বলির পাঁঠা
বলির পাঁঠা


পাঁঠার পাঁঠা পাঁঠা আমি
মহাপ্রসাদ হবো
মাগো তোমায় মাথা দিয়ে
পারের কড়ি পাবো।
মন্ত্র পড়ে পুরুত গণে
সাজালো ফুল মালায়
সিঁদুর তিলক দিয়ে চড়ায়
হাড়িকাঠ তলায়।
হাড়িকাঠের তলে রেখে
আনন্দে আটখানা
আমায় দেখে হাসে সবে
কেউ করে না মানা।
কাঁসর-ঘন্টা সাথে বাজে
ঢাকের নানা বোল
শুনতে তো তুই পাবি নাকো
দুখীর কান্না রোল।
জন্মলগ্নে খুঁত ছিলো না
ছিলাম বড়ই আদরে
অনেক টাকার মূল্যে এখন
মহাজনেের খোয়াড়ে।
জীবন নিয়ে হয় আমাদের
পুণ্য করে মানব
জাতের সেরা জগৎ মাঝে
ধ্বংস করে দানব।
পঞ্চ রিপু নিধন তরে
আমার বলিদান
নাকি লক্ষ রিপুর জন্ম
ভাঙ্গে হৃদয় খান।
পুরোহিত দর্পণ খেয়ে
ভাসে জ্ঞান সাগরে
এক মানি পুরোহিত
আর রান্নার ঠাকুরে।
অন্য উপায়ে যে অক্ষম
অন্নের সংস্থানে
সেই এখন পুরোহিত
পূজিছে ভগবানে।
ভদ্রবেশি ভন্ড ডাকাত
আমায় পূজো করে
পুরুতেরা সুরেলা স্বরে
বিদ্যে জাহির করে।
সেরা জাতে আনন্দ তরে
জীব জীবন হরে।
পূজোর নামে পশু নিয়ে
কেমন এক্টো করে।
মা মা বলে ডাকি তবুও
দিস না তুই সাড়া
বলির পাঁঠা আমি যে মা
সময় দিচ্ছে তাড়া।
বুদ্ধি আমার এমনই
বুঝি না কিছু মোটে
দাড়িয়ে আছিস মা তুই
বটে জীবটি কেটে।
তোর বুঝি মা কথা বলা
এখন আছে মানা
মখোশ পরা ভদ্র জনে
মেলে রঙিন ডানা।
লক্ষ পাঁঠার বলিদানে
বাহু শক্তি আনে
সরল শিশু হংস্র হয়
আমার রক্ত স্নানে।
নানান ঢঙে পুরুতেরা
আমায় পূজো করে
হিং টিং ছট্ মন্ত্র সাথে
নানান মূর্তি ধরে।
মন্ত্র শক্তির মায়াজালে
সবায় বন্দী করে
চতুরতায় শ্রেষ্ঠতম
আপন ঝোলা ভরে।
দু'চোখ ভরে মায়ের নয়ন
অন্তর কাঁদে দূখে
বলেন তিনি গোমড়া মুখে
আমি কি আছি সুখে?
বন্য ছিলি ভালই ছিলি
বিপদ সভ্য মন্ত্রে
ছট্ ফটিয়ে হাড়িকাঠে
মরবি সভ্য যন্ত্রে।
তোদের জন্য দঃখ হলেও
আমার জীব কাটা
শট্ কাটে পেট ভরাতে তুই
হোলি বলির পাঁঠা।।