ইতি গোলাপ
ইতি গোলাপ


যখন আমি ছোট্ট কুঁড়ি হয়ে বের হচ্ছিলাম,
তোমরা মুগ্ধ নয়নে আমায় দেখছিলে।
সবার গুন্জন শুনতাম,বলতে কি অপরূপ রঙের বাহার!
শুনে উৎফুল্ল হয়েছিল নিষ্পাপ সরল মন আমার।
রোজ আমি একটু একটু করে প্রস্ফুটিত হচ্ছিলাম,
সূর্যের প্রথম আলোয় অবাক নয়নে সুন্দর ধরণী কে দেখছিলাম।
ধীরে ধীরে আমার একটা একটা করে পাঁপড়ি বিকশিত হচ্ছিল,
তোমরাও মুগ্ধ নয়নে প্রতিনিয়ত আমায় দেখছিলে।
বলতে দারুণ সুগন্ধ আমার-দেখতে কি অপূর্ব !!
শুনে আমিও খুশিতে গদগদ,হোল একটু গর্ব।
আহ্লাদে আটখানা আমি-অর্দ্ধ প্রস্ফুটিত গোলাপ,
আমার সৌন্দর্যই হোল আমার কাল- অভিশাপ।
একদিন তুমি ক্যাঁচ করে কাঁচি দিয়ে কাটলে
p>
ঘরের কোনে ফুলদানিতে সাজিয়ে রাখলে।
ঘরে ঢুকেই সবাই আমার প্রশংসা করতো,
গৃহশোভা বাড়াতে আমি হলাম তরুবিচ্যুত।
বুঝলো না কেউ আমার বৃন্তচ্যুত হবার কষ্ট,
নিজের ঘর সাজিয়েই তুমি যে বড় সন্তুষ্ট।
নেই মধুমক্ষিকা, নেই রংবাহারি প্রজাপতি,
চার দেওয়ালের ভেতরে আজ বন্দি প্রকৃতি।
বুঝলে না গাছের কষ্ট,আমাকেও করলে দুখী,
সবার বাহবা পেয়ে তুমি হলে পরম সুখী।
দুদিন পর আমার পাঁপড়ি একে একে খসে পড়লো,
পরিচারিকা আমায় কুঁড়াদানে ছুঁড়ে ফেললো।
অন্তিমে পেলাম না তরুতলের স্নিগ্ধ মাটি,
কুঁড়াদান হোল আমার সমাধি।