তিন্নি ও মামমাম (পর্ব ২)
তিন্নি ও মামমাম (পর্ব ২)
উফ! সত্যি মামমামটা তিন্নিকে পাগল করে দেয়। তাই তো ও মাঝে মাঝে রেগে গিয়ে বকে ওঠে,” তুমি দেখছি আমায় পাগল করে দেবে।“
মামমাম ফোগলা দাঁতে হাসে,” তা দিদি আমি কি অত বুঝি? তুমি একটু আমায় শিকিয়ে পড়িয়ে নাও, কেমন?”
“ ঠিক আছে , ঠিক আছে, এবার আমি যা বলছি শোন...।“ গম্ভীর হয়ে উত্তর দেয় তিন্নি। তারপর নিজের ট্যাবটা মামমামের সামনে আবার ধরে। আজ মামমামকে ট্যাবে রাইমস শোনাচ্ছে ও। ওর ইচ্ছে ট্যাব কেমন করে ব্যবহার করে তা শিখিয়ে দেবে। কিন্তু যতবারই পরের রাইমসে যাবার জন্য মামমামকে সোয়াইপ করতে বলে ততবারই কাঁপা কাঁপা আঙ্গুলে মামমাম কিসব টিপে সব গড়বড় করে দেয়। বেশ কয়েকবার চেষ্টা করে এবার সত্যিই রেগে গেল তিন্নি।
“ তোমাদের স্কুলে কি কিচ্ছু শেখায়নি?”
“ আমি কি আর ইশকুলে গেছি দিদি। সেই ন বছর বয়সে আমার তো বে ই হয়ে গেল।“
“যাহ্ অত ছোট বয়সে বিয়ে হয় নাকি?”
“ আমাদের সময়ে হত। তোমার বড় দাদু এই বড় ফিটন গাড়ী চড়ে আমায় বিয়ে করতে এলো। আর আমি লাল বেনারসি পরে এক গা গয়না পরে বিয়ে করে শ্বশুর
বাড়ী চলে গেলাম।“
“ তারপর ?” গল্পের গন্ধ পেয়ে তিন্নি মামমামের কোল ঘেঁষে বসলো।
“ আমার শ্বশুর বাড়ী ছিল সেই গ্রামে। বাড়ী থেকে বেরিয়ে খিড়কীর দিকে বাথরুমে যেতে হত। দিনের বেলায়ও ওখানে যেতে আমার খুব গা ছমছম করতো।“
“কেন?”
“ আরে ওখানে একটা শেওড়া গাছ ছিল , তাতে একটা পেত্নি থাকতো।“
“ তুমি দেখেছ?” তিন্নি আরও একটু কাছে ঘেঁষে বসলো।
“ দেখেছি বইকি। তবে সে আমার কোনোদিন কোনও ক্ষতি করেনি। “ মামমাম তিন্নির মাথায় হাত বুলিয়ে দিল।
“ কি রকম দেখতে ছিল পেত্নীটাকে ?” তিন্নির চোখ গোল হয়ে গেছে।
“ তেনাদের কি আর পষ্ট দেকা যায়? একটু ধোঁয়া ধোঁয়া মতন...।“ মুচকি হেসে জবাব দিল মামমাম।
গল্পটা বেশ জমে উঠেছিল এমন সময় মায়ের গলা পাওয়া গেল,”তিন্নি পড়তে বস। “
“ যাও দিদি, মা ডাকছে। বাকি গল্প কাল হবে।“ তাড়াতাড়ি বলে উঠলো মামমাম।
খুব অনিচ্ছা সত্ত্বেও তিন্নি চলল পড়তে বসতে। ও ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে ওর মামমাম যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচল। ট্যাব চালানোর থেকে রক্ষা পাওয়া গেল আজকের মত।