ভিখারি
ভিখারি
বাইরের পরিবেশ খাঁ.... খাঁ.....
করছে তীব্র রোদে!
গাছগুলো যেন নিরুপায় হয়ে সহ্য
করছে সবকিছু মুখ বুজে!
বাতাস যেন গরম তীরের ফলার
মত বিঁধছে শরীরে,
আর সূর্য তার তেজ বিস্তার
করছে হাসি মুখে সারা দিন জুড়ে।
বড় রাস্তার ফুটপাতগুলো আগুনের
গোলার মত হয়ে উঠেছে,
রাস্তায় একটাও লোকের দেখা নেই!
কুকুর গুলো এপার থেকে ওপার
শুকে চলেছে কিছু খাবার পাওয়ার আশায়!
কখনও সখনও দু...একটা গাড়ি তীব্র
গতিতে হর্ন বাজাতে বাজাতে বেড়িয়ে যাচ্ছে।
দূরে পলাশ গাছে লাল হয়ে ফুল ফুটেছে,
থেকে থেকে কোকিল মিষ্টি সুরে
কুহু...কুহু...করে ডেকে উঠছে,
নীচেও কিছু ফুল অকালে ঝড়ে পড়ে
ধুলোয় গড়াগড়ি খাচ্ছে।
আর গাছের অল্প ছায়ায় একটা বৃদ্ধ
মহিলা বসে আছে,
পড়নে তার একটা ছেঁড়া শাড়ি,
মাথার চুলগুলো উসকো খুসকো,
সামনে রাখা একটা ফুটো টিনের থালা,
তাতে গোটা কতক একটাকা দুটাকার
কয়েন পড়ে আছে!
পথ চলতি কিছু মানুষ হয়তো দিয়েছে!
আস্তে আস্তে সূর্য তার সারাদিনের
তেজ কমিয়ে ঘুমের দেশে ঢলে
পড়তে শুরু করল,
পাখিরা দলে দলে বাসায় ফিরতে লাগল,
বাতাস একটু ঠাণ্ডা করতে লাগল
মন এবং শরীর টাকে!
বড়ো রাস্তা জুড়ে আলো জ্বলে উঠল,
চারিদিকে ছোট ছোট দোকানের
পসরা সাজিয়ে বসল কিছু লোক!
আবার লোকজনের যাতায়াত
শুরু হলো নতুন করে!
চায়ের দোকানে ভীড় বাড়তে শুরু করল,
মহিলাটি একই ভাবে বসে আছে!
আর মুখ দিয়ে অস্ফুট স্বরে বলে চলেছে....
কিছু সাহায্য করোনা বাবারা...
সারাদিন কিছু খাইনি!!!
কেউ দয়া করে দু... পাঁচটাকা দিচ্ছে,
আবার কেউ এড়িয়ে যাচ্ছে,
বৃদ্ধার চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ!
এইভাবেই কেটে চলেছে তার
জীবনের দিন রাত।
এইভাবে দিনের পর দিন বছরের
পর বছর তার সমান তালে বয়!
কিছু মানুষ একই রয়ে যায়,
ভিখারি যে... তাদের পরিচয়!