মিষ্টি সুখ
মিষ্টি সুখ


মিষ্টি মিষ্টি করে, মন করে বড়ই হাঁকপাক,
পেতাম যদি একখানা সন্দেশ, নরম কিংবা কড়া পাক।
দিত যদি এনে কেউ ভীম নাগের লেডিকেনি
এমন কি আর বাড়ত তাতে রক্তের মধ্যে চিনি?
কতদিন খাইনি সরপুরিয়া ,সরভাজা।
ভুলেই গেছি কেমন খেতে অমৃতি আর জিভেগজা।
ইচ্ছে করে চুপিচুপি পালিয়ে যাই কৃষ্ণনগর,
টিকিট না পেলে না হয় পৌঁছে যাবো শক্তিগড়।
ল্যাংচা খেতে খেতে হাজির হব বর্ধমান,
মিহিদানা, সিতাভোগকে কে করে অপমান?
এসব কথা পড়তেই মনে, নোলা ওঠে লকলকিয়ে,
সামনের মাসেই তো ঠিক হয়েছে ছোট নাতির বিয়ে।
আইসক্রিম ঘোড়ার ডিম, চলবে না রাখা মেনুতে,
জনাইয়ের মনোহরা আর নবদ্বীপের লাল দই চাই শেষ পাতে
বাড়িতে ভিয়েন বসাবো, না হলে বিয়ে ক্যান্সেল
চেনে নি আমাকে, আমার নামও গোবিন্দ সরখেল
এককালে বাজি লড়ে খেয়েছি রসগোল্লা, ছানাবড়া
বাবরসা, মুগের জিলিপি খেতে চষে ফেলেছি ক্ষীরপাই, ডেবরা
গুপ্তিপাড়ার গুঁফো সন্দেশ গোঁফে লেগে আছে আজও
রানাঘাটে শ্বশুরবাড়িতে জামাইষষ্ঠীতে পান্তুয়া খেয়েছি কত!
জামাইবাবু মালদা থেকে আনতেন কিনে কানসাট আর রসকদম।
চন্দননগরে ম্যাচ খেললেই জুটত জলভরা নয় তো চমচম।
সেসব দিন এখন অতীত, মিষ্টি মানে শুধু কেক চকোলেট।
মান বাঁচাতে ভরসা এখন নন্দীর দোকানের ক্ষীর কাটলেট।
জন্মদিনে বিবাহবার্ষিকীতে যদিও গিন্নী পায়েস রাঁধেন এখনও,
আমার ভাগে জোটে কেবল সুগার ফ্রি দেওয়া পানসে মিষ্টান্ন।
সোনা মুখ করে তাই খাই , চেয়ে দেখি পাশে রাখা জয়নগরের মোয়া,
গোবিন্দ জীর প্রসাদী প্যারা, মোহনভোগ আর গুজিয়া।
আমার এত কষ্ট দেখেও গোবিন্দ জী হাসেন শুধু মিটমিটিয়ে,
আর জনমে গোবিন্দ সরখেল হলে বুঝবে কেমন জীবন কাটে!