ভাঙা মুখ
ভাঙা মুখ


আজ সোমবার
মোবাইলের সুইচ অন করব না কিছুতেই।
এই তো সে দিন, অফিসের ক'পরিবার মিলে
পুণ্যি নয়, এমনিই সমুদ্র দেখতে গিয়েছিলাম গঙ্গাসাগরে।
হইহই করে কাটছিল
সমুদ্র-স্নান
কপিলমুনির মন্দির
এ মন্দির
ও মন্দির
সে মন্দির
মাঝে মাঝেই ভ্যানরিকশায় চেপে আকাশকে ছুঁয়ে আসা
সন্ধ্যা হলেই ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের ঘরে
অন্ত্যাক্ষরি, জোকস, কবিতা পাঠ, লুডো, কাটাকুটি খেলা।
এত কুয়াশা হচ্ছিল
একদিনও সূর্যোদয় দেখতে পারিনি
ফিরে আসার দিন কি আর দেখা যাবে!
বালিশে মুখ গুঁজে আমি ঘুমাচ্ছিলাম
হঠাৎ মনে হল, কে যেন মাথায় বিলি কেটে দিচ্ছে!
কে!
তাকিয়ে দেখি, তুমি।
--- কী মশাই, সমুদ্রে যাবেন না?
ডরমিটরির চার-চারটে মশারিই তখন ফাঁকা
আধো-অন্ধকারে কী যে হল!
আমি থরথর করে কেঁপে উঠলাম।
এত বিদ্যুৎ ছিল তোমার ভিতরে!
একের পর এক ঢেউ
সব বাঁধ ভেঙে গেল।
--- কী, রাজি তো?
সমুদ্রের পাড় ধরে হাঁটতে হাঁটতে তুমি বলেছিলে---
আমাকে দুটো দিন সময় দিন
আমি সোমবার আপনাকে ফোন করব।
---সো... ম... বা... র!
থাকতে না পেরে
অবাধ্য আঙুল টপাটপ বোতাম টিপেছিল পর দিনই
দুটো কথা হতে না-হতেই
'তা হলে রাখছি' বলে লাইন কেটে দিয়েছিলে
তোমার সেই লাইন কাটার ধরনটাই আমার কাছে
সে দিনের সেই প্রশ্নটার উত্তর হয়ে উঠেছিল।
আজ সোমবার
মোবাইলের সুইচ অন করব না কিছুতেই
তুমি যা বলবে, আমি নিতে পারব না।