রাজকন্যা
রাজকন্যা


শহর থেকে অনেক দূরে,
ছোট্ট একটি ভাঙা কুঁড়ে,
সেই কুঁড়েতেই থাকি আমি,
আমার কাছে তা অনেক দামি।।
ঘর আমার চাঁদের আলোয় ভাসে,
কেঁপে ওঠে তা হাওয়ার রোষে।
নুন আনতে পান্তা ফুরোয়,
কুয়োর শীতল জলে প্রাণ যে জুড়োয়।
দিনে কেন্দু পাতা তুলি-রাতে বিড়ি বাঁধি,
সময় পেলে সকাল বিকেল
একটু গানের গলা সাধি।
টিন বাজিয়ে দেই তাল,
ওটাই আমার বাদ্যযন্ত্র,
মা চোখ বুজে আমার গান শোনে
হয়ে একদম মন্ত্রমুগ্ধ।
মা আমার,লোকের বাড়ি বাসন ধুতে যায়,
অথর্ব বাপটা অসহায় ভাবে সারাদিন
শুয়ে থাকে খাটিয়ায়।
গেরি,গুগলি,শ
াক-পাতা
আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য,
জানিনা কি করে যে মা
সেগুলি রান্না করে অনবদ্য।
সব কাজের শেষে মা-বেটিতে-
দাওয়ায় বসে করি সুখ-দু:খের গল্প,
তার সাথে চলে খুনসুটিও অল্পস্বল্প ।
গরীব বলে কেউ মেশে না,
কেউ বলে না কথা,
কেউ কখনো তাকায় না ফিরে,
কেউ বোঝে না ব্যথা।
আছে দারিদ্র,আছে অভাব,
আছে অসুস্থ বাবা,
চারিদিক থেকে দুর্দশা যেন
বসিয়েছে তার থাবা!
তাও সুখ-শান্তি আছে আমাদের এই ঘরে,
আনন্দ-ভালবাসা ভরে আছে এ সংসারে।
নেই শিক্ষা,তবুও আছে প্রগতিশীল মন ,
সুখ-দু:খে একে অপরের পাশে তিনজন।
মেয়ে বলে নই ফেলনা, বাপ-মা র নয়নের মণি,
তাঁদের কাছে আমি রাজকন্যা-আমি ই যে রাজরানী।