হারানো সে বন্ধু
হারানো সে বন্ধু


সাঁঝের সূর্যের ম্লান কিরন যেন কৃপণের শেষ সম্বল,
মেঘের আড়ালে লুকায় যেমন যত্নে,
আমার বন্ধুটিও ছিল আমার যখের ধন।
গঙ্গার পারে শ্যাওলাবৃত সিঁড়ির পরে,
কেটেছে কত অলস সন্ধ্যা, পাশাপাশি বসে।
সে মজা করে বলতে, “দেখবি কেমন একদিন 'হুস মন্তরের' মত,
মিলিয়ে যাব এই গোধুলীর বাতাসে।“
তাকে দুহাতে জড়িয়ে ধরে বলতুম, “তবে দেখ,
আমি বাতাস বাঁধি কেমনে।“
তার বাঁধন হারা হাসিতে ছিল আমার মন খারাপের পথ্য।
জীবনে যে অমৃত যোগ থাকে, বুঝে ছিলাম তাকে পেয়ে,
মুখে বলতাম, “তোর মত একটা হতচ্ছাড়া জুটলো কপালে!”
কাঙালও যেমন ফিরায়ে না রাজারে শূন্য হাতে,
তার শরীরেও পেলে সে রাজ ব্যাধি আশ্রয়—ক্যানসার।
অবিশ্বাসী, বলেছিলাম, “রাজ ব্যাধি শিক্ষিতের তরে,
বলত দেখি বানান খানি তার।“
ভুল বলেছিল সে, 'ন' কে, 'ণ' এ গুলিয়ে।
ক্ষমা হয়নি তার সে অপরাধের,
রাজদণ্ডই জুটেছিল তার ভালে।
গঙ্গার সে সিঁড়িতে এখনও স্যাওলা ধরে,
সাঁঝের আঁধারে নিস্তব্ধতার মাঝে,
এখনও খুঁজি আমার সে 'হুস মন্তর' বাতাসকে।
আমার বন্ধুটি হারিয়েছে বছর সাতেক আগে।