Sulata Das

Abstract Others

4.0  

Sulata Das

Abstract Others

ঘুষ

ঘুষ

1 min
96


    এক দপ্তর থেকে অন্য দপ্তর কত যে ঘোরা হোল!

ঘুরতে ঘুরতে জুতোর সুকতোলা ক্ষয়ে গেল ।

    একটা-শুধু একটা মার্জিত চাকরির আশা

স্বপ্নই সে রয়ে গেল, জুটলো নিরাশা।

    মেধাবী আমি,কত স্বপ্ন ছিল চোখে!

প্রশংসার নজরে দেখতো আমায় লোকে।

     পরিবারে আমি,বাবা-মা আর তিন বোন,

নিত্যদিনের সাথী ছিল অভাব-অনটন।

   স্কলারশিপের টাকায় পড়াশুনো চালাতাম,

সময় করে বোনেদেরও পড়া দেখাতাম।

   মেধাবী বলে পেয়েছি শিক্ষকদের অগাধ সহায়তা,

ঈর্ষাকাতর চোখে দেখতো আমায় সহপাঠী ছাত্ররা।

   একে একে স্কুল,কলেজ,ইউনিভার্সিটির গন্ডি পেরোলাম,

রোজগারের আশায় রাস্তায় বেরোলাম।

   ফাইলের সব সার্টিফিকেট দেখে একটাই প্রশ্ন-

নেই কোন সুপারিশ !-রাবিশ!

    তাহলে তো দিতে হবে লাখ কয়েক ঘুষ।

 শুনে ভোঁ ভোঁ করে মাথা,

    তবে কি মেধা,ডিগ্রি,সততা সব বৃথা!!

বাড়িতে সবাই রোজ বসে থাকে উৎসুক নয়ন মেলে,

    মাথা নীচু করে ঘরে ফেরে বাড়ির মেধাবী ছেলে।

বাবা-মা-বোনেদের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য 

   আর সংসারের অভাব দূর,

আশা আর স্বপ্নগুলো কিভাবে করব পূরণ-

     ভেবে হই কিংকর্তব্যবিমুঢ।

এভাবে দিন যায়,মাস যায়,বছরও গড়ালো,

   ঘামে-জলে ফাইলের সার্টিফিকেট মলিন হোল।

কি করবো তা ভেবে পাই না কোন কুল কিনারা,

   সবার চোখে সেই মেধাবী ছাত্র এখন বেচারা।

হতাশ হয়ে নিজের প্রতি যখন হারাতে বসেছি সব আস্থা,

   অনেক ভেবে সাহস করে বের করলাম এক রাস্তা।

ব্যাঙ্ক থেকে নিলাম লোন- দিলাম ঘুষ,

    সরকারী দপ্তরের অফিসার বেজায় খুশ।

এখন আমি সেই দপ্তরেরই এক চাকুরে,

    অসৎ-মনুষ্যত্বহীন-ঘুষ নিই দুহাত ভরে।

দুহাতে কামাই আমি, হাত পেতে নিই মোটা টাকা ঘুষ,

   পরিবারের কেউ জানে না সে কথা- 

ছেলে বড় চাকরী করে ভেবে সবাই বেজায় খুশ।

    বৃথা হোল বাবা-মা-শিক্ষকের দেওয়া সৎ শিক্ষা,

সংসারের চাপে-জীবনের স্রোতে ভেসে হাত পেতে নিই ভিক্ষা।

ভাগ্যের পরিহাস আর পরিস্থিতির শিকার আমি,

   শিক্ষিত,মার্জিত স্যুট-টাই পড়া ভিখারি।



Rate this content
Log in