The Stamp Paper Scam, Real Story by Jayant Tinaikar, on Telgi's takedown & unveiling the scam of ₹30,000 Cr. READ NOW
The Stamp Paper Scam, Real Story by Jayant Tinaikar, on Telgi's takedown & unveiling the scam of ₹30,000 Cr. READ NOW

Kausik Chakraborty

Others

2  

Kausik Chakraborty

Others

সুবা বাংলার 'টাকাকড়ি'

সুবা বাংলার 'টাকাকড়ি'

2 mins
594


তখন দিল্লীর বাদশা ঔরঙ্গজেব। বাংলার দেওয়ান হিসাবে সবে এখানে আগমন ঘটেছে মুর্শিদকুলী খাঁ'র। জন্মসূত্রে ব্রাহ্মণ সন্তান। কিন্তু ভাগ্যের ফেরে ছেলেধরার হাত ধরে পারস্যে ক্রীতদাস হয়ে মুসলিম ঘরে ঠাঁই আর তখনই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ। ভাগ্য কবেই বা কার কথা শুনেছে! কিন্তু তার সামান্য ফেরেই মানুষ যে আবার কোথায় চলে যেতে পারে তার উপমাও সেই মুর্শিদকুলীই। জায়গীর থেকে পরে তিনিই হয়ে ওঠেন বাংলার স্বাধীন নবাব। ঢাকা থেকে রাজধানী সরিয়ে নতুন কেল্লা গড়েন মুকসুদাবাদে (এখন মুর্শিদাবাদ)।

যাই হোক, বাদশার সালতানতের দখলে থাকা দাক্ষিণাত্য ঘুরে জাইগীর মুর্শিদকুলী তখন বাংলায়। মোঘল দরবারের নিয়োগপত্র হাতে নিয়ে সেই সময় ঢাকা থেকে বাংলার নবাবি করছেন বাদশা ঔরঙ্গজেবের নাতি সুলতান আজীমুদ্দিন ওরফে নবাব আজীমউশ্বান। হুগলীতে আবার মুলত বিদেশী নাবিকদের ওপর নজরদারির জন্য মুঘল দরবার থেকে পুরোদস্তুর নিয়োজিত আছেন একজন ফৌজদার। নাকের ডগায় ইংরেজ এবং পর্তুগীজ কুঠি। সকলেই যে যার মত চেষ্টা করছে বাণিজ্যের দখল নিতে। এই রাজনৈতিক অবস্থায় বাদশার দক্ষ সিভিল অফিসার মুর্শিদকুলী শুরু করলেন নজরে পড়ার মত কাজ। স্থানীয় হিন্দু জমিদারদের থেকে অত্যাচার করে বাগাতে লাগলেন সীমাহীন কর। আর তার প্রায় সবটাই রূপোর টাকায় গরুর গাড়ি চাপিয়ে প্রতি বছর পাঠাতে থাকলেন দিল্লীতে বাদশার দরবারে। সেযুগের হিসাবে অংকটা এক কোটি পর্যন্তও পৌঁছেছিল। কিন্তু এদিকে হল মহা বিপদ। বাংলার সব রূপো টাকা চলে যেতে লাগলো বাদশার হাতে। আর শেষ বয়সের সত্তর পেরনো বাদশা তখন অসম্ভব ব্যস্ত দক্ষিণের যুদ্ধ নিয়ে। তাই যথারীতি মুর্শিদকুলী হয়ে উঠলো বাদশার প্রিয় অফিসার। যদিও সাহেনশা প্রথম থেকেই তাঁর কাজে যারপরনাই খুশি ছিলেন। আর সেই ভরসাতেই তাঁকে অনেক আশা নিয়ে বাংলায় পোস্টিং দেয়া। তবে বাংলার সাধারণ মানুষ আর জমিদারদের হাত প্রায় শূন্য। অগত্যা উপায় না থাকায় তখন বেশিরভাগ কেনাবেচাই হতে থাকলো কড়ির মাধ্যমে। রূপোর মুদ্রা ডুমুরের ফুলে পরিণত হল। আজকের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে ব্যাখ্যা করলে মুদ্রার অবমূল্যায়ন বেশ চোখে পড়ার মতন। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী কড়ির মূল্যে বাজার নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় জিনিসপত্রের দামও বেশ কমতে লাগলো পাল্লা দিয়ে। শোনা যায় নবাব ইব্রাহিম খাঁ'র সময়ে এক আনায় আটমণ চাল পাওয়া যেত এই বাংলায়। পরে নবাব সরফরাজ খাঁ'র (যিনি নবাব মুর্শিদকুলীর নাতি) আমলেও বাজারমূল্য ভীষণ কমে গেছিল। আর সেই থেকেই আমাদের মুখে মুখে টাকাকড়ি শব্দটা প্রচলিত হয়ে ওঠে।


Rate this content
Log in