নাড়ুগোপালের নাড়ু
নাড়ুগোপালের নাড়ু


ঘটা করে করবো পূজা
ছিল মনের আশা
সপ্তাখানেক বাকি এখন
কৃষ্ণ সাজার বেলা
জন্মাষ্টমীর আগে ভাগে
করবো আয়োজন
গোপালেরে নাড়ু দেবো
হবে হাতের যশ
ক্ষীরের নাড়ু থাকবে এবার
ফল প্রসাদের টাই
ঠাকুমা কাজে ব্যস্ত এখন
বোধগম্য নাই
পূজার ঘরে উপাচারে
সাজায় বেদীটাই
ফলে-ফুলে কৃষ্ণ ঢাকা
দেখার উপায় নাই
যত্ন সহকারে রাখে
হাঁড়ি কলাপাতায়
তারই মাঝে চারটে নাড়ু
সবার বড়ো দেখায়
পূজার লাগি ঠাকুমা এবার
চোখটি বুজে থাকে
নিয়ে আশা সকল ব্যাথা
হা কৃষ্ণ ডাকে
ধ্যান-মন্ত্র চলতে থাকে
চোখটি নাহি খোলে
সময় হলে মালা ঝোলাবার
কৃষ্ণের গলা খোঁজে
চোখ খুলতেই উল্টো হাঁড়ি
তিনটে নাড়ু নাই
হাঁউ-মাউ স্বরে কেঁদে উঠে
ফরিয়াদ একটাই
কৃষ্ণ এবার খেলো নাড়ু
দেখতে নাহি পাই
রোদন শুনে কর্তা-গিন্নি
সাথে নাতি-পুতি
সবাই দেখে ঠাকুমার আঁসু
হাঁড়ির নাড়ু নাই
শান্ত করিবারে পড়শী
বোঝাতে থাকে সবাই
এমন ভাগ্য দেখিনি কভু
তুমি অনন্যা ভাই
বড়ো আনন্দ সংবাদ এটা
প্রকাশ করা চাই
বিশ্বভুবন জানবে তোমায়
হবে খ্যাতিটাই
কান্না নাহি থামে তাবু
ক্ষোভ যে একটাই
অনেক দিনের ছিল আশা
করবো গোপাল পূজা
ক্ষীরের নাড়ু সাজিয়ে রাখবো
নিয়ে মনের আশা
একটি যে মোর যাবে পেটে
নাতি-নাতনির দুটি
শেষ নাড়ুটি খাবে আমার
সাধের খোকামনি (ছেলে)
একি হলো ঘোর কলিতে
কৃষ্ণ নাড়ু খায়
একটি নয়, দুটি নয়
বিশাল তিনটেই
যদিও জানি এমন ভাগ্য
কপালে সবার নাই
খোকামনি সামনে এসে
উঁকি দিয়ে দ্যাখে
খাটের নিচে হুলো বেড়াল
জিভ চাটতে থাকে
চোখটি যে তার আধো বোজা
অলস নিদ্রা ঢাকা
এমন সাধের ক্ষীরের নাড়ু
নয়কো মেলা সোজা
কৃষ্ণ পূজা করো যদি
ক্ষীরটি কিনো তাজা
প্রতি বছর থাকবো আমি
খেতে ভারি মজা
নাড়ুগোপালের নাড়ু সবার
ভাগ্যে নাহি জোটে
হইনা আমি হুলো বেড়াল
নয়কো বোকা মোটে
নাড়ুগোপালের নাড়ু খেয়ে
নাচবো আমি একাই
ল্যাজ নাড়িয়ে মিউঁ ডেকে
সম্বর্ধনা জানাই
ঠাকুমা এবার রোদন ছেড়ে
গর্জে বলে ধর
এত প্রসাদ ছিল রাখা
সরম নাই তোর
মুখপোড়াটা খেলো শুধু
সাধের তিনটেই
একটা নাড়ু নিয়ে আমি
করবো কি তাই ভাবি
নাতি-নাতনি ভাঙ্গায় শুধু
বলে তুই খাবি
মরণদশা হুলো বেড়াল
করলি মোরে দোষী
এই দুনিয়ায় গোপাল আমায়
রাখলো উপবাসী
আসছে বছর গোপাল তোকে
সাজাবো এই ঘরে
ক্ষীরের নাড়ু দেবো নারে
ফুল-বাতাসা ভরে ।