Arghya Das

Others

4  

Arghya Das

Others

অঞ্চলিক ভ্রমনের কাহিনী

অঞ্চলিক ভ্রমনের কাহিনী

4 mins
247


  


                                           


         

                                     (দিঘা ভ্রমনের অভিজ্ঞতা)

         

           অর্ঘ্য দাস


আঞ্চলিক ভ্রমনের কাহিনী বলতে প্রথমেই বলতে হয় আমাদের দীঘা ভ্রমণের অভিজ্ঞতাকে । আমরা ঠিক করলাম আমরা দীঘা ভ্রমণে যাব । তার জন্য আমরা দিন ঠিক করলাম । আমরা তিন ভাই, ভাইয়ের কয়েকজন বন্ধু বান্ধব, ছোট ভাইয়ের একজন দূর সম্পর্কের দাদা যে কিনা টুর এন্ড ট্রাভেল এর ব্যবসা করে । আর আমার মেজ ভাইয়ের এক বন্ধু সাগর বলে , টুর এন্ড ট্রাভেলের ব্যবসা করে যে দাদা ,সে বলল এবার আমরা দীঘায় ঘুরে আসি । আমরা তিন ভাই দূর সম্পর্কের দাদা আর ছোট ভাইয়ের আর কয়েকজন বন্ধু-বান্ধব মিলে আমরা দলে ৭ থেকে ৮ জন ছিলাম । আর আমার মেজ ভাইয়ের একজন সহপাঠী বন্ধু ছিল যার নাম ছিল সাগর । সাগরের বেশ কিছুদিন আগে অটো উল্টে গিয়ে ডান পায়ে চোট লেগেছিল , সেও মনস্থির করল সেই পা নিয়ে আমাদের সাথে যাবে দীঘা ভ্রমণে । দীঘা যাওয়ার দিন ঠিক হল । আমরা কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই আমাদের সকলের জামাকাপড় ব্রাশ , টুথপেস্ট, চশমা, চিরুনি ,ঘড়ি এবং কয়েকদিন থাকার মতো বেশ কিছু জামাকাপড় সঙ্গে নিলাম আর আমরা দুই তিনটে টুরিস্ট ব্যাগ আর প্রত্যেকে একটা করে কাঁধে ঝোলানো মত স্কুল ব্যাগ সঙ্গে নিলাম । বলতে বলতে সময়ের রথের চাকা গড়িয়ে এলো দীঘা ভ্রমণের দিন । আমরা বেশ আনন্দের সাথে অপেক্ষা করেছিলাম দীঘা ভ্রমণের দিনটার । ক্রমেই দিন এলো আমরা সবাই ভোর পাঁচটার সময় যাত্রা শুরু করলাম হৃদয়পুর স্টেশনে যাওয়ার জন্য , সেখান থেকে ( হৃদয়পুর স্টেশন থেকে ) দুটো টোটো ভাড়াও করা হলো । ইতিমধ্যে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় অতিবাহিত হওয়ার পর আমরা সবাই ডাকবাংলোয় এসে পৌছালাম । তারপরে ডাকবাংলো থেকে এক বাসে আমরা চাপাডালির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম । আমার মেজো ভাই বলতে অরিন্দম বেশ কিছুদিন আগে অনলাইনে নেট থেকে কম্পিউটারে দীঘা যাওয়ার বাসের টিকিট বুক করে রেখেছিল । ( ৮ থেকে ৯ ) মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পর আমরা সবাই বাসে চেপে চাপাডালি এসে পৌছালাম । তারপর আমরা দীঘা যাওয়ার বাসে চাপলাম । বাসে প্রায় তিন ঘন্টার কাছাকাছি পথ । তারপর এক বাসে দীঘা যাওয়ার উদ্দেশ্যে আমরা সবাই রওনা হলাম । আমরা যে লাক্সারি এ.সি বাসে উঠেছিলাম তাতে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জন যাত্রী ছিল । বাস রওনা শুরু করলো প্রায় ৬ টা ১০ নাগাদ দীঘার উদ্দেশ্যে । মাঝপথে ১ থেকে ১.৩০ ঘন্টা সময় অতিবাহিত হওয়ার পর বাস থামল একটা পেট্রোল পাম্প বাসে পেট্রল ভরার জন্য এবং যাত্রীসাধারণ সকলকে টয়লেট যাওয়ার জন্য এবং নিজ নিজ টিফিন সেরে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো বাসচালকের তরফ থেকে । সব যাত্রী নেমে গেল বাস থেকে নিজ নিজ টিফিন সেরে নেওয়ার জন্য এবং বাথরুম সেরে নেওয়ার জন্য । আমরা ( ৭-৮ ) জন বাস থেকে নেমে চা-বিস্কুট খেলাম । তারপর আমরা নিজ নিজ টয়লেট সারলাম । সব যাত্রীরা নিজ নিজ টয়লেট ও টিফিন সারল । বাস কন্ট্রাকটর সবাইকে বাসে আবার চেপে বসতে অনুরোধ জানালো । বাস আবার আগের মতো রওনা শুরু করলো । সময়ের রথের চাকা গড়িয়ে প্রায় ঘন্টা তিনেক বাসে অতিবাহিত হওয়ার পর প্রায় ৯ টা ১০ নাগাদ দিঘার বাস ডিপোতে এসে থামে ।

আমরা সবাই বাস থেকে নামলাম এবং সকল যাত্রীরা তাদের নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে গেল । তাড়াতাড়ি করে বাস থেকে নামার পর শুরু হল হোটেল খোজার পালা । তারপরে আমরা দীঘায় পূর্ব -পশ্চিম মেদিনীপুরে লাক্সারি বিলাসবহুল এ.সি হোটেল খুজতে লাগলাম । তারপর পূর্ব মেদিনীপুরে যে হোটেলটায় উঠেছিলাম তার নাম ছিল হোটেল টিউলিপ । এই হোটেলটি তে এ. সি ও নন এ. সি দুই ধরনের ব্যবস্থা ছিল । হোটেলটি প্রায় ছয় তলার কাছাকাছি । তারপরে আমাদের যে কোন এক থেকে দুইজনের আইডি প্রুফ দেখানোর জন্য অনুরোধ করলো হোটেল কর্তৃপক্ষ ( বিশেষত যারা হোটেলে থাকার জন্য টাকা পরিশোধ করবে তাদের আইডি প্রুফ এর প্রমাণ ) । আমার মেজ ভাই বলতে অরিন্দম ভূষণ এবং স্টিল প্রাইভেট লিমিটেডের একটি বেসরকারি কোম্পানিতে অফিসার পোস্টে কাজ করতো এবং ছোট ভাইয়ের দূর সম্পর্কের দাদা যার নাম ছিল সমুজ্জ্বল , মূলত তারা দুজনে আইডি প্রুফ দেখালো এবং হোটেলে থাকার জন্য টাকা পরিশোধ করলো । আমরা সেখানে দুটো গ্রুপে ভাগ হলাম । এ. সি ও নন এ. সি দেখে দুটো রুম ভাড়া নেওয়া হলো । প্রথম গ্রুপে অর্থাৎ এ.সি রুমে ছিলাম ছোট ভাই (জয়দীপ) , আমি (অর্ঘ্য ) এবং ছোট ভাইয়ের (জয়দীপের ) বন্ধুবান্ধব এবং অপর গ্রুপে ছিল মেজ ভাই (অরিন্দম ) এবং মেজ ভাইয়ের বন্ধু সাগর , তারা নন-এসি রুমটা নিয়েছিল । সময় ছুটে চলল তীরগতিতে , (৫-৬) দিন আনন্দ হাসি, মজা- ঠাট্টা এবং নিত্যনতুন খাওয়া-দাওয়ার স্বাদ আস্বাদনের মধ্য দিয়ে চলতে লাগলো এবং সমুদ্রসৈকতে আমাদের স্নান সেরে আমরা দুপুরবেলায় খেতে হোটেলে চলে আসতাম l মাঝেমধ্যে একদিন দুপুর বেলায় মন্দারমণিতে স্নান করবো বলে অটোতে চেপে বসলাম মন্দারমনি যাওয়ার উদ্দেশ্যে । দীঘা থেকে মন্দারমনি প্রায় আধ ঘন্টার কাছাকাছি অটোতে যাত্রার পথ l সেখানে আমরা স্নান দান সারলাম । তারপর আবার অটোতে দীঘায় পূর্ব মেদিনীপুরে ফিরে এলাম । তারপর আর দুইদিন মত অন্য হোটেলে ছিলাম l

সব মিলিয়ে আমাদের প্রায় কুড়ি হাজার টাকা খরচা হয়েছিল । ক্রমশ সময় ফুরিয়ে এলো তারপর আমরা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম । তারপর আমরা বাস ডিপোতে গেলাম যেখান থেকে দীঘা হতে বারাসাত এর বাস ছাড়ে । তারপর আমরা তিন ঘন্টা পথ অতিক্রম করার পর বাসে বারাসাত চাপাডালি মোড়ে ফিরে এলাম । সেখান থেকে আবার বাস ধরে ডাকবাংলা মোড় । এবং ডাকবাংলা থেকে আমরা দুটো টোটোও চেপে হৃদয়পুর স্টেশন ফিরলাম । তারপর ( ১০-১৫) মিনিট হাঁটা পথে বাড়িতে ফিরে এলাম । 


Rate this content
Log in