ঠিকানা নেই
ঠিকানা নেই


বেলুনে নিজের নাম ঠিকানা লিখে উড়িয়ে দিল দেবাঙ্গন। এটা ওর একটা অদ্ভুত নেশা। নীল আকাশে উড়তে উড়তে গ্যসবেলুনের দূরে ভেসে যাওয়া দেখতে দারুন লাগে ওর।মনে হয় ওও যদি এরকম উড়তে পারত! আজ যে বেলুনটা ছেড়েছিল সেটা একটু বড় ,ভেতরে হাইড্রোজেন গ্যাসও ভরেছে তাই বেশি। বেলুনের গায়ে ছোট্ট চিঠি আর নিজের নাম ঠিকানা লিখে আকাশে ছেড়ে দিতে গিয়ে মনে হয়, যেন ওই ভেসে যাচ্ছে।কেউ যদি কোনদিন পায় ওই বেলুনটা । কতদূর দেশে ভেসে যেতে পারে বেলুনটা! কল্পনার রাজ্যে পাড়ি দিত দেবাঙ্গন ।
মাস ছয়েক পরের কথা। হঠাৎই অভাবিতভাবে চিঠির উত্তর এল, সুদূর ভুবনেশ্বর থেকে। অচেনা নামের প্রেরক দেখে ও খুশিতে
পাগল হয়ে উঠেছিল ।চিঠিটা খুলে দেখে ঠিক তাই ,ভুবনেশ্বর থেকে ওরই বয়সী বিষ্ণু ওকে চিঠি লিখেছে। বেলুনটা কলকাতা থেকে ভুবনেশ্বর উড়ে চলে গিয়েছিল! আনন্দে চোখে জল এসে গেল দেবাঙ্গনের। চিঠির প্রতিটা লাইন যেন গিলে খেতে চাইছিল ও। কিন্তু এ কি লিখেছে বিষ্ণু চিঠির শেষটাতে ?লিখেছে ওর নাকি ব্রেন টিউমার হয়েছে,হসপিটালে শুয়ে আছে। সিস্টারই দিয়েছে ওকে বেলুনটা। বিষ্ণু নাকি খুব আনন্দ পেয়েছে এই বেলুনটা পেয়ে ,আর ওর বন্ধু হতে চায়।
মনটা নিমেষে খারাপ হয়ে গেল দেবাঙ্গনের।ও জানেনা কি করে ওর বন্ধু বিষ্ণুর সঙ্গে যোগাযোগ করবে। বেলুন পৌছবে হয়তো অন্য কোন ঠিকানায়, চিঠি পৌঁছতে যদি দেরি হয়ে যায়!