আস্তিক না নাস্তিক ?
আস্তিক না নাস্তিক ?


তুমি আস্তিক নাকি নাস্তিক? ধার্মিক নাকি অধার্মিক?
পরিচিত প্রশ্নগুলোই মনে হয় ভীষণ রকম অযৌক্তিক!
আস্তিকতা ও নাস্তিকতার মাঝে প্রভেদ ঠিক কোথায়?
আস্তিকতার ভিত্তি তীব্র প্রত্যয়, নিজের ওপর বিশ্বাস,
নাস্তিকতার অর্থ আপন অস্তিত্বকে অনায়াসে অস্বীকার,
জেনো, ধার্মিক হতে গেলে অলিখিত সাধনা করতে হয়,
চেতনা ধাঁধিয়ে দেওয়া আলোয় আত্মার উৎকর্ষ সাধন,
সমস্ত সৃষ্টিতে পরম ব্রহ্মের অবস্থানের প্রগাঢ় অনুভব;
যে এই সৃষ্টিকে বিশ্বাস করে, নিজের প্রতি আস্থা রাখে,
সে আর যাই হোক না কেন, নাস্তিক কিন্তু কখনওই নয়;
দেবালয়ের বাইরে থালা হাতে অগণিত ভিক্ষুকের ভিড়!
প্রসাদ খেয়ে তাদের চোখেও দীপ্তি জাগে মৌন প্রার্থনার;
জন্মলগ্ন থেকে প্রিয় মানুষগুলোর অগাধ স্নেহের পরশ,
সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত, ঊষা থেকে গোধূলির লালিমা,
প্রকৃতির নিরন্তর দানে সমৃদ্ধ আমাদের এই নশ্বর জীবন,
সৃষ্টির আশীর্বাদকে নির্দ্বিধায় অস্বীকার করি কী করে?
ধার্মিকতা মানে টিকিদাড়ির সাম্প্রদায়িক সংঘাত নয়,
অন্ধবিশ্বাসের বিরুদ্ধাচরণের অর্থ কিন্তু নাস্তিকতা নয়,
অযৌক্তিক উপাচার তো স্বয়ংক্রিয় অবদমনের শৃঙ্খল;
রাম-রহিমের নামে ধর্মের ধ্বজা ওড়ানোর পক্ষপাতী নই,
সঙ্কটকালে তো আমি ঈশ্বরের শরণাপন্ন হতে পারব না,
মরণকালে হরির নাম করে তাৎক্ষণিক আস্তিক হব না,
আসলে প্রতিটা মানুষই আস্তিক, রাতে ঘুমোতে যায়
পরবর্তী ভোরের অরুণোদয় দেখার গভীর প্রত্যয় নিয়ে,
দেবতাকে আমরা চাক্ষুষ করি বারবার মানুষের মধ্যেই;
আস্তিকতা আর সাম্প্রদায়িকতার পার্থক্যটা বুঝি ভীষণ,
আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হয়েই আস্তিক হয়ে রইব আজীবন।