ঠোঙা আমি ঠোঙা
ঠোঙা আমি ঠোঙা


আজ আমি পথের ধারে কালবৈশাখীর ঝড়ে শীতের কনকনে রুক্ষ বাতাসে, উড়ে চলেছি এক রাস্তা থেকে অন্য রাস্তায়, এক পল্লী থেকে অন্য পল্লীতে ,এক শহর থেকে অন্য শহরে, কত ঋতু আসে যায় সব দেখি আমি, মনে পড়ে কি আমাকে?
রান্নাঘরের গৃহিণীর আবদার মেটাতে এক ছুটে গিয়ে আনতে পঞ্চাশ ধনে জিরে, হলুদ বা একশো পোস্ত,
মনে পড়ে না শেষ শ্রাবণের ঘন বর্ষায় আলুর চপের লাইনে দাঁড়িয়ে তেল চুপচুপে করে বুকে জড়িয়ে সযত্নে আনতে, পূজা-পার্বণে মুড়ি-মুড়কি আর মটের ভিড়ে আমার পেট ফুলে ঢোল।
ভিক্টোরিয়ার চত্বরে, সমুদ্রের ধারে অলস দুপুরে ছায়াঘেরা পার্কের মাঝে প্রেমিক-প্রেমিকার নিবিড় সান্নিধ্যে ধন্য আমি বাদামের খোসার ভিড়ে।
না না কোন হিংসা নয়, কোনো কোনো পরিবারের ময়লা কাপড়ে একটু উজ্জ্বলতা আর ভাতের থালায় একটু অন্ন জোগাতে রুজি-রুটির পথ করতে আমার জুড়ি নেই;আমার এই আকার আসার আগে, আমি ছিলাম সকলের ভোরের বেলার নিত্যসঙ্গী খবরের কাগজ; এখনো যদি নিতান্ত অবহেলায় কুড়িয়ে নাও দেখতে পাবে ধুলো ময়লা ,আবর্জনার মাঝে হালকা হয়ে যাওয়া রাজীব গান্ধীর হত্যাকাণ্ড, গাইসাল দুর্ঘটনা ,বেকার যুবকের আত্মহনন, বধু হত্যা, এভারেস্ট অভিযান, বোফোর্স মামলা, স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিজ্ঞপ্তি বা' জনি'র মৃত্যু দিনের স্মরণসভার ঘোষণা, আবছা হয়ে যাওয়া শচীন সৌরভের মুখে সেঞ্চুরির টুকরো হাসি, দু'হাজার সহস্রাব্দের মুখোমুখি প্লাস্টিকের যুগে নোংরা ফেলার গাড়িতে চড়ে হয়তো চলে যাব শ্মশান চুল্লীতে, জন্ম-জন্মান্তরে বিশ্বাসী আমি, তাই আবার ফিরব খবরের কাগজ হয়ে শেলীর"দ্য ক্লাউড" হয়ে তোমাদের সকলের প্রিয় ঠোঙা হয়ে।