স্পেশ শাটল অ্যাণ্ড কেভম্যান
স্পেশ শাটল অ্যাণ্ড কেভম্যান
পাহাড়ের কোল ঘেঁসে বয়ে চলেছে সরু একটা নদী। চারপাশে কত গাছপালা। সিঞ্চনদের বাড়িতে একটা অনেক পুরনো রূপকথার গল্পের বই আছে, অনেক ছবি আছে বইটাতে। বাংলা পড়তে না পারলেও ছবিগুলো ভীষণ ভালো লাগে ওর। ঐ বইটাতে ঠিক এমনটাই তো দেখেছে। স্পেসশীপ থেকেই জায়গাটা ভীষণ ভালো লাগে সিঞ্চনের। আজই প্রথম একা স্পেসশীপ ট্যুরের প্র্যাকটিক্যাল হচ্ছে ওদের। একটু উল্টোপাল্টা হলেই তার ফল মারাত্মক হয়ে যেতে পারে। খুব মন দিয়ে একবার সব বোতামগুলো দেখে সিঞ্চন। শেষ সারির ডানদিকে থেকে তৃতীয় নীল বোতামটা টিপতেই নামতে শুরু করে স্পেসশীপটা। বাম হাতের মনিটরের ডিজিটাল ক্লকে দেখে এখনও বাহান্ন মিনিট চুয়াল্লিশ সেকেণ্ড বাকি আছে। পুরো ষাট মিনিট সময় বেঁধে দেওয়া আছে, তার মধ্যে ফিরে যেতে হবে। এদের গ্রহে এখন রাত্রি! গ্রহটা ঘুরে দেখার ইচ্ছা আছে সিঞ্চনের।
স্পেসশীপ থেকে নেমে সামান্য একটু এগোতেই মুখে অদ্ভুত আওয়াজ করতে করতে তিনজন মানুষ এগ
িয়ে আসে। একি তাদের কারও হাতে লাঠি, কারও হাতে মশাল। তবে কি সিঞ্চনকে তারা তাদের শত্রু ভেবেছে! মানুষের মতোই দেখতে হলেও, এদের পোশাকগুলো সব কেমন যেন! কোথায় যেন দেখেছে, কিন্তু মনে করতে পারছে না। মনে পড়ে, এমন পোশাক তো বহু বহু বছর আগে গুহামানবরা পড়তো। সিঞ্চন বুঝতে পারে, পৃথিবী হাজার হাজার বছর আগে যেমন ছিল, এই গ্রহটা এখন সেইরকম আছে। তথ্যপ্রযুক্তি সব কিছুই এদের অজানা। কিন্তু ওরা তো শত্রু ভেবে আক্রমণ করতে আসছে সিঞ্চনকে। কোনভাবেই ওদেরকে নিজের প্রকৃত পরিচয় বোঝাতে পারছে না। কোন তথ্য-প্রযুক্তিও কাজ করছে না এখানে। ভীষণ ভয় করছে সিঞ্চনের। কি করবে এখন! -কি রে, দিনের বেলাও ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখছিস নাকি! অনেক ঘুমিয়েছিস, এবার উঠে পড়। সামার ভ্যাকেশনের হোমটাস্কগুলো এখনও অনেক বাকি আছে। মায়ের ডাকে জেগে ওঠে সিঞ্চন। পাশে খোলা পড়ে আছে "স্পেস শাটল অ্যাণ্ড কেভম্যান" বইটা। পড়তে পড়তেই ঘুমিয়ে গিয়েছিল সিঞ্চন।