অবিস্মরণীয় সেই চিঠি
অবিস্মরণীয় সেই চিঠি


তৃতীয় শ্রেণী, বাংলা ক্লাসে মনোযোগী ছাত্রীরা,
দিদিমণির নির্দেশে ক্রমান্বয়ে সজোরে পাঠ করা,
রিডিং, প্রত্যেকের জন্য বরাদ্দ একটা করে স্তবক,
সকলের পাঠ শেষে আমায় শিক্ষিকার আহ্বান -
নির্বাচনের কারণ না বুঝেই নির্বাচিত হলাম আমি,
অফিস ঘরে গিয়ে হাতে পেলাম একটা সুন্দর ফর্ম,
ওপরে জ্বলজ্বল করছে একটা প্রতিষ্ঠানের নাম,
'রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব্ কালচার, গোলপার্ক',
বাগ্মিতা প্রতিযোগিতা, বিষয় - 'বিলের দস্যিপনা',
স্বামীজির আদর্শে পথ চলা, জীবন গড়ার প্রেরণা;
তাঁর ছেলেবেলা নিয়ে জনসমক্ষে বলার সুযোগ,
ফর্ম ভরা, বাড়ি নিয়ে এসে অভিভাবকের স্বাক্ষর,
পরদিন বিদ্যালয়ে সেই ফর্ম আবার জমা দেওয়া।
বেশ কিছুদিন পরে ইস্কুল থেকে সদ্য ফিরেছি বাড়ি,
পিওন কাকুর ডাক, একছুটে চিঠিটা হাতে নেওয়া;
খাম খুলেই আকাশি ও সাদা রঙের একটা কাগজ -
ইংরেজিতে মুদ্রিত অক্ষরে একটা মনোনয়ন পত্র,
সেই আমন্ত্রণ বার্তাটির প্রেরক - রামকৃষ্ণ মিশন;
বাগ্মিতা প্রতিযোগিতার তারিখ সহ অনুষ্ঠানসূচি,
ঠাকুর-মা-স্বামীজির আশীর্বাদে এগিয়ে চলার বার্তা;
অবিস্মরণীয় চিঠিটা বয়ে এনেছিল খুশির উজান,
তারপর পাঁচ মিনিট নির্ধারিত সময়ে বক্তৃতা অভ্যেস,
স্ক্রিপ্ট মুখস্থের পাশাপাশি মননে আত্মস্থ করে তোলা,
দৃশ্যপটে বিলের শৈশব মুহূর্তগুলোর অনন্য উপলব্ধি -
অবশেষে সেই দিন, অডিটোরিয়ামে মুখরিত বাগ্মিতা,
করতালিতে স্বগতোক্তির প্রতিধ্বনি, উজ্জ্বল সেই চিঠি।