মরণের তরে
মরণের তরে


আজীবন আমি, মরণের তরে,
তুমি সেই জীবন, যে বহু দূরে।
বড় ক্লান্ত আমি, সারা জীবন ঘুরে, ষড়রিপুর, এই অনন্ত খেলা ঘরে।
মরণ তুমি সাগর জানি,
অভাগা যত এগোয়, তুমি যাও সরে।সপ্ত চক্রে বন্দী আমি,
হে মরণ, নিয়ে চলো বিরজার পরে।
আজীবন আমি, মরণের তরে,
কত মরণ দেখলাম, প্রতিদিন বেঁচে- মরে।
তারা বলে গেল, শেষ জীবনেরে,
তুমি এস, দেখা হবে কাল ভরে।
বন্ধ চোখের জীবন আমি, খুললেই মরণে ধরে,
দেশ জুড়ে প্রেত-আত্মারা, আমি থাকি তেপান্তরে।
আজীবন উৎকণ্ঠায়ে আমি, বেঁচে আছি মরণের তরে,
কত শত বার মরলাম এ ভব-সংসারে
কখনো মরণ হল প্রেমে,
খরার মাটিতে ঘেমে।
কৈশোর এলো অশিক্ষা নিয়ে, আঁধার এলো নেমে।
যৌবনের মরণ বেকারত্ব
জাতী-বর্ণ, সমাজ বৈষম্যে!
শুরু হল, গন তন্ত্রের তন্ত্র-যঞ্জ,
শ্মশান ভূমিতে, কাল বস্ত্রে।
অর্থনীতির চক্ষু জ্বলন্ত,
রাখল আমায় মধ্যবিত্ত করে।মরণ কি ভীষণ জীবন্ত,
জন্মেই কেঁদে ওঠে মা- মা করে।
তাই মৃত্যু তে খাই ভাত, মৃত্যুতে দেখি স্বপ্ন,
মৃত্যু আমার মা, মরণে আমি ধন্য।
মৃত্যু তে গাই গান, লোকে বলে সামান্য,
ব্রহ্মের করি ধ্যান, ধর্ম নগণ্য।
কর্ম যাদের ঘর্ম ঝরায়, ধর্ম হয় গৌণ,
মেদের ওপর মেদ বারে, গুরু অসামান্য।
মরণের ও মরণ হয়, হৃদয় থাকে মৌন
খিদে মেটায় যৌনতা, জোগাড় হয় অন্ন
সেই অন্নের ও, ভাগ নেবার পরে,
কালো দাগ পরে, নখের পরে।
আজীবন আমি, মরণের তরে,
সুখে থেকো হে জীবন, এই লাল-নীল অন্তরে।