শৈশব উদ্ধার
শৈশব উদ্ধার


বাবা মা হারা বছর বারোর শ্রুতি ফুটপাতে বেলুন বেচে। ছোটো থেকেই মা বাপ হারা। কখনো তাই মায়ের আঁচল দেখেনি, পায়নি আঁচলছায়ার গন্ধ। রাতের শেষ বাসের যাত্রীদের থেকে বিদায় নিয়ে উপার্জিত টাকায় কোনমতে চালিয়ে নেয় ছোটো একটা পেট। কখনো ভালোবেসে কেউ কিছু দিলে সেদিন একটু ভালো করে খেতে পারে। রাতের শেষে চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়ে ফুটপাতেই, বৃষ্টির দিনে কারুর বাড়ির দালানে অথবা কোনো ব্রিজের নিচে কষ্ট করে রাতটুকু কাটিয়ে নেয় শ্রুতি।
সেদিন 15ই আগষ্ট, বরাবরের মতো রাত সাড়ে নটার শেষ বাস থেকে নেমে বেলুন কিনতে আসে এক মহিলা, সঙ্গে বছর ছয়েকের ছেলে অঙ্কুশ। ছেলের জন্মদিনে বেলুন কিনতে এসে মায়ের চোখে পড়ে ওই ছোটো বাচ্চাকে । যে মা আজ সারাদিন শুনেছে "জনগণমন অধিনায়ক", শুনেছে সব মহাপুরুষদের বাণী, তাদের আত্মত্যাগের কথা, দিনের শেষে এমন দৃষ্টি মায়ের মন থেকে হরণ করে শৈশব স্বাধীনতা।
আজ 14ই নভেম্বর। বিড়লা মেমোরিয়াল স্কুলের মঞ্চে পারফর্ম করছে শ্রুতি অঙ্কুশ। দর্শকের আসনে সেই মায়ের চোখ মুগ্ধ হয়ে দেখছে। এক মা উদ্ধার করেছে অজানা এক মায়ের সন্তানদের শৈশব, ফিরিয়ে দিয়েছে এক সন্তানকে মায়ের আঁচল। মেলবন্ধন ঘটেছে স্বাধীনতা দিবস ও শিশু দিবসের অপরূপ সৌন্দর্যের।