দুর্ঘটনা
দুর্ঘটনা
চনমনে শিশুটা মহানগরীর সড়ক দৌড়ে পারাপার হতে গেল,
একছুটে ভদ্রলোক চলন্ত রেলগাড়ির পাদানিতে পা রাখলেন,
বাইক আরোহী সামনের গাড়িটাকে ওভারটেক করতে এগোলো,
যৌবনের উন্মত্ততায় ট্রাফিক আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে
দুরন্ত গতিবেগে ছুটছিল সদ্য কলেজ পেরোনো হেলমেটহীন যুবক;
দুরন্ত ট্রেনের দরজায় স্মার্টফোনে সেলফি তুলতে ব্যস্ত ছিল ওরা,
তারা আজ অতীত, অপূর্ণ ইচ্ছে নিয়ে মাঝপথেই চাকার তলে পিষ্ট;
অথচ ফুটপাতে হাঁটা মেয়েটা একবারের জন্যও বুঝতে পারেনি যে
সেডানটা হঠাৎ পিচের রাস্তা ছেড়ে দিয়ে তার গায়ে এসে উঠবে!
দু'টো বাসের রেষারেষির শিকার জানলাতে হাত রাখা বাচ্চাটা,
ঠাকুর পুজো দিয়ে সুবাসিত ধূপকাঠি জ্বালিয়ে ঘরে তালা বন্ধ করে
বেরোনো ভদ্রমহিলা ভাবেননি ফ
িরে এসে দেখবেন ভস্মীভূত সংসার!
এভাবেই দুর্ঘটনা উগড়ে দেয় ভিসুভিয়াসের বহুদিনের জমানো আগুন,
মৃত শরীর থেকে রক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে আগ্নেয়গিরির উত্তপ্ত লাভা;
কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে জলজ্যান্ত জীবনীরা নামহীন ডেডবডি!
এভাবেই কয়েকটা অ্যাক্সিডেন্ট মুহূর্তে ঘটে যায় তিলোত্তমার বুকে,
প্রতিবার জড়িয়ে থাকে আমাদের অসাবধানতা বা সীমাহীন ঔদ্ধত্য,
জড়িয়ে থাকে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের লড়াইয়ে নামা বেয়াদব কিছু যানবাহন,
যার ভেতরে আভিজাত্য আর কয়েক গ্যালন মদের অপূর্ব মেলবন্ধন,
পরিবারের পিছুটান উপেক্ষা করে প্রাণের মায়া ত্যাগের এত তাড়াহুড়ো!
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তুমি নিহত কিংবা হত্যাকারী যেটাই হও না কেন,
চোখের পলকে এভাবে হেডলাইন হয়ে যাওয়াটা কী খুব জরুরি ছিল?