মার্গদর্শণ
মার্গদর্শণ
নাকের ডগা দিয়ে শ্রীরামপুর লোকালটা বেরিয়ে গেল । জানিনা পরের ট্রেন টা পাবো কিনা । হন্তদন্ত হয়ে টিকিট কাউন্টারে পৌঁছে দেখি লম্বা লাইন । পাশে টিকিট মেশিনের সামনেও দু-চারজনের লাইন ,ভাবলাম ওদের বোতাম টেপা দেখে শিখে নেব মেশিন থেকে কিভাবে টিকিট কাটতে হয় কিন্তু পাশে একটা বাচ্চা মেয়ে সমানে বলে যাচ্ছে," দিদি পয়সা দাও না !সকাল থেকে কিচ্ছু খাইনি ,পয়সা দাও না....."। দু-চারজন ফটাফট বোতাম টিপে টিকিট কেটে বেরিয়ে গেল। এবার এলো আমার পালা, আমি কিছুতেই সঠিক বোতাম টিপতে পারছিলাম না। ইতিমধ্যে আমার পিছনে আরো দু চার জন লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েছে, স্বাভাবিক ভাবেই তারা চেলাচ্ছেন, "ম্যাডাম তাড়াতাড়ি করুন।" তখন সেই বাচ্চা মেয়েটি, যে আমার কাছে পয়সা চাইছিল, সে বলতে শুরু করল ,"দিদি এই বোতামটা টেপো , দিদি ওই বোতামটা টেপো।" তার অতি নোংরা আঙ্গুলের ইশারায় শেষমেষ আমার গন্তব্য স্থানের টিকিটটা মেশিন থেকে বেরিয়ে এলো ।খুব ইচ্ছা হচ্ছিল তার মাথায় একটু হাত দিতে কিন্তু উস্কোখুস্কো ধুলো ভরা এক মাথা ঝাঁকড়া চুলে হাত দিতে পারলাম না। মনুষ্যত্বের গরজে তার ছোট্ট নোংরা হাতে একটা ১0 টাকার কয়েন দিয়ে দৌড়ালাম ট্রেন ধরতে।
