পাঁচ নয় ছয়
পাঁচ নয় ছয়
মরতে মরতে পাঁচজনের নাম বলেছিল মেয়েটা
ফাঁসির হুকুম হয়েছিল প্রত্যেকেরই
উনিশ বছরের মেয়েটা সেদিন
একজনের নাম বলে নি
কারণ সে জানে না
দেখে নি তাকে
বেশ কয়েকদিন সকাল সন্ধ্যে
ঘুরঘুর করেছিলাম
সরু চোখে লক্ষ্য রেখেছিলাম বাড়িটার উপর
সুযোগ বুঝে
ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাকের আড়ালে
এক নির্জন চাঁদনি রাতে ছাদে উঠেছিলাম
সিঁড়ির দরজা হাট করে খোলা !
ভেতরে আলো-ছায়ায় নামতে গিয়ে থমকে গেলাম,
নিচে ছায়া মূর্তির যেন নড়াচড়া !
আমার আগেই কারা তবে এসেছে !
সন্দেহ হচ্ছিলই ; ক্ষণিক আরও থমকে থাকলাম ।
ধস্তাধস্তি হচ্ছে
একটানা গোঙানির শব্দ পাচ্ছি
নিঃশব্দে পাঁচ ছায়া মূর্তির উল্লাসে বুঝলাম
এরা আমার মতো নয়
চুরি করতে আসেনি এরা, আরও বড় অপরাধ
আরও
ঘৃণ্য আরও জঘন্য….
'রেপ' করছে ওরা মেয়েটাকে !
খোলা আকাশের নিচে, মাঠে
গাছ তলায়
ফুটপাতের গায়ে লাগানো দোকানের সিঁড়িতে….
না পারি দিনে, না রাতে
আমার বিবেক আমাকে ঘুমাতে দেয় না আজও
হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হলে ঘুম পায়
কিন্তু ঘুমাতে পারি না
দু চোখের পাতা এক হলেই আমাকে ডেকে দেয়
ফিসফিসিয়ে বলে,
'বলে দে, বলে দে। ওরা পাঁচ নয় ছয় ছিল।'
চোখের সামনে দেওয়ালে টাঙানো ভাঙা কাচের আয়নায়
আমি নিজের চোখে দেখেছি তাকে
স্পষ্ট দেখেছি সেদিন
অসহায় মেয়েটার বিস্ফারিত চোখের আড়ালে
আরও একজন ছিল
মেয়েটা জানে না, দেখে নি
তাই তো এ খোলা আদালতে থেকে থেকে
চিৎকার করে বলি,
জজ সাহেব !
ওরা পাঁচ নয় ছয় ছিল….
পাঁচ নয় ছয়…. ।।