রামুর নতুন সাইকেল
রামুর নতুন সাইকেল
একটি ছেলে ছিল রামু। রামু বড়লােক বাড়ির ছেলে, সে যা চাইত সেটাই পেত, কিন্তু তার পেছনে একটা কারন ছিল - রামু সব সময় ক্লাসে প্রথম হত। রামুর বয়স যখন এগারাে বছর তখন সে নতুন নতুন সাইকেল চালানাে শিখছে, স্কুলে বন্ধুরাই তাকে শেখাচ্ছে। তার মধ্যে তার এক বন্ধু সাইকেল কিনল সেটা দেখে রামুর খুব কেনার ইচ্ছে হল, কিন্তু তার পরিবার রাজি হল না তার কারন তাকে সাইকেল কিনে দিলে সে সাইকেল নিয়ে স্কুলে যেতে চাইবে, আর এত ভিড়ে তাকে একা ছাড়তে তার বাবা-মা এবং বাকি পরিবার সাহস পেল না। এই রকম করতে করতে আরও কয়েক বছর পেরিয়ে গেল। তারপর রামু যখন অষ্টম শ্রেণীতে উঠল তার বাবা-মা তাকে একটা সাইকেল কিনে দিল। রামু তাে ভীষণ খুশী হল। সে সাইকেল নিয়ে সেই দিনই বিকেলে বেড়িয়ে পড়ল পাড়ায়। সবাই তাে অবাক। সবাই দৌড়ে গেল রামুর সাইকেল দেখতে। রামুর একটা বন্ধু বিপিন বলল, “রামু এটা তাের সাইকেল না অন্য কেউ চালাতে দিয়েছে ?" এই কথা শুনে রামুর রাগ হল, সে বলল, "না, এটা আমার সাইকেল।" সেই দিন তাে গেল তারপর রামু বাড়ি ফিরল ও তার সাইকেলকে ভালাে করে মুছে দিল। এইভাবেই কয়েকদিন রামু তার সাইকেলকে মুছত। কিন্তু কয়েক বছর। পর রামু যখন দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ে তখন সে পড়াশুনায় প্রথম এবং তার ইচ্ছে একটা বাইক কিনতে। রামুর বাবা-মা তাকে সেটা কিনে দিল না এবং একটু বকাবকি করল। এরপর রামু ভালো পড়াশুনা করার জন্য বিদেশে গেল ও রামুর সাইকেল ধুলােভরা গ্যারেজে ঢুকল ও ধুলাে খেতে লাগল। কয়েক বছর পর রামু বিদেশে থেকে ফিরে এল সে তখন বড়ো মানুষ তার কাছে একটু সময় নেই বসার ও সাইকেলটিকে দেখার। তার সেই প্রিয় সাইকেল যাকে সে অত ভালবাসত। তার সাইকেলটি মরচে পড়ে ধীরে ধীরে নষ্টও হয়ে গেল। যে রামু সাইকেলটিকে এতাে ভালবাসত, এত দেখাশােনা করত সেই রামুই আজ সাইকেলটি থেকে বহু দুরে চলে গেল। ধীরে ধীরে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সাইকেলের কথা পুরােপুরি ভুলে গেল ।