কীর্তিমান
কীর্তিমান


সারা পৃথিবী তাকিয়ে আছে
এরা তিন তলোয়ারবিদ নাকি ভেলকি দেখাতে পারে
গ্যালারি গমগম করছে।
চিনের ছেলেটি উঠে এল রিং-এ
মোটা কালো কাপড় দিয়ে তার চোখ বেঁধে দেওয়া হল
কৌটো খুলে একটা মাছি ছেড়ে দেওয়া হল তার সামনে
ডানার ফরফর শব্দ শুনে তলোয়ার চালাল ছেলেটি
এক কোপেই দু'টুকরো।
জায়েন্ট স্ক্রিনে তা দেখে করতালিতে ফেটে পড়ল প্রেক্ষাগৃহ।
ওরা কি এ রকম পারবে!
মাদাগাসকার থেকে আসা ছেলেটি তখন রিংয়ের মাঝখানে
হাতে ঝকমক করছে তলোয়ার
সব আলো নিভিয়ে দেওয়া হল
তার সামনে তখন উড়ন্ত একটা মাছি,
সাঁইসাঁই করে ছেলেটা শুধু দু'বার ঘোরাল সেই অস্ত্র
মাছিটা চার টুকরো হয়ে পড়ল লাল কার্পেটের ওপর।
গোটা প্রেক্ষাগৃহের লোকজন তাজ্জব। এমনও হয়! সবার যখন সংবিৎ ফিরল, রিংয়ে তখন ভারত নামক একটি দেশের
প্রত্যন্ত এক গ্রামের কোনও র
কমে উঠে দাঁড়ানো এক কিশোর।
তার সামনেও ছেড়ে দেওয়া হল একটি মাছি
সেই পতঙ্গ যখন উড়তে উড়তে রিং থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে
ছেলেটি বসিয়ে দিল একটা কোপ
মাছিটা তখনও একই রকম ভাবে উড়ছে।
ভারতীয়রা জানতেনই, অন্যান্য খেলার মতো
এই খেলাতেও তাঁদের দেশ শূন্য হাতেই ফিরবে
তাই গোটা গ্যালারিতে হাতে গোনা মাত্র কয়েক জন ভারতীয়
মাথা নিচু করে তাঁরা পালাতে পারলে বাঁচেন।
সবাই মুখ চাওয়াচাওয়ি করছেন, এ কী রে বাবা
এ কাকে পাঠিয়েছে ওরা?
এর বেলায় তো চোখও বাঁধা হয়নি
আলোও নেভানো হয়নি
তবুও...
ঠিক তখনই জুড়ি বোর্ড ঘোষণা করলেন ফলাফল
গুঞ্জন উঠল প্রেক্ষাগৃহে--- কী করে হয়?
বিচারকরা বললেন, জায়েন্ট স্ক্রিনে দেখুন
ওই ভারতীয় মাছিটাকে দু'টুকরো করেনি ঠিকই, কিন্তু যা করেছে
তাতে ওই মাছিটা আর কোনও দিনই বাবা হতে পারবে না।