নবজাতকের কান্না
নবজাতকের কান্না
গত দু'দিন ধরে মেয়েটি বড্ড কষ্ট পাচ্ছে,
তীব্র হাড়গোড় ভাঙা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে!
বাড়ীতে মা ও সব 'মা' স্থানীয়ারা বলেছে,
প্রসবযন্ত্রণা সবাইই দাঁত চেপে সহ্য করেছে।
সুতরাং এ এমন নতুন কোনও বিষয় নয়...
'মা' হতে হলে তো এমন বেদনা সইতেই হয়।
তবুও মেয়েটি আর সইতে পারছে কই?
বেচারা মেয়েটি দুষছে বরকে মনে বড়ই।
সন্তান তো দুজনের, বেদনা কেন একলা সই?
এবার মেয়েটি ঝিমিয়ে পড়ছে, পারছে না আর,
হাসপাতালের বারান্দাতে জটলা চলছে সবার।
ডাক্তার বললেন, 'ঝুঁকি আছে বেশ সিজার করতে',
মেয়েটি এবার ভারী ভয় পাচ্ছে, চায় না ও মরতে।
কিন্তু ওর কথা উপস্থিত এখানে আর ভাবছে কে?
বাচ্চাটা
পেটে একেবারেই হাঁফিয়ে উঠেছে যে!
রাত বাড়লে এরপর সমস্যা আরো বাড়বেই,
তাই একবাক্যে সবাই মত দিয়ে দেয় সিজারেই।
মেয়েটি যন্ত্রণায় কাতর, বরের কাছে জল চাইলে,
'ন্যাকামিতে বাঁচি নে', ফিসফিসানি কানে এলে....
মেয়েটির দুচোখ বেয়ে খানিক নোনাজল গড়ালে।
মায়ায় পড়ে বরটি বোতল থেকে একঢোঁক জলে,
এধার ওধার চেয়ে মেয়ের তৃষ্ণাটুকু মেটাতে গেলে,
'হাঁ হাঁ' রবে আয়া নার্সেরা সবাই তখনি এগিয়ে এলে।
এবারে মেয়েটিকে 'ওটি'র দিকে নিয়ে যাওয়া হবে,
ফ্যালফেলিয়ে তাকিয়ে মেয়ে ভাবছে
ফিরবে ঘরে কবে?
ঘন্টা দুয়েক পেরিয়ে গেলে এলো কচি গলার কান্না,
'ওটি' থেকেই 'মা' হওয়া মেয়ের শ্বাস তো আর চললো না।