ঠিক বেতাল
ঠিক বেতাল
বিক্রম সেনের একমাত্র পুত্র আদিত্য । উনি অফিস থেকে ফেরার পরেই বিক্রমের কাঁধে উঠে পড়ে বছর পাঁচের আদিত্য । আর আবদার করে বসে নানারকম গল্প শোনানোর । আদর করে বিক্রমবাবু ওকে বেতাল বলে ডাকেন ।
খাবার টেবিল থেকে খাটের কিনার অবধি যেতে যেতে গল্প শুরু করলেন আজকের ।
" সীমন্ত আর হীরক একই অফিসে কাজ করে । দুজনের অখিলবাবুর তত্ত্বাবধানে কাজ করে । প্রথম প্রোজেক্ট যখন এলো তখন একটা ব্যাপার হলো ।
প্রোজেক্টে আরও দুজন থাকলেও বিশেষ করে তৎপর ওরা দুজনেই । কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই সীমন্ত বারে বারে হীরকের কাছে এসে বলতে থাকে , তার এই অসুবিধে , ওই অসুবিধে । তাই মাঝেমধ্যেই অফিস থেকে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যায় । আর সীমন্তের অতিরিক্ত কাজগুলো করে দিতে হতো হীরককে ।
সেদিনও বলতে এলো , " ভাই কাকার শরীরটা ভীষণ খারাপ করেছে , তাড়াতাড়ি বেরোতে হবে , বসকে বলে দিস , সময় নেই । "
" তুই বলে যা না ! "
" না ভাই বস মিটিংয়ে ! আমার দেরী হয়ে যাবে । "
রাগ হলেও কাজগুলো শেষ করে দিতো হীরক । কিন্তু ১টা বছর শেষেই তার গেলো মাথাটা গরম হয়ে । সে দেখলো মূল্যায়নে সীমন্তের ফল বেশী ভালো ।
কিন্তু সীমন্তের দুমদাম বেরোনোর অভ্যাস গেলো না । একদিন সেও ওই সময় ব্রেক নিয়ে সীমন্তের পিছু নিয়ে আড়ালে আড়ালে এগোলো । শেষমেশ দেখলো , সীমন্ত একটি মেয়ের সাথে দেখা করতে এসেছে । গোপনে সে ক্যামেরাবন্দী করলো বিষয়টা ।
একদম বসকে গিয়ে দেখালো ছবিটা । " দেখুন এই সীমন্তের এমার্জেন্সি আর গ্রেড পায় ভালো ও । "
" আচ্ছা কাল আসুক দেখছি ! "
পরদিন এমনি সাধারণ কটা প্রশ্ন করে মীমাংসা করে দিলেন বস । কোনোভাবে কটাদিন জোরদার কাজ করে আবার জলদি বেরোতে লাগলো ।
দুটো বছরের শেষেও একই ভাবে সীমন্ত গ্রেডে এগিয়ে গেলো ।
আদিত্য বলে উঠলো , " তবে এখানে দোষী কে ? "
বিক্রমবাবু বললেন , " কেন সীমন্ত ! আবার কে ? "
কথা শেষ হতে না হতেই আদিত্য কাঁধ থেকে নেমে ছুটে মায়ের কাছে ঘুমোতে চলে গেলো । বাবা হাসতে হাসতে মনে মনে বললেন , " ঠিক বেতাল ! "