অভিনয়
অভিনয়
যে সব উপকরণগুলি দিয়ে আজ শাঁওলি সহজ একটা রেসিপির রান্না বানাবে তাতে তেল বাস্তবিক ক্ষেত্রে লাগবেনা বল্লেই চলে। এ কথা জানার পর সিধ্ মানে সিদ্ধার্থ চৌহানের প্রায় চেতনা হারিয়ে ফেলার জোগাড়। তার জানা সব খাবারে ঘি, মাখন, নয়তো তেলের মধ্যে দিয়েই যেতে হয়। এ ধরনের খাবার তার আত্মীয় স্বজনরা মুখে তুলবে না। যতই আন্তরিকতার সাথে শাঁওলি বৌ-ভাতের রান্না করুক না কেন , মশলাদার খাবার যে তাদের পরিবারের ঐতিহ্য!
শুরু হল দুজনের মধ্যে বিতর্ক। তিলোত্তমা মিস কলকাতা শাঁওলি চ্যাটার্জী দারুণ ভাবে স্বাস্থ্য সচেতন। অনেক কষ্টে নির্মাণ করা তার এই দেহ সে কিছুতেই নষ্ট হতে দিতে পারেনা। সিধ্ কে আগে থেকে এসব বিষয়ে বললেও এখন সে পুরো বদলে গেলো দেখে শাঁওলি হতবাক! তা হলে কি প্রেমে অভিনয়টাই চলে! সিধ্ একজন পেশাদার ফটোগ্রাফার সেই সূত্রেই জানাশোনা। তারপর বিভিন্ন অ্যাড এজেন্সিতে এক সঙ্গে কাজ করার সুবাদে প্রেমটা জোরদার হয়। তখন অবশ্য শাঁওলিকে চকোলেট, আইসক্রিম খাওয়া চলবে না কিম্বা চিনির বদলে সুগার ফ্রি সব কিছুই সাজেস্ট করেছিল সিধ্। সে সময় শাঁওলি এক পা কোথায় ফেলবে বা তার পশ্চার কেমন হবে সবটার দায়িত্ব যেমন ছিল সিধ্ এর, ঠিক তেমন কোন কোন পেশাদার মডেলের সাথে কিভাবে, কতটা ক্লোজ হয়ে, কত সময় নিয়ে ফটোগ্রাফী করবে সিধ্ তার টোটাল লিস্ট ছিল শাঁওলির কাছে। শাঁওলির অনুমতি ছাড়া সিধ যে এক পা এদিক ওদিক পারবে না একথাও তার জানা ছিল। তা সত্ত্বেও বিবাহ ডায়েরীতে নাম তুলেছিলো দুজনেই। বিয়ের পরদিন থেকেই শাঁওলি বুঝতে পারে সিধ্ কতটা পরিবারমুখী আর কতটা তার প্রেমিক...
ওদিকে কথায় কথায় সেলফোনে বাংলায় শাশুড়ি মায়ের সাথে শাঁওলির বাক্যালাপ (পড়ুন পরামর্শ দান) বেশ ভাবিয়ে তুলেছে সিধ্ কে । ডু অর ডোন্টসের তালিকাটি ক্রমশঃই বাড়তে থাকছে দেখে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ সিধ্ নিজের পৌরুষকে জাগ্রত করে কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাতে অবশ্য একটু রাগে অনুরাগের ছোঁয়া চলছে নব দম্পতির জীবনে।
জীবনের আঙিনায় অভিনয় টাই আসল, শাঁওলি প্রথম দিন থেকেই বুঝতে পারে এই অভিনয়টাই যদি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা যায় তবে হয়তো জীবনের চলার পথটাতে তু তু ম্যায় ম্যায় কম হবে ! কি বলেন পাকা দম্পতিরা ?