়ন সৃষ্টি হল।দুদিন আগে পর্যন্ত যার নাম খুব বেশি সংখ্যক মানুষ জানতেন না।আজ তার নাম মুখে,মুখে ফিরছে।আসলে এর প্রধান কারণ হল।উপন্যাসের মূল ঘটনা।

উপন্যাসের নায়িকা পেশায় একজন বেশ্যা।সারা উপন্যাস জুড়ে তার সুখ,দুঃখের নিপূণ ছবি ফুটে উঠেছে। মানস ভৌমিকের কলমের ডগায়।একদম রুপোলী পর্দায় ফুটে ওঠা কোন ছবির মত সাবলীল বর্ণণা।ঠিক যেন কোন সিনেমা!

নায়িকার প্রতিটি শ্বাসবায়ূ যেন কথা বলছে।এত সূক্ষ্মতা তার কলমে।

আজ দুদিন হল মানস নয়নাকে ফোনে পাচ্ছে না। সেইজন্য এমন এক আনন্দঘন দিনেও তার মনটা মেঘাচ্ছন্ন হয়ে আছে।তবে কী নয়নার কোন সিরিয়াস শরীর খারাপ?

সেটা হলেও কম সে কম একবার তাকে ফোন করে জানাত।

মানস তাই আজ আর থাকতে পারল না। তাছাড়া আজ তেমন কোন প্রোগ্রামও নেই।দুটো দিন তার নিশ্বাস ফেলারও সময় ছিল না। কাজে অবশ্য ছুটি একদিনও করেনি।যা কিছু অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিল।সব ছুটির পর।

মানস নয়নাদের ফ্ল্যাটের সামনে এসে দেখল দরজায় তালা ঝোলান।একটু অবাক হল।তাহলে কী কোথাও বেড়াতে গেছে?

হতে পারে।পূজোর সময় প্রতি বছর তার মা,বাবা কোথাও না কোথাও ঘুরতে যান।কিন্তু সেকথা নয়না ফোন করে তাকে কেন জানালো না?

নামতে গিয়ে সিঁড়িতে পাশের প্ল্যাটের ঘোষবাবুর সাথে দেখা হয়ে গেল।মানসকে তিনি ভালভাবে চেনেন।তার লেখার একজন মস্তবড় পাঠক।দেখা হতেই তিনি হাতজোড় করে মানসের উদ্দেশ্যে বলে উঠলেন,নমস্কার মানসবাবু।আপনি তো মশাই প্রথম উপন্যাসেয় একেবারে তোলপাড় শুরু করে দিলেন!..ভাবনার প্রসংশা না করে পারছি না। তা হঠাৎ এদিকে?

মানস কিন্তু করে বলে উঠল, না মানে।একটু নয়নার সাথে দেখা করতে এসেছিলাম।

---ওনার বাবা,মা সকলে মিলে তো গতকাল বিদেশ ট্রিপে বেরিয়েছেন।নয়নার বিয়ের জন্য মনে হয় পাত্রকেও দেখতে গেছেন।কী ডাক্তারী,ফাক্তারী পড়ে নাকি বিদেশে।পাত্রের মা,বাবাও সেদিন দেখা করতে এসেছিলেন।অল্পমত কথাবার্তা কানে এল।দু,চারদিনে এসে যাবে মনে হয়।কেন?আপনাকে নয়না কিছু জানায়নি বুঝি?

মানস উত্তরে কী বলবে বুঝে উঠতে পারল না। শেষে বলে উঠল,না মানে আমি ভেবেছিলাম আগামীকাল হয়ত বেরোবে।তাই এসেছিলাম।আমারি শুনতে ভুল হয়েছিল।আচ্ছা।নমস্কার।আসি।

---আচ্ছা ।আসুন।

ঘোষবাবুর মুখ থেকে নয়নার বিয়ের ব্যাপারে কথাটা শোনার পর থেকেই মানসের মাথাটা এক নাগাড়ে ভো ভো করছে।বুকের মধ্যে একটা শুকনো হাওয়া ঘুরে বেড়াচ্ছে।দুচোখে মেঘ জমতে শুরু করল।

একটু স্থির হয়ে দাড়ালেই হয়ত দুচোখে বৃষ্টি নামবে।বড় কষ্টে মানস নিজেকে সামলে ফিরছে।প্রতি মিনিটে নয়নাকে ফোন করছে।পাচ্ছে না। ওদিকে কোন আওয়াজ নেই।

গত দুদিনে এমন কী ঘটে গেল?যার কারণে সে এতদূরে সরে গেল!

মানস ভেবেও কোন কিনারা পাচ্ছে না। হঠাত করে মনে পড়ল।ফেসবুকটা একবার খুলে দেখা যাক।

নয়নার প্রোফাইলে ঢুকে মানসের চোখদুটো স্থির হয়ে গেল।

পর,পর কয়েকটা পোষ্ট দেখে।

নয়নার সাথে অন্য একজন সুদর্শণ পুরুষ, বিদেশের কোন বীচে সম্ভবত উদ্দাম ঢেউ নিচ্ছে।জড়াজড়ি অবস্থায়।

ছবিগুলো দেখে মানসের দুচোখে ক ফোটা অশ্রু নিঃশব্দে ঝরে পড়ল।

সারা রাত চিন্তায় মানস ঠিকমত ঘুমোতে পারেনি।ভোরের দিকে চোখটা অল্পমত লেগেছিল।তখনি তার মোবাইলের হোয়াটস আপে একটা মেসেজ ঢুকল।

নোটিফিকশনের আওয়াজ পেয়ে ঘুমটা ভেঙে গেল।

নয়নাকে রাতে ইনবক্স করে পায়নি।ওদিক থেকে কোন উত্তর আসেনি।

এতক্ষণে একটা মেসেজ এবং ভিডিও পাঠিয়েছে।হোয়াটস আপে।

ভিডিওটা যে তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই মানস সেটা এড়িয়ে লেখাটা পড়ল।

"তুমি একজন চিটার মানস।আমার বিশ্বাসকে তুমি খুন করেছ।তাই আমি তোমার সাথে কোনরকম আর সম্পর্ক রাখতে চাই না। মা,বাবার পছন্দ করা পাত্রকেই বিয়ে করব বলে ঠিক করেছি।আনন্দ খুব ভাল ছেলে।একজন ডাক্তার।তাকে আমার সব কথায় অকপটে বলে দিয়েছি।ওর দিক থেকে কোন আপত্তি নেয়।ওর মন খুব বড়।আই লাভ হিম।"

মানস এরপর ভিডিওটা খুলল।এবিপি স্টুডিওতে তারই ইন্টারভিউ ভিডিও ক্লিপ।তিন দিন আগে তাকে ডাকা হয়েছিল।উপন্যাসের ব্যাপারে কিছু কথা আলোচনা করার জন্য ।সেখানে তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল,আচ্ছা মানসবাবু।আপনি একজন বেশ্যার জীবন যন্ত্রণাকে এত নিখূঁতভাবে ফুটিয়ে তুললেন কী করে?আপনার কী কোন বেশ্যার সাথে গভীর কোন সম্পর্ক জড়িয়ে আছে?

মানস উত্তরে অল্প হেসে বলেছিল,অবশ্যই।আমি তাদের সাথে মিশেছি।তাদের জীবন সম্পর্কে যথেষ্ট স্টাডি করেছি।সেই কারণেই তো এত নিপুনভাবে সবকিছু চিত্রায়িত করতে সক্ষম হয়েছি।"

এখানেই ভিডিওটি শেষ।যদিও ইন্টারভিউটা এর পরেও আধঘন্টা চলেছিল।

মানসের কাছে এতক্ষণে পুরো ব্যাপারটা জলের মত পরিস্কার হয়ে গেল।

তার যে বেশ্যার কোঠিতে প্রায় আনাগোনা।এই কথাটা শুনেই নয়নার মনে তার সম্পর্কে বাজে ধারণা জন্ম নিয়েছে।

মানস দেখল।অনেক দেরি হয়ে গেছে।নয়নাকে তার পুরো কথা বললেও বিশ্বাস করানো যাবে না। কেন মিশেছিল?কোথায় মিশেছিল?...সে অনেক কথা।এত কথা শোনার ধৈর্য আর নয়নার মধ্যে নেয়।মানস চোখদুটো শেষবারের মত মুছে নিজেকে সংযত করে নিল।

নয়না লক্ষ্য করছে। বিয়ের পর থেকেই আনন্দ যেন একটু,একটু পাল্টে যাচ্ছে। বিয়ের আগে দিন পর্যন্ত তার সাথে যে অন্তরঙ্গভাবে কথা বলত।বিয়ের পর দিন থেকেই সেটা কেমন ফিকে হতে লাগল।

যদিও এখন আনন্দর কাজ বেড়েছে।বিদেশ থেকে এসেই কোলকাতা মেডিক্যাল কলেজে প্রফেসার রূপে জয়েন করেছে।তাছাড়া নিজস্ব একটা চেম্বারও খুলেছে।সেখানে রোগীর প্রচন্ড ভীড়।

তাই আনন্দের এই অমনোযোগটাকে নয়না এতটা গ্রাহ্য করল না।

কিন্তু মাস তিনেক যাওয়ার পর নয়না আর চুপ করে থাকতে পারল না।

রাতের বেলায় আনন্দকে জড়িয়ে ধরে চোখের উপর চোখ মেলে বলে উঠল,কী হয়েছে বলো তো তোমর?

আমাকে রোজ,রোজ এভাবে এড়িয়ে যাচ্ছ কেন?এক মাস হয়ে গেল।শারীরিক সম্পর্কেও আসছ না!..পুরনো হয়ে গেলাম নাকি?

আনন্দ দাঁতগুলো একসাথে বের করে হেসে বলে উঠল,তুমি নতুন কবে ছিলে নয়না?

কথাটা শুনে নয়নার বুকে একটা তির এসে বিঁধল যেন।অনেক কষ্টে যন্ত্রণা বাঁচিয়ে বলে উঠল,মানে?কী বলতে চাইছ তুমি?

----একদম সোজা এবং নিখাদ সত্যি কথা।তুমি অনেকদিন আগেই কুমারীত্বকে বিসর্জণ দিয়ে এসেছ নয়না।আমি একজন গাইনো স্পেশালিস্ট।তাই ফাঁকি দিতে চাইলেও পারবে না।তুমি সত্যি করে বলো তো মানসের সাথে কতবার মিলিত হয়েছিলে?

নয়নার কান দুটো গরম হয়ে উঠল।বুকের ভেতরটা খাঁ খাঁ করছে।এতবড় অপমান!

নয়না চুপ করে গেল।

আনন্দ বলতে শুরু করল,দিনে কম করেও পঞ্চাশ,ষাটটা করে ভেজিনা চেক করি।একবার টাচ করেই বলে দিতে পারি কোন মেয়েটা কতদিন সম্পর্কে রয়েছে।সফ্টনেশ আর হার্ডনেশ দেখে সেই আন্দাজটা হয়ে গেছে।আরো কিছু আইডেন্টিফাই আছে।এতদিনে সেসব আর বলে তোমার অপমান বাড়াতে চাই না।

তুমি আমায় বিয়ের আগে মিথ্যে বলেছিলে নয়না।মানসের সাথে তোমার কোনরকম শারীরিক সম্পর্ক হয়নি।আমি বলছি হয়েছে।সেটা একবার,দুবার নয়।কম করেও একশো বারের উপরে।আমি সেটা প্রথম রাতেয় টের পেয়েছিলাম।কিছু বলিনি।তুমি আমার সাথে বিশ্বাসঘাতক করেছ নয়না।তাই সেই ভালবাসাটা আর দিতে পারব না।যেটা আগে পেয়েছিলে।শুধুমাত্র স্ত্রীরূপে তুমি সাজান থাকবে আমার বাঙলোর শোকেসে।কখনো অধিকার চাইতে আসো না। সে যোগ্যতা তুমি হারিয়েছ।

এরপর আর তাদের মধ্যে সেই রাতে বিশেষ কথাবার্তা হল না।আনন্দ হাল্কা আলোটা জ্বেলে পাশ ফিরে শুয়ে পড়ল।

ঘুম এল না নয়নার দুচোখে।

নয়নার দুচোখ ভরে এল।হ্যাঁ সে কুমারীত্ব অনেকদিন আগেই ত্যাগ করেছে।

তখন সে হোস্টেলে থেকে পড়াশুনো করত।তার রুমে আরো তিনজন বান্ধবী ছিল।তারাই তাকে প্রথম পর্ণ দেখিয়ে ছিল।তার শরীরেও যৌবন আগুন লাগিয়ে ছিল।সেই বান্ধবীদেরই একজন তাকে স্বমেহন পদ্ধতিটা শিখিয়ে ছিল।একটা ভাইব্রেটার আর কৃত্রিম পুরুষ লিঙ্গের সাহায্যে সে অনেকবার গোপন যৌনসুখের আস্বাদ নিয়েছে।তবে আজ পর্যন্ত কোন পুরুষের সাথে শরীর বিনিময় করেনি।

স্বমেহনের ফলে তার যৌনাঙ্গে হয়ত কিছুটা পরিবর্তণ এসেছে।সেটা,আনন্দর গাইনো চোখে অনায়াসে ধরা পড়েছে।

এ কেমন রীতি?একজন মেয়ের যৌনাঙ্গের আকৃতি নির্ধারণ করবে তার চরিত্র!

স্বমেহনে যদি কুমারীত্বের মৃত্যু ঘটে তাহলে পৃথিবীর কোন পুরুষই বিয়ের আগে কুমার নয়।তারা আত্মসুখ গ্রহণের জন্য যেকোন সময় হস্তমৈথুন ক্রিয়া করতে পারে।সেটা তাদের অধিকার।সে নিয়ে কারু কোন অভিযোগ নেই।যত দোষ একটা মেয়ের বেলায়?

মেয়েরা কী কুমারীত্ব ধরে রাখার ঠিকে নিয়েছে?

তাদের বুঝি পঁচিশ বছর পর্যন্ত কোন কামেচ্ছা থাকতে পারে না?

যত্তসব বাজে কানুন।নয়নার মন এবার বিদ্রোহ করে উঠল।

সে ঠিক বুঝে নিয়েছে।এ সম্পর্ককে বয়ে নিয়ে যাওয়ার থেকে মৃত্যু শ্রেয়।আর সে মরতে পারবে না।এত দূর্বল সে নয়।ভুল তো সে কিছু করেনি।তাহলে কেন সে নিজেকে শাস্তি দেবে?

তারপরের দিন সকালে ব্রেকফাস্ট টেবিলে নয়নাই প্রথম ডিভোর্সের কথাটা তুলল।

আনন্দ টোস্টে কামড় বসিয়ে মুখ তাবলে বলে উঠল,সিদ্ধান্তটা ভেবে,চিন্তে নিয়েছ তো?কারণ আমি কিন্তু তোমাকে নিজের স্ত্রীর আসন থেকে সরাতে চাইছি না। খাবে,দাবে পুতুলের মত পড়ে থাকবে।কখনো মনে হলে স্বাদ বদলানোর জন্য কাছে টেনে নেব।এর বেশি কিছু আশা করো না।

নয়না দাঁত চেপে বলে উঠল,হ্যাঁ আমি ভেবেই তোমাকে বলছি।আর তুমি যেটা সন্দেহ করছ।তা আমি করব না।এতে তুমিও মুক্ত।আর আমাকেও প্রতিদিন অল্প করে মরতে হবে না।

আনন্দ টিস্যু পেপারে মুখ মুছে বলে উঠল,ওকে।এগ্রি।

মানস কলিং বেলের আওয়াজ পেয়ে ল্যাপটপটা কোল থেকে সরিয়ে বিছানায় রাখল।তারপর দরজাটা খুলল।

ইদানিং চোখে একটা চশমা পরতে হচ্ছে।নজরটা গন্ডগোল করছিল।গোফ,দাড়িগুলোও পাল্লা দিয়ে বেড়েছে।একটা উদাস জড়তা তার সমগ্র সত্ত্বাকে ঢেকে রাখলেও বিরহ যন্ত্রণা তার লেখনীকে আরো বেশি পরিপক্ক করে তুলেছে।

চোখের সামনে চেনা মুখখানা দেখে মানস প্রথমটায় ভূত দেখার মত চমকে উঠল।পর মুহূর্তেয় নিজেকে সংযমের বেড়া দিয়ে বেঁধে শান্ত গলায় বলে উঠল,এসো। ভেতরে এসো নয়না।বাইরে দাড়িয়ে কেন?

নয়নার দুচোখে রাগ,অভিমান,ক্রোধ বা অভিযোগ কিচ্ছুটি নেই।একদম শান্ত দিঘীর মত নিস্তরঙ্গ চাউনি।হাতদুটো জড়ো করে মানসের উদ্দেশ্যে বলে উঠল,আমাকে ক্ষমা করে দিও মানস।আয়্যাম সোরি।

মানস ব্যস্ত হয়ে বলে উঠল, একি করছ নয়না?...কার কাছে..কিসের জন্য ক্ষমা চাইছ তুমি?এসো। ভেতরে এসো বলছি।

---সরি মানস।এখন আমার অনেক কাজ।বসার সময় নেই। অন্য কোনদিন আসব।আমি শুধু তোমার কাছে ক্ষমা চাইতেই এসেছি।না হলে যে কোন কাজেই মন বসছিল না। সব সময় মনে হচ্ছিল।কী যেন একটা ভুলে গেছি।

মানসের শত বাঁধাকে উপেক্ষা করেই নয়না বেরিয়ে পড়ল।

দুদিন পর মানসকে রাতের দিকে ফোন করল। নয়না বলল,আগামীকাল এসো।সকালের দিকে।ঠিকানাটা বলছি।লিখো নাও।আর হ্যাঁ ।আসার সময় ওসব দাড়ি,দুড়ি পরিস্কার করে আসবে।এই ক মাসে তুমি আমূল পাল্টে গেছ মানস।শরীরের প্রতি খুবই অবহেলা করেছ।

মানসের গলাটা ধরে এল।তাই বেশিকিছু উচ্চারণ করার শক্তি হল না। শুধু বলল,আসবো।

মানস বলে উঠল,দেখো নয়না।জীবনটা একজনকে দিয়ে শেষ হয় না। আমি তো আছি।আমি তোমার সব দায়িত্ব নিতে রাজি আছি।

নয়না লিকারে দুধ মিশিয়ে অল্প নেড়ে কাপটা মানসের হাতে ধরিয়ে বলে উঠল,তার কোন দরকার হবে না মানস।বন্ধু ছিলে।তাই থেকো।স্বামী হতে এসো না। গতকালই প্রিটেষ্টে ধরা পড়ল।আমি মা হতে চলেছি।আমার এই সন্তানের বাবা রূপে, না আনন্দকে টানতে চাই, না তোমাকে।আমার সন্তান।আমিই তাকে মানুষ করব।সিঙ্গেল মাদারের পরিচয় নিয়ে।

মানস জোর করে বলে উঠল,কিন্তু আমি তোমাকে কিছুতেই একা ছাড়তে পারব না।আমি তোমাকে সাহায্য করতে চাই নয়না।বিকজ আই লাভ ইউ।তুমি কী আমার ভালবাসাকে এখনো চিনলে না নয়না?

-----চিনেছি বলেই তো।তোমাকে আমি নিজের জীবনের সাথে জড়াতে চাইছি না মানস।এই লড়াইটা আমার একা।চাইলে লিভ ইনে থাকতে পারো।আমার তাতে আপত্তি নেই।তাতে তোমারো কোন দায়বদ্ধতা থাকবে না।আর আমিও নিজেকে অপরাধী ভাবব না।

মানস সাথে,সাথেয় বলে উঠল,ব্যাস।এইটুকুই?আচ্ছা।তুমি যখন চাইছ,তাই হবে।তবু আমি তোমায় একা ছাড়তে পারব না। এখন তোমার একটা সাপোর্ট ভীষণ দরকার।

---জানি।তবে,না থাকলেও আমি হারব না মানস।

----সেটা আমিও জানি।কতদিন তোমায় বুকে জড়িয়ে ধরিনি নয়না।এসো..এসো।আমার বুকে।একটুখানি সোহাগের ফুল দিয়ে তোমার শূণ্য হৃদয়কে ভরিয়ে দিই।

নয়না হঠাৎ বলে উঠল,আচ্ছা মানস।তোমার ঘেন্না ধরেনি আমার শরীরটার প্রতি?...আনন্দ আমার সাথে শুয়েছে জেনেও তুমি আমাকে প্রেমিকার মত আগলে ধরে রাখতে চাইছ?তুমি কী পাগল?

----যদি ভাবো তাই।তবে আমি জানি।তুমি শুধু আমার নয়না।যার দেহে কোন কালিই দাগ টানতে পারে না।শরীরে আছড়ের দাগ তো যেকোন হিংস্র পশুই দিতে পারে।তাবলে কী মন অপবিত্র হয়? হয় না।

মানস দুহাতের শক্ত আলিঙ্গনে নয়নাকে ধরে ফেলল।এই উষ্ণতা...এই আবেগ...এই অনুভবটাই সত্যি।যেটা কোন খদ্দের পুরুষ বলো আর কৃত্রিম যন্ত্র।কেউ কোনদিনও কোন নারীকে দিতে পারে না।এরই নাম প্রেম।


Rate this content
Log in