বৃষ্টি
বৃষ্টি
গ্রামের নাম ভবানিপুর গ্রামের নাম যেমন মিষ্টি তেমন গ্রামটাও মিষ্টি চারিদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ। কয়েকদিন আগে খবরে বলেছিল আগামী ১৫ তারিখে প্রবল ঝড়ো বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে, আজ সেই দিন কিন্তু সকাল থেকে তেমন কিছুই আকাশে দেখা মিলছে না। স্নান করে স্কুল যাবার জন্য তৈরি হচ্ছি আকাশে ধীরে ধীরে রোদের আলো ফিকে হতে শুরু করেছে । মা ঘরে এসে বললে তোকে আর এই আবহাওয়া মধ্যে স্কুল যেতে হবে না বাপু! তার থেকে বরং ঘরে থাকা ঢের ভাল। এখনো টিপটিপ করে বৃষ্টি পড়ছে জানালা খুলে বৃষ্টির আওয়াজ এবং ভেজা মাটির সুভাষ যেন এই দিনটাকে স্বর্গীয় কোরে তুলেছে এই বৃষ্টি দেখতে দেখতে ছেলেবেলাকার সেই ছোট্ট কবিতা টি মনে আসছে।
"আয় বৃষ্টি ঝেঁপে
ধান দেবো মেপে,
যা বৃষ্টি ধরে যা
লেবুর পাতায় করমচা।"
ইতিমধ্যে টিভিতে শুনলাম কিছুক্ষণের মধ্যেই ঝড় আসতে চলেছে, তখন প্রায় দুপুর ৩ টে আকাশ ঘুটঘুটে কালো করে এসেছেন যেন মনে হচ্ছে সূর্যকে কেউ জানো গ্রাস করে নিয়েছে ধীরে ধীরে গা-ছমছমে এক মায়াবি শান্তি বিরাজ করছে চারিদিকে । কিছুক্ষণ পর প্রকৃতি তার ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করলো চারিদিকে হাওয়ার দাপটে যেন মনে হচ্ছে সামনে সুপুরি গাছগুলো এখনই ভেঙ্গে পড়বে। গ্রামের কিছু কিছু মানুষ তাদের গরু-বাছুর কে মাঠ থেকে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে কিউবা উনুনে জ্বালানি শুকনো জায়গায় রাখার ব্যবস্থা করছে। আমাদের গ্রামে বিদ্যুৎ সেই রকম উন্নত না তাই অনেকক্ষণ আগেই বিদ্যুৎ নেই । দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেল মা হ্যারিকেনের আলোয় সন্ধ্যা দিয়ে, আমার জন্য গরম গরম চা আর পাপড় ভাজা বানিয়ে আনল আমরা বেশ মজা করে দুজনে খেলাম। আজ বাবা বাড়িতে নেই শহরে গিয়েছে ব্যবসার কাজে, আজ বৃষ্টি দেখতে দেখতে সময় কেটে গেল হঠাৎ করে নাকে এলো ইলিশ মাছের গন্ধ দৌড়ে রান্নাঘরে গিয়ে দেখি মা খিচুড়ি আর ইলিশ মাছ রান্না করছে। রান্নাবান্না শেষ করে দুই জনে খেয়ে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়লাম বৃষ্টির মৃদু আওয়াজে কখন নিদ্রা চলে এলো বুঝতেই পারলাম না।
