Rajkumar Mahato

Children Stories Classics Inspirational

4.3  

Rajkumar Mahato

Children Stories Classics Inspirational

উপহার

উপহার

2 mins
297



ছেলেটি দোকানে গিয়ে চারিদিকে খুঁজতে লাগলো। ওই যে সকালে ওই বাবুটা এই দোকান থেকেই তো ওই তুলো তুলো পুতুলটা কিনেছিল। হ্যাঁ ওই তো, দেখতে পেয়েছে সে।


ছেলেটির বয়স আনুমানিক বারো কি তেরো বছর হবে। পরনে ময়লা হাফ-প্যান্ট। ওপরে একটি ছেঁড়া চাদর বেষ্টন করে আছে তার রুগ্ন শরীর। ভেতরে একটি সেন্ড গেঞ্জি আছে। 

 

“কাকু কাকু ওই তুলো পুতুলটা দাও আমায়”। ছেলেটি দোকানিকে উদ্দেশ্যে করে কথাটা বলল।


কাকু অর্থাৎ দোকানি হঠাৎ করেই রেগে আগুন। চিৎকার করে বললেন “ তুই আবার এসেছিস? চল ভাগ এখান থেকে।সকাল এ তাড়া করলাম তো তোদের দুই ভাই বোনকে। চল্ চল্ পালা। তা না ঽলে মার খাবি এবার। সকাল সকাল দোকানে এসে ঝামেলা বাড়াস না”।


ফুটপাতের বাস স্ট্যান্ডের এক কোনায় থাকে ছেলেটি আর তার চার বছরের বোন । কালীঘাটের মন্দিরের বাইরে ভিক্ষা করে দিন চলে। মা বাপ কে? কোথায় আছে? বেঁচে আছে না মারা গেছে সেই বিষয়ে তারা অবগত নয়। 


“না না কাকু পয়সা এনেছি। এই দেখ”। ছেলেটি একমুখ উজ্জলতা নিয়ে দোকানদারকে বলল।


দোকানি পয়সা নিয়ে পুতুল টা দিতে দিতে বললেন “তা আজ তো যে যাকে ভালবাসে সে তাকে এই পুতুল দেয়। তুই কাকে দিবি? তুইও আবার প্রেম-ট্রেম করেছিস নাকি?” কথাটা বলেই একগাল কৌতুকের হাসি হাসলেন তিনি। হা হা হা।


আশে পাশে থাকা দু-একটা ক্রেতাও ছেলেটির এহেন কান্ড দেখে মুচকি হেসে উঠল।


ছেলেটি কিন্তু সেদিকে কোন কর্নপাত না করেই গর্বের সাথে বলল “ কেনো আমি যাকে ভালবাসি তাকে দেব”।


“কে সে?” দোকানি হাসতে হাসতেই বললেন।


“আমার বোন”।


দোকানি ঽতবাক। ক্রেতাদের মুখ বন্ধ, হাসি উধাও। দোকানদারের সুর তখন খানিক নরম। “তা বাবা টাকা পেলি কোথায়?”


ছেলেটি হেসে বলল “আজ সারাদিন যা ভিক্ষা করেছি আর বাবুর গাড়ি ধুয়েছি।তাতে ঽয়েছে এই টাকা”।


“তা খেলি কি?” কৌতূহলের সাথে প্রশ্ন করলেন দোকানি।


“বোনকে ভাত খাইয়েছি। আমার আর ঽল না। এবার দাও কাকু বোন এটার জন্য খুব কাঁদছে”।


দোকানি বাক্যহীন। ছেলেটি পুতুলটা নিয়ে ফুটপাতের দিকে দৌড় দিল। অনেকগুলো মানুষ তখন তার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে। 




Rate this content
Log in