আমি বলতে এসেছি
আমি বলতে এসেছি


ফুটপাতে থাকা হতভাগ্য পরিবার -
যার মাথার ওপর নেই একটুকরো ছাদ,
পায়ের নিচে নেই স্থায়ী আশ্রয়,
হয়তো খেতে পায় একবেলা
কোনোদিন হয়তো তাও জোটে কিনা সন্দেহ।
প্রতিদিন লড়াই করে টিকে থাকার জন্য,
আমি তাদের কথা তুলে ধরতে এসেছি।
বাড়িতে থাকা বেকার যুবক - যুবতী -
দিনের পর দিন চাকরির আশায় থেকে;
কেউ হয়তো রাতদিন চেষ্টার পরেও
নিজের দুর্ভাগ্যের জন্য এখনও জোটেনি চাকরি,
বেশ কয়েকবার ইন্টারভিউ দিয়েও ব্যর্থ।
সত্যি হয়তো কারো প্রকৃতই প্রয়োজন অর্থের,
আমি তাদের কথা তুলে ধরতে এসেছি।
হোটেলে কাজ করে যে শিশু শ্রমিক -
প্রতিদিন পরিবেশন করে ভালো ভালো খাবার,
নিজের চোখে দেখে, গন্ধ পায় সুস্বাদু গন্ধের,
অনুভব করে নষ্ট হয়ে যাওয়া খাদ্যের অপচয়,
কিন্তু দিনের শেষে হয়তো উপভোগ করতেই পারেনা।
কেউবা আধপেটা খেয়েও প্রস্তুত হয় পরের দিনের জন্য,
আমি তাদের কথা তুলে ধরতে এসেছি।
নিরপরাধ মানুষ সারাজীবন থেকেছে মানুষের সেবায় -
কিন্তু ভাগ্যের লিখনে বা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে;
জীবন যন্ত্রণা ভোগ করে সংশোধনাগারের আঁধারে,
অপরাধ না করেও হয়তো প্রাপ্তি হয় শাস্তির,
বিধাতার লিখনে ঘটে মৃত্যুদণ্ড নয়তো বা যাবজ্জীবন।
তখন বিচারের বানীও কেঁদে ওঠে নীরবে
আমি তাদের কথা তুলে ধরতে এসেছি।
সমাজের সমস্ত শুভ্র বসন পরিহিতা -
শান্তির রং জড়িয়ে আজ সমাজের চোখে বিধবা;
কারুর বা অকালে রোগে কিংবা দুর্বিষহ দুর্ঘটনায়;
কারুর হয়তো বা বার্ধক্য জনিত কারণ।
স্বামীর অবর্তমানে তারা কেউ কুসংস্কারে জর্জরিত,
কেউ হয়তো সামাজিক নিয়মরীতি পালনে ওষ্ঠাগত প্রাণ,
আমি তাদের কথা তুলে ধরতে এসেছি।
ওই যে ধনী বাড়িতে মায়ের সঙ্গে থাকা বাচ্চা মেয়েটা -
অভাবের তাড়নায় মায়ের সঙ্গে আছে বাড়িতে;
খেলতে চায় হয়তো সেই বাড়ির ছোট মেয়েটার সাথে,
কিন্তু গরীব হওয়াতে পায়না সেই অধিকার,
দূর থেকে দেখে যায় নতুন জামার সৌন্দর্যচর্চা
উৎসবের দিনকেও মেয়েটা পালন করে পুরনো জামায়,
আমি তাদের কথা তুলে ধরতে এসেছি।
আমি বলতে এসেছি সেইসব মানুষদের কথা,
যারা সমাজে থেকেও বঞ্চিত সামাজিক কাজে,
বঞ্চিত সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতে, মানসিকতায়।
তাদের প্রাপ্য সম্মান, অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে,
মানুষের মধ্যে শুভবুদ্ধির জাগরনের উদ্দেশ্যে,
সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে,
আমি তাদের কথা তুলে ধরতে এসেছি।