STORYMIRROR

Abanti Pal

Others

4  

Abanti Pal

Others

ইছামতিতে উচাটন

ইছামতিতে উচাটন

2 mins
334


মহিম গ্রামে ফিরছে ইছামতি পার করে। আজ দুপুরে বন্ধুর বাড়িতে ওর নিমন্ত্রণ ছিল।

ফেরার নৌকায় সাথে রহিমচাচা রয়েছে, বন্ধুর ওদিককার অভিজ্ঞ মাঝি।

বেরোতে বেরোতে বিকেল পড়ে এসেছে, কিন্তু চাচা আশ্বস্ত করেছে অসুবিধে কিছু হবে না।


কিছুদূর যেতেই, রহিমচাচার নৌকার ইঞ্জিনটা বেগরবাই শুরু করলো। অনেক চেষ্টা করেও যখন ইঞ্জিন চালু হলো না, তখন অগত্যা দাঁড় বাইতে লাগল চাচা, সামনের কাছাকাছি খেয়াঘাটে নৌকো ভিড়োনোর জন্য।

রাত নেমে আসছে দ্রুত, খেয়াড়পাটা বুঝি এসেও আসে না। পূব আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ আজ ইছামতির ওপর বড় মায়াময়। তার অপরূপ রূপে মোহিত মহিম।


হঠাৎ স্রোতের ওপর দিয়ে, দূর থেকে ভেসে আসে একটা মধুময় সুর। কোনো অচেনা অদেখা রমনী সুর বেঁধেছে! কি বিষাদ সেই সুরে, তবু কি অমোঘ তার আকর্ষণ। তীব্র বেদনা ব্যক্ত করে মহিমকেই বুঝি ডাকে তার কাছে। অন্ধকারাচ্ছন্ন নিকটবর্তী নদীপাড়ে, গাছগাছালির ফাঁক দিয়ে পূর্ণিমার জ্যোৎস্নায় দেখা যায় একটা রমনীর অস্পষ্ট আবছায়া। তার রূপরেখাটি যে কি আচ্ছন্নময়!


'ও কে গায় চাচা?' মহিমের প্রশ্ন।


'সাড়া দিওনা খোকাবাবু' চোখ বড়বড় করে হিসহিসিয়ে বলে চাচা। দ্রুত নৌকো ঘোরায় উল্টোদিকে, নদীর মূলস্রোতে বাইয়ে নিয়ে আসতে থাকে। 


'কি হলো? ঘাটে ভিড়বে না নৌকা?' অবাক হয় মহিম।


'যার গান শুনলে, সে অশরীরী খোকাবাবু। আমি চল্লিশবছর ইছামতির বুকে কাটিয়ে শিখেছি, পূর্ণিমা রাতে জেগে ওঠা এই অতৃপ্ত আত্মাদের এড়িয়ে চলতে। কত মাঝি যে ডুবেছে এই ডাকে! অন্ধকার ঘাটে ওরা পথ আগলে হাতছানি দেয়...'


কিছুক্ষন পর, ব্যস্ত রহিমচাচার কানে হঠাৎ ঝপাং করে জলে ঝাঁপ দেওয়ার আওয়াজ ভেসে এলো।


'করো কি খোকাবাবু? এক্ষনি উঠে এসো নৌকায়' চমকে ওঠে চাচা।


কিন্তু মহিম সাঁতরাতে থাকে ঠান্ডা স্রোত ভেঙে

'ও যে ডাকে আমায় চাচা, ও আজ বড় একলা...'


সমাপ্ত।।


Rate this content
Log in